গতকাল (সোমবার) থেকে শুরু হওয়া ট্রেনের ঈদযাত্রা চলবে আগামী শুক্রবার (২১ এপ্রিল) পর্যন্ত। ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সব আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট অগ্রিম বিক্রি করা হয়েছে। এছাড়া যাত্রার দিন ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বা দাঁড়ানো টিকিট পাচ্ছে ঘরমুখো মানুষ।
Advertisement
ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) সকালে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, নির্ধারিত ট্রেন ধরতে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ একাই যাচ্ছেন গ্রামে।
এবারই প্রথম ঈদযাত্রা ও ঈদের ফিরতি যাত্রার শতভাগ টিকিট অনলাইনে কাটতে হয়েছে যাত্রীদের। কাউন্টারে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তি এড়িয়ে ঘরে বসেই টিকিট কেটেছেন যাত্রীরা। তাই যাত্রার দিন যেন কোনো ধরনের ঝামেলা পোহাতে না হয় সেজন্য ট্রেন ছাড়ার নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশনে আসছে ঘরমুখো মানুষ। টিকিট ছাড়া কাউকে স্টেশনে প্রবেশ করতে না দেওয়ায় স্টেশনের বাইরে রয়েছে ভিড়। তবে প্ল্যাটফরমে বা ট্রেনে তেমন ভিড় চোখে পড়েনি।
রাজধানীর বাসাবো থেকে আসা মোস্তফা কামাল জাগো নিউজকে বলেন, অনলাইনে টিকিট কেটেছি। কোনো ঝামেলা পথেও হয়নি। অগ্নিবীণা এক্সপ্রেস বেলা ১১টায় কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাবে। আগেই চলে আসলাম যেন কোনো ঝামেলায় পড়তে না হয়।
Advertisement
আরও পড়ুন: প্রথম ঘণ্টায় শেষ ট্রেনের ২৭ এপ্রিলের ফিরতি টিকিট
মো. মেহেদী হাসান নামের আরেক যাত্রী বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটতে একটু ঝামেলা হয়েছিল। তবে টিকিট পেয়ে ভালোই লাগছে। এখানে এসেও কোনো ধরনের ঝামেলা হয়নি।
যাত্রীদের ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে এবার বাড়তি প্রস্তুতি ছিল রেলপথ মন্ত্রণালয়ের। গতকাল ঈদযাত্রার প্রথম দিন থেকেই টিকিট প্রদর্শন করে স্টেশনে প্রবেশ করতে হচ্ছে যাত্রীদের। টিকিট ছাড়া স্টেশনেই প্রবেশ করার সুযোগ নেই কারো। টিকিটবিহীন যাত্রীর প্রবেশ বন্ধে ঢাকামুখী ট্রেনগুলো এবার ঈদযাত্রায় বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি করছে না।
রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে আসা রাহাত মাহমুদ জাগো নিউজকে বলেন, স্টেশনে টিকিট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। টিকেট দেখালেই ভেতরে প্রবেশ করতে দিয়েছে, এটা খুব ভালো লাগছে। আগে টিকিট ছাড়া অনেকে যেতো। এবার সেটা হবে না। তাই ঝামেলাও নেই তেমন।
Advertisement
এদিকে যেসব যাত্রী অনলাইনে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটতে পারেননি তারা স্টেশনে এসে স্ট্যান্ডিং টিকিট পাচ্ছেন। বিমানবন্দর থেকে আসা মো. আনোয়ার জাগো নিউজকে বলেন, আমি অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটতে পারিনি। স্টেশনে এসে তাই স্ট্যান্ডিং টিকিট কাটলাম। চট্টগ্রামে যাচ্ছি ঈদ করতে।
এবার ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত ৭ এপ্রিল। ওইদিন বিক্রি হয় ১৭ এপ্রিলের টিকিট। এরপর ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রি হয় ২১ এপ্রিলের টিকিট।
একইভাবে ঈদের ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে শনিবার ১৫ এপ্রিল থেকে। ফিরতি যাত্রার টিকিট বিক্রি শুরুর প্রথম দিন অর্থাৎ ১৫ এপ্রিল বিক্রি হয়েছে ২৫ এপ্রিলের টিকিট। ১৬ এপ্রিল বিক্রি হয়েছে ২৬ এপ্রিলের, ১৭ এপ্রিল হচ্ছে ২৭ এপ্রিলের, ১৮ এপ্রিল ২৮ এপ্রিলের, ১৯ এপ্রিল ২৯ এপ্রিলের এবং ২০ এপ্রিল বিক্রি করা হবে ৩০ এপ্রিলের টিকিট।
প্রতিদিন আন্তঃনগর ট্রেনে সিট ও দাঁড়ানো মিলে প্রায় ৪৫ হাজার যাত্রী ঢাকা ছাড়ছেন।
এদিকে ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত চলাচল বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে।
আরএসএম/এমএইচআর/জেআইএম