প্রচণ্ড গরমে বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে যশোরের বেনাপোল। প্রতিদিন তাপমাত্রা বাড়ছে। রোববার (১৬ এপ্রিল) এখানকার তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।
Advertisement
আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, শনিবার যশোরের তাপমাত্রা ছিল ৪১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে শুক্রবার ছিল ৪০ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বৃহস্পতিবার ছিল ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, বুধবার ছিল ৩৯ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস ও মঙ্গলবার ছিল ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা অব্যাহত থাকার কারণে দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে। রোজাদার মানুষ একদম হাফিয়ে উঠছেন। যেনো গরমে জনজীবন ত্রাহি অবস্থা। কোনো কাজ না করলেও ঘামে শরীর ভিজে যাচ্ছে।
তার মধ্যে ঘনঘন বিদ্যুতের লোডশেডিং মানুষের এ দুর্ভোগের মাত্রাকে আরেক দফা বাড়িয়ে দিয়েছে। একাধিকবার বিদ্যুৎ চলে যাবার কারণে মানুষের প্রাণ ওষ্ঠাগত। বন্দর এলাকায় দুই তিন ঘণ্টা লোডশেডিং হলেও গ্রামাঞ্চলে ইফতার, তারাবি, সেহরির সময় বিদ্যুৎ থাকে না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে লোডশেডিং।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরম-লোডশেডিংয়ে দিনাজপুরে বেড়েছে হাতপাখার কদর
Advertisement
বেনাপোলের বন্দরের শ্রমিকরা জানান, সূর্যের তেজ যেমন, বন্দরের মধ্যে থেকেও একই রকম ঝাঁজালো তেজ চোখেমুখে লাগছে। মনে হচ্ছে গরম হাঁড়ি থেকে বাষ্প বের হয়ে চোখ-মুখ পুড়ে যাচ্ছে। মাথায় করে মালামাল উঠানামা করতে পারছি না। মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিয়ে আবারও কাজ করছি। কাজ না করলে সংসার চালাবো কিভাবে।
চেকপোস্টের ভ্যানচালক ইদ্রিস আলী বলেন, প্রখর রোদ ও তাপে ভ্যান চালানো সম্ভব হচ্ছে না। যাত্রীরও আমাদের খোলা ভ্যানে উঠছে না। সকালের দিকে ২-১ টি ভাড়া পেলেও ১১টার পর থেকে কোনো ভাড়া নেই। তাই গাছতলায় শুয়ে আছি।
মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, তীব্র গরম ও দাবদাহে নষ্ট হচ্ছে বোরো ধান ও সবজি ক্ষেত। নিয়মিত সেচ দিতে না পারায় অনেকের ধানক্ষেত ফেটে চৌচির। পানির অভাবে ধানের গাছ শুকিয়ে গেছে।
হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ইউসুফ আলি জানান, নাভারণ বুরুজবাগান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন ধরে গরমের কারণে বেড়েছে রোগব্যাধি। গত সাতদিনের ব্যবধানে জ্বর, কাশি, সর্দি, ডায়রিয়া, হাঁপানি নিয়ে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছে হাসপাতালে। বিভিন্ন ক্লিনিকেও বাড়ছে রোগী। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরছেন রোগীরা। এরমধ্যে ১৫ জন ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়।
Advertisement
মো. জামাল হোসেন/আরএইচ/জেআইএম