অগ্নিসন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন ও নানাভাবে যারা মানুষের ক্ষতি করে, তাদের আল্লাহ সহ্য করবেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
Advertisement
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) গণভবনে জিয়াউর রহমানের সময়ে নিহত সামরিক সদস্যদের পরিবার, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনে আহত এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময়কালে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমার একটাই চেষ্টা এদেশের মানুষ যেন একটু ভালো থাকে। আজকে যখন মানুষ ভালো অবস্থানের দিকে যাচ্ছে, অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে, সে সময় আবার অগ্নিসন্ত্রাস, মার্কেটে আগুন, নানাভাবে মানুষকে ক্ষতি করা হচ্ছে। এটা যারা করে এদের প্রতি জাতির ঘৃণা। আল্লাহ সহ্য করবেন না।
আরও পড়ুন: শুধু দোকান নয়, পুড়েছে হাজারো পরিবারের স্বপ্ন
Advertisement
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সময় সামরিক অফিসার হত্যা এবং বিগত বছরে অগ্নিসন্ত্রাসে জড়িতদের বিচার করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, যারা অন্যায় করেছে তারা শাস্তি পাবে। শাস্তি পেয়েছে, পাচ্ছে, পাবে। আরও যারা বাকি আছে সেটা (বিচার) আমরা অবশ্যই করবো।
জিয়ার আমলে নিহতদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমিও আপনাদের মতো একজন। আমিও একদিন শুনলাম আমার কেউ নেই। আমরা দুই বোন বিদেশে ছিলাম, এতিম হয়ে গেলাম। কি বর্বরভাবে আমার বাবা-মা, ভাই সবাইকে হারালাম।
আরও পড়ুন: ‘ভাবছিলাম ঈদে ভালো ব্যবসা হবে, আগুনেই সব শেষ’
Advertisement
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৭ সালে বিমানবাহিনী, আর্মি কর্মকর্তাদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে। আমি আমার গ্রামেও একজনকে খুঁজে পেয়েছিলাম, তার ছেলে-মেয়েদের আমি দেখতাম। এরপর আমি অনেক চেষ্টা করেছিলাম এসব নাম জোগাড় করতে। শুরুতে পাওয়া কষ্টকর ছিল। পরে আস্তে আস্তে নামগুলো পাই।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের পর কি বর্বরতা ছিল। প্রথমে বঙ্গবন্ধু, আমার ভাই, আত্মীয়-স্বজনকে মারলো। এরপর জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করলো। এরপর বার বার সেনাবাহিনীতে- বীর মুক্তিযোদ্ধা অফিসার থেকে শুরু করে তাদের হত্যা করলো। শুধু তাই না, আওয়ামী লীগের অগণিত নেতাকর্মীকে হত্যা করলো। যখন আমি অপজিশনে ছিলাম, এমন দিন নাই যে লাশ টানতে হয়নি। আমাদের এত নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে, সাধারণ মানুষ হত্যা করেছে। তারপরও কি করে এদের পাশে লোক থাকে?
আরও পড়ুন: নিজের দোকানে এসে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মোহাম্মদ আলী
বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জীবন্ত মানুষকে কীভাবে পোড়ানো যায়। সাধারণ মানুষের ওপর অত্যাচার। এখন দেখেন কয়েকদিন ধরে মার্কেটে আগুন। হঠাৎ করে কয়েকদিন ধরে আগুন, তারপর আমার মনে সন্দেহ হলো এটা নাশকতা কিনা। ঈদে মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্য করবে সেই পথটাই বন্ধ করে দিতে চায়।
শেখ হাসিনা বলেন, এরা যে অপরাধ করেছে তার বিচার হবে। দিনের পর দিন ফাঁসির ঘটনা, আমরা বিদেশে থেকেও এই খবরগুলো শুনতাম। কোনো অপরাধ নেই ধরে নিয়ে গিয়ে ফাঁসি দেওয়া। জিয়াউর রহমান তো হাসতে হাসতে মানুষের ফাঁসির রায় লিখতেন। কোনো বিচার ছিল না।
খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরা এ দেশের মঙ্গল চায় না, ভালো চায় না।
পরে প্রধানমন্ত্রী নিহত স্বজন এবং অগ্নিদগ্ধদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন এবং তাদের ঈদ উপহার দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
এসইউজে/জেডএইচ/জিকেএস