বিনোদন

২৪ বছরে একুশে টেলিভিশন

২৪ বছরে একুশে টেলিভিশন

‘পরিবর্তনে অঙ্গিকারবদ্ধ’ স্লোগান ধারণ করে ২৩ বছর ধরে অনুষ্ঠান প্রচার করে আসছে একুশে টেলিভিশন। দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল টেলিভিশন হিসেবে যাত্রা এবং পরবর্তীতে স্যাটেলাইট চ্যানেল হিসেবে নতুন পরিচয়ে শুরুর পর বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে আজ (১৪ এপ্রিল) ২৪তম বছরে পদার্পণ করেছে এ প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

আরও পড়ুন: দেশের সব বিমানবন্দরে বিটিভি প্রদর্শনের নির্দেশ

২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল বাঙালির চিরায়ত উৎসব বাংলা নববর্ষের দিনে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু করে একুশে টেলিভিশন। পরিবর্তনের অঙ্গিকারবদ্ধ স্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠা হওয়া একুশে টেলিভিশন মাত্র ২৮ মাসের মধ্যে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ, বৈচিত্রময় অনুষ্ঠানের সৌন্দর্য ছড়িয়ে জয় করে কোটি মানুষের মন।

প্রতিষ্ঠানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চ্যানেলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘পরিবর্তনে অঙ্গীকারাবদ্ধ একুশের দৃপ্ত শপথ ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সমৃদ্ধ দেশ গড়া। আমাদের প্রত্যয় দূর করেছে জীর্ণতা, অবক্ষয় আর কুসংস্কার। আগামী দিনেও নবজাগৃতির নন্দিত বাংলাদেশের ছবি আঁকবে একুশের ক্যানভাস।’

Advertisement

আরও পড়ুন: কেন জনপ্রিয়তা হারালো বিটিভি?

তিনি বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের দর্শন, জাতির পিতা শেখ মুজিবের আদর্শ ধারণ করে চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দিগ্বিদিক ছুটে চলবে বলবান একুশের অনিরুদ্ধ দল। নবোদ্যমে নবজাগরণের সাক্ষী হবে গণমানুষের ভালোবাসায় ঋদ্ধ একুশে টেলিভিশন।’

একুশের চেতনা নিয়ে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ ও রুচিশীল অনুষ্ঠানে দর্শক হৃদয় জয় করেছে চ্যানেলটি। অপ্রতিরোধ্য পথচলা রোধ করতে বারবার বাঁধার মুখে পড়েছে একুশে টেলিভিশন। তবে সংকট কাটিয়ে একুশে মাথা তুলেও দাঁড়িয়েছে বারবার। এরপরেই ২০০২ সালে রাজনৈতিক রোষের শিকার হয় একুশে টেলিভিশন। আইনী জটিলতার অজুহাতে বন্ধ করে দেয়া হয় দর্শকপ্রিয় চ্যানেলটি।

২৯ আগস্ট ২০০২। গণমাধ্যমের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আইনী মারপ্যাঁচ ও রাজনৈতিক কুটচালে বন্ধ করে দেয়া হয় দেশের প্রথম বেসরকারি টেরিস্ট্রিয়াল চ্যানেল একুশে টেলিভিশন।

Advertisement

তবে গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধের এ ঘটনার পর ২০০৫ সালে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয় একুশের। শেষ পর্যন্ত সব বাধা পেরিয়ে ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ স্যাটেলাইট সম্প্রচারে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মাটি-মানুষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের দর্পণ হয়ে ওঠে একুশে টেলিভিশন।

২০০৫ সালে আদালত একুশে টেলিভিশন সম্প্রচারের বৈধতা দিলেও, বন্ধ করতে যতটা তাড়াহুড়া, খুলে দিতে ততোটাই টালবাহানা করে। শেষ পর্যন্ত ২০০৭ সালে আবাও সম্প্রচারে আসার পর থেকে নানা ঘাত প্রতিঘাত পার করে একুশে পা রাখলো ২৪ বছরে। জন্মলগ্ন থেকেই একুশে টেলিভিশন গণমানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়েছিল বলেই মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেছিল বিএনপি-জামায়াত জোট।

প্রথম পর্বে যাত্রার শুরুর পর থেকেই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ এবং বৈচিত্রময় অনুষ্ঠান দিয়ে একুশে টেলিভিশন জয় করে কোটি বাঙালির মন। পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জয়গান, বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদ, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বলিষ্ঠ দাবি, ধর্মান্ধতা ও কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল একুশে।

ওইসময় পথের প্যাঁচালী, আমরাও বলতে চাই, পথে পথে, দৃষ্টি, সফল যারা কেমন তারা, ভার্জিন তাকদুম তাকদুম, কেনাকাটা অনুষ্ঠানসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য ড্রামা সিরিজ জনপ্রিয়তা পায়।

বর্তমানে দেশের জনপ্রিয় এ টিভি স্টেশনে খবর ছাড়াও প্রচারিত হচ্ছে খবরের বিশ্লেষণধর্মী টকশো অনুষ্ঠান ‘একুশের রাত’। এ ছাড়াও একুশে টেলিভিশনে রয়েছে বিভিন্ন বিনোদনধর্মী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন। এসব অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বৈচিত্রময় নাটক ও সিনেমা একুশের দর্শকদের মন রাঙিয়ে চলেছে সেই প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই।

এমএমএফ/জিকেএস