সিলেটে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে ঈদবাজার। রোজার শুরু থেকেই ক্রেতা আকর্ষণে নানা সাজসজ্জা আর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন নগরীর ব্যবসায়ীরা। এবার ঈদুল ফিতর ঘিরে রোজার শেষের দিকে এসে ভালো ব্যবসা হওয়ায় খুশি বিক্রেতারা। আর ক্রেতারাও নতুন জামা-কাপড় কিনতে দিনে তীব্র গরম থাকায় রাতে বিপণিবিতানগুলোতে ভিড় করছেন। আর এ কারণে সিলেটে দিনের চেয়ে রাতে ঈদের কেনাকাটা হচ্ছে বেশি।
Advertisement
সরেজমিন দেখা যায়, শপিংমলের ভেতর পোশাকের সমাহার আর বাইরে রঙিন সাজসজ্জা। ক্রেতাদের নজর কাড়তেই এমন আয়োজন। ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আনা নতুন কালেকশন নিয়ে পসরা সাজিয়েছে ফ্যাশন হাউজ ও মেগামলগুলো। এখন দিনরাত একাকার ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে। রাত আটটা থেকে সেহরির আগ পর্যন্ত চলে জমজমাট কেনাকাটা। তবে ক্রেতারা জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবছর কাপড়ের দাম সামান্য বেশি।
সিলেট বিভাগের কোটি মানুষের কেনাকাটার জন্য নগরে পাঁচ শতাধিক বিপণিবিতান, শপিংমল, মার্কেট ও ফ্যাশন হাউজে ক্রেতাদের পদচারণা এখন চোখে পড়ার মতো। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, এছাড়া বিদ্যুতের আসা-যাওয়া খেলায় জেনারেটর চালানোয় জ্বালানির খরচও লাগছে। এ অবস্থায় ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় দামও কিছুটা বেড়েছে। এটি শুধু সিলেটে নয় সারাদেশে একই অবস্থা।
সিলেটে অন্যবার ঈদের বাজার সাধারণত ১৫-১৬ রমজান থেকেই জমে উঠতো। তবে এবার ২০ রমজানের পর থেকে জমজমাট কেনাকাটা হচ্ছে। অভিজাত-বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত সবখানেই ভিড় দেখা যাচ্ছে।
Advertisement
রোববার (২০ এপ্রিল) রাতে নগরের নয়াসড়ক, জিন্দাবাজার, নাইওরপুল, দরগাহগেট, বন্দরবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বিপণিবিতান, মার্কেট ও শপিংমলগুলো রীতিমতো আলো ঝলমলে।
নগরের নয়াসড়ক এলাকার পুরো সড়কজুড়েই লাল-নীল বাতি লাগানো। একটু পরপরই নির্মাণ করা হয়েছে তোরণ। দেখলে মনে হবে যেন বিয়েবাড়ি। অভিজাত ফ্যাশন হাউজ এবং শপিংমলও এই সড়কে বেশি। এখানে ক্রেতাদেরও ভিড় রয়েছে চোখে পড়ার মতো। তরুণ-তরুণীর পাশাপাশি এই ভিড়ে আছেন নানা বয়সী নারী-পুরুষ এবং শিশুরাও।
আর জিন্দাবাজার ও বন্দরবাজারের ফুটপাতেও জমে উঠেছে ঈদবাজার। নিম্ন এবং মধ্য আয়ের লোকজন ফুটপাতে পছন্দের জামা কিনছেন একটু দরদাম করেই। মার্কেটের চেয়ে একটু সস্তায় কাপড় পাওয়ায় ফুটপাতেও মানুষের ভিড় দেখা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগরের পূর্বজিন্দাবাজার, বারুতখানা, নয়াসড়ক, কুমারপাড়া, জেলরোড এলাকায় অভিজাত কাপড়ের দোকানগুলোতে প্রতিদিন ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ছে।
Advertisement
সিলেটের অভিজাত শপিংমল সিটি শপিং সেন্টারে ঈদের নতুন পোশাক কিনতে আসা শিশু ওয়াজিহা মাহমুদ আফরিন জাগো নিউজকে বললো, ঈদের জামা কিনতে বাবা-মায়ের সঙ্গে মার্কেটে এসেছি। আমি ও আমার বোন দুটি সারারা কিনেছি। আমাদের খুব পছন্দ হয়েছে।
বিয়ানীবাজার থেকে সিলেটে ঈদের কেনাকাটা করতে আসা তানিয়া আক্তার সুমি বলেন, ঈদের কেনাকাটা করতে আমি আমার ফুফুর সঙ্গে সিলেটে মার্কেটে এসেছি। একটি পছন্দের ড্রেস ও এক জোড়া জুতা কিনেছি। এবার দিনে তীব্র গরম থাকায় রাতে মার্কেটে এসেছি। কিন্তু রাতের বেলায়ও মানুষের ভিড় বেশি।
জিন্দাবাজারের ব্লু-ওয়াটার শপিং সিটির জারা ফ্যাশন হাউসের মালিক জুনেদ আহমদ বলেন, রমজানের শেষদিকে এসে কেনাকাটা বেড়েছে। নিজেদের পছন্দের জামা কিনছেন ক্রেতারা। আশা করছি, ব্যবসা ভালোই হবে।
ফ্যাশন হাউস মাহার স্বত্বাধিকারী মাহি উদ্দিন আহমদ সেলিম বলেন, নয়া সড়ক এলাকায় ক্রেতাদের স্বাগত জানাতে এবার একটু ব্যতিক্রমভাবে সাজসজ্জা করা হয়েছে। এবার কেনাকাটাও ভালো হচ্ছে।
ছামির মাহমুদ/এমআরআর/এমএস