দেশজুড়ে

চুয়াডাঙ্গায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড

চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

Advertisement

তিনি বলেন, মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া গত ২ এপ্রিল থেকে আজ (১৪ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এ চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড হয়। এ তাপমাত্রা আরও বাড়বে। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, প্রতিদিন জেলায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তীব্র দাবদাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা না থাকায় তাপমাত্রা কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। শুক্রবার দুপুর ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি। বাতাসের আদ্রতা ১৪ শতাংশ। এর আগে দুপুর ১২টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি।

আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে তীব্র হলো তাপপ্রবাহ

Advertisement

একটানা তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় হিট স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়রিয়া, শিশুদের নিউমোনিয়াসহ গরমজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রতিদিনই ৭০-৮০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। এরমধ্যে ডায়রিয়া ও টাইফয়েড রোগী বেশি।

তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গরমের প্রভাবে সবচেয়ে সংকটে আছেন পরিবারের জ্যেষ্ঠ ও শিশু সদস্যরা। বাড়ি বাড়ি গরমজনিত জ্বর-ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। সদর হাসপাতাল ও জেলার তিনটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গরমজনিত রোগের চিকিৎসা নিতে রোগীদের ভিড় বেড়ে চলছে।

সদর হাসপাতালের আরএমও ডা. ফাতেহ আকরাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগ গরমজনিত রোগে আক্রান্ত।

চুয়াডাঙ্গার রেলবাজারের ব্যবসায়ী সাহেল আহমেদ জানান, সূর্যের প্রখরতায় আর পিচঢালা পথের উষ্ণতায় চলাচল খুব কষ্টকর। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন: ৫৬ জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁই ছুঁই

চুয়াডাঙ্গা শহরের ইজিবাইক চালক মনির হোসেন জানান, পেটের তাগিদে বের হচ্ছি। এতো গরম পড়ছে। রাস্তা-ঘাটে মানুষ বের হচ্ছে না। তাই ভাড়াও পাচ্ছি না। এমন হলে খাওয়া-দাওয়া কষ্ট কর হয়ে পড়বে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, তীব্র দাবদাহের কারণে বোরো ধান, আমের গুটি ঝরে যাচ্ছে। আমগাছে পানি স্প্রে এবং বোরো ধানসহ সব ধরনের সবজি ক্ষেতে প্রতিদিন সেচ দিতে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি কর্মকর্তারা।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক গরমে করণীয় বিষয়ে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন: সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জের আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সিনিয়র পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলতি মৌসুমে মাঝারি দাবদাহ বিরাজ করছিল। ওইদিন জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ সেলসিয়াস। শুক্রবার রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৭ ডিগ্রি। চলতি সপ্তাহেই তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছাতে পারে। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড থেকে প্রচণ্ডতর দাবদাহ দেখা দিতে পারে চুয়াডাঙ্গাতে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. মাহবুবুর বলেন মিলন, গরমে শিশুদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর ও প্রস্রাবে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। এসব রোগ নিয়েই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসছে তারা।

হুসাইন মালিক/আরএইচ/এএসএম