ফিচার

প্রবোধকুমার সান্যালের প্রয়াণ দিবস

প্রবোধকুমার সান্যাল একজন খ্যাতনামা বাঙালি সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও পরিব্রাজক। কল্লোল যুগের লেখক গোষ্ঠীর জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি খুবই জনপ্রিয় সাহিত্যিক ছিলেন। ১৯০৫ সালের ৭ জুলাই কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন।

Advertisement

প্রবোধকুমার শিক্ষা সম্পূর্ণ করেন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজিয়েট স্কুল ও সিটি কলেজে। মহাত্মা গান্ধীর ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দিয়ে কারাবরণ করেছিলেন। জীবিকার জন্যে নানা পেশা অবলম্বন করেছেন। ১৯২৭ সালে সেনাবাহিনীতে কেরানির কাজ নিয়ে উত্তর পশ্চিম ভারতের দুর্গম এলাকায় যান। এছাড়া ডাক বিভাগে, ছাপাখানায়, মাছের ভেড়িতে কাজ করেছেন।

তার প্রথম গল্প ‘মার্জনা’ কল্লোল পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর তিনি কল্লোল গোষ্ঠীর একজন নিয়মিত লেখক হিসেবে পরিচিত হন। প্রথম উপন্যাস যাযাবর।‘মহাপ্রস্থানের পথে’ ভ্রমণকাহিনিটি বাংলা সাহিত্যে বিশেষ স্থান অধিকার করেছিল। দুটি বিশ্বযুদ্ধ, জাতীয় আন্দোলন, দেশভাগ, দাঙ্গা, ইত্যাদি তার সাহিত্যে ছাপ ফেলে। ১৯৫৬ ও ৫৭ সালে নিখিল ভারত বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। কল্লোল ছাড়াও বিজলী, স্বদেশ, দুন্দুভি, পদাতিক, ফরওয়ার্ড, বাংলার কথা প্রভৃতি পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন এবং বিজলী, স্বদেশ, সাপ্তাহিক যুগান্তর সাহিত্য পত্রিকা ও স্বদেশ পত্রিকার সম্পাদনা করেছেন। স্বদেশ পত্রিকার সম্পাদক থাকাকালে একবার রাজদ্রোহের অভিযোগে অভিযুক্ত হন।

ইংরেজি ফরোয়ার্ড ও বাংলায় বাংলার কথা পত্রিকার লেখক ছিলেন। তার উপন্যাস ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ পাঠ করার পর স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন ‘তোমার ভাষা পাঠকের মনকে রাস্তায় বের করে আনে’। প্রায় দেড়শত গ্রন্থের রচয়িতা প্রবোধকুমারের বিখ্যাত বইগুলি হল: নদ ও নদী, শ্যামলীর স্বপ্ন, উত্তর কাল, দেবতাত্মা হিমালয়, উত্তর হিমালয় চরিত, রাশিয়ার ডায়েরী, উত্তর কাল, হাসুবানু, জলকল্লোল, পরিব্রাজকের ডায়রী, পর্যটকের পত্র, বনস্পতির বৈঠক ইত্যাদি।

Advertisement

তার কাহিনি অবলম্বনে বহু সফল চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে, কাঁচ কাটা হীরে, পুষ্পধনু, প্রিয় বান্ধবী ইত্যাদি। তার শ্রেষ্ঠ রচনা ‘মহাপ্রস্থানের পথে’ চলচ্চিত্রায়িত হয় ১৯৫২ সালে নিউ থিয়েটার্সের সৌজন্যে। পরিচালক ছিলেন কার্তিক চট্টোপাধ্যায়। এই সিনেমাটি হিন্দিতে যাত্রিক নামে বের হয়।

প্রবোধকুমার সান্যাল তার সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণপদক, শিশির কুমার পুরস্কার, মতিলাল পুরস্কার, শরৎ পুরস্কার এবং আনন্দ পুরস্কার পান। ১৯৮৩ সালের ১৭ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন তিনি।

কেএসকে/জেআইএম

Advertisement