জাতীয়

বঙ্গবাজারের অস্থায়ী দোকানে ক্রেতা সংকট

রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত হয়ে যায় প্রায় পাঁচটি মার্কেটের দোকান-পাট। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য চৌকি পেতে পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করে দেয় দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কিন্তু ঈদের আগে ক্রেতা সংকটে এসব দোকান-পাট।

Advertisement

অস্থায়ীভাবে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের এ ব্যবস্থা করা হয়। সিটি করপোরেশন পুড়ে যাওয়া বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ১ দশমিক ৭৯ একর জায়গায় বালু ও ইট বসানো হয়। শামিয়ানা টাঙানোর ব্যবস্থা করা হয়নি। ব্যবসায়ীরা নিজেরাই নিজেদের মতো ব্যবস্থা করে নিয়েছেন।

প্রচণ্ড রোদ আর ক্রেতা সংকটে অস্থায়ীভাবে বসানো এসব দোকানের প্রায় অর্ধেক চৌকি ফাঁকা পড়ে আছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, বেচাকেনা একদমই নেই, এ কারণে অনেকেই আসছেন না।

আরও পড়ুন> ডিএসসিসির তদন্ত প্রতিবেদন/বঙ্গবাজারের আগুনে ক্ষতি ৩০৩ কোটি টাকা

Advertisement

সরেজমিনে দেখা গেছে, মার্কেটের অনেক চৌকি ফাঁকা রয়েছে যেখানে ব্যবসায়ীদের বসার কথা ছিল। কেউ কেউ তীব্র রোদের হাত থেকে বাঁচতে বড় ছাতা টাঙিয়ে মাল নিয়ে বসে আছেন। কেউ কেউ ফ্লাইওভার বা এনেক্স টাওয়ারের ছায়াযুক্ত স্থানে বসেছেন অস্থায়ীভাবে।

এসব ব্যবসায়ী জানান, বেচা-বিক্রি নাই। দিন শেষে এক হাজার ১২০০ টাকার বেচা-বিক্রি হয় কারো কারো।

কথা হয় পুড়ে যাওয়া গুলিস্তান মার্কেটের রুমি-সুমি গার্মেন্টসের মালিক মেহেদি হাসানের সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘অস্থায়ীভাবে বসানো হলেও বেচা-বিক্রি নেই। অনেকেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থেকে শূন্যহাতে ঘরে ফিরছেন। এ কারণে অনেকেই অস্থায়ী এসব দোকানে বসছেন না। আবার রোদের তীব্রতা থাকার কারণেও ক্রেতা আসছে না। ঈদের পর স্থায়ীভাবে বসানো হবে এমন আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তখন হয়তো আবারও বিক্রি জমে উঠবে।’

কথা হয় ফরিদ হোসেন ভূইয়ার সঙ্গে। তিনি আগুনে পুড়ে যাওয়া ভূইয়া গার্মেন্টসের মালিক। তিনি বলেন, ‘গত পরশু দিনের বেলা বসে থেকেও ক্রেতার দেখা পায়নি। সোমবার (১৭ এপ্রিল) দিনের বেলায় গরমে বসতে পারিনি। সন্ধ্যা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বসেছিলাম চৌকিতে। মাত্র হাজার টাকার মাল বিক্রি হয়েছে। ক্রেতা নাই, বিক্রি নাই ঈদে চলতেই কষ্ট হবে।’

Advertisement

আরও পড়ুন> মাঠ দখল করে গড়ে ওঠে বঙ্গবাজার, মার্কেট চান না এলাকাবাসী

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন মতে, অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার কমপ্লেক্সের চারটি ইউনিটে মিলে মোট দোকান ছিল দুই হাজার ৯৬১টি, যেগুলো পুড়ে ছাই হয়েছে। এছাড়া মহানগর শপিং কমপ্লেক্স মার্কেটের ৭৯১টি, বঙ্গ ইসলামিয়া মার্কেটের ৫৯টি ও বঙ্গ হোমিও কমপ্লেক্স মার্কেটের ৩৪টি দোকান আগুনে পুড়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৮৪৫টি দোকানের। বঙ্গবাজারে মোট ৩০৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে মালপত্র পুড়ে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ২৮৮ কোটি টাকার বেশি। এবং মার্কেটগুলোর কাঠামোগত ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫ কোটি (১৪.৭০ কোটি) টাকা।

ইএআর/এসএনআর/জেআইএম