মহিমান্বিত রাত ‘লাইলাতুল কদর’। রাতটি সবার কাছে সম্মান ও মর্যাদার। মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে এ রাত উম্মতে মুহাম্মদির জন্য শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। যা অন্য কোনো নবির উম্মতদের দেওয়া হয়নি। হাজার মাসের চেয়েও শ্রেষ্ঠ এ রাত। এ রাতে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে বান্দা নিজেকে ক্ষমা প্রার্থনা করার সুযোগ পেতে পারে। গুনাহ থেকে মাফ পেয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টিও অর্জন করতে সক্ষম। তবে এ রাতের রয়েছে কিছু করণীয় ও বর্জনীয় কাজ। সেগুলো কী?
Advertisement
কদরের রাতে ফজিলত
লাইলাতুল কদরে ইবাদত-বন্দেগি করার ফজিলত ও এ রাতের গুরুত্বারোপ করে এর তাৎপর্য বর্ণনা করা হয়েছে। হাদিসে পাকে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘যে ব্যক্তি কদরের রাতে ঈমান ও ইখলাসের সঙ্গে কিয়াম (নফল নামাজ আদায়) করবে, তার অতীতের যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’ (বুখারি ১৯০১)
Advertisement
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘রমজান মাস এলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেতেন, ‘নিশ্চয়ই রমজান মাস তোমাদের কাছে উপস্থিত হয়েছে। এতে এমন বরকতপূর্ণ রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে একে সম্মান করবে, সে যেন পুরো কল্যাণকেই সম্মান করল। আর যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে যেন পুরো কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হলো।’ (ইবনে মাজাহ ১৬৪৪)
মহিমান্বিত এ রাতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যা পালনে বান্দার জন্য অশেষ সওয়াব ও কল্যাণ রয়েছে। যেমন-
১. সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে পবিত্র হয়ে ইবাদতের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা।
২. মাগরিবের নামাজের পর নফল নামাজ আদায় করা।
Advertisement
৩. কোরআনুল কারিম তেলাওয়াত করা।
৪. বেশি বেশি জিকির-আজকার করা।
৫. বেশি বেশি দরুদ শরিফ পাঠ করা।
৬. কৃত গুনাহের জন্য কান্নাকাটি করা এবং গুনাহ থেকে মাফ চাওয়া।
৭. কোনো মানুষকে কষ্ট দিয়ে থাকলে তার কাছে ক্ষমা চাওয়া।
৮. দুস্থদের বেশি বেশি দান-সদকা করা।
৯. মা-বাবা এবং মুরব্বিদের কবর জেয়ারত করা।
১০. আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করা এবং ভালো কাজ করা।
১১. মানুষের প্রতি সুন্দর ও উত্তম আচরণ করা।
এ রাতে কিছু বর্জনীয় আমল রয়েছে; যা বর্জনে বান্দার জন্য অশেষ কল্যাণ ও পুরস্কারের ব্যবস্থা রয়েছে। যেমন-
১. এ রাতে হেলা ও অবহেলায় বরা খেবে বিরত থাকা।
২. এ রাত ঘুমানো থেকে বিরত থাকা।
৩. আলসেমি ত্যাগ করা।
৪. মানুষের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ না রাখা।
৫. আতশবাজি ফোটানো থেকে বিরত থাকা।
৬. গাল-গল্প থেকে বিরত থাকা।
৭. দলবেঁধে আড্ডাবাজি না করা।
৮. সবাই মিলে চিৎকার-চেঁচামেচি এবং হৈ-হুল্লোড় না করা।
৯. যাবতীয় গুনাহের কাজ থেকে বিরত থাকা।
এমএমএস/জেআইএম