ধর্ম

কেঁপে উঠলেন ইবরাহিম আদহাম

বলখের বাদশাহ ইবরাহিম আদহাম। যিনি দুনিয়ার রাজত্ব ছেড়ে হয়েছিলেন সমগ্র জাহানের অঘোষিত বাদশা। তিনি ছিলেন মুত্তাকি ও পরহেযগার ব্যক্তি। আল্লাহর ভয়ে তিনি দুনিয়ার রাজত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। রাজত্ব ছাড়ার পূর্বে ইবরাহিম আদহামের একটি ঘটনা তাঁর অন্তরকে কাঁপিয়ে দিলো। যা এখানে তুলে ধরা হলো-বাদশাহ ইবরাহিম ইবনে আদহাম একদিন পাশ্ববর্তী জঙ্গলে শিকারে যান। সে সময় এক বালিকা দাসী রাজপ্রাসাদে তার শয়নকক্ষে এসে দেখলেন বাদশাহর স্ত্রীও সেখানে নেই। রাজার শয়নকক্ষের বহুমূল্যবান আসবাবপত্র, সুশোভিত সুঘ্রাণ মিশ্রিত বিছানা বালিকা দাসীকে আত্মহারা করে তুললো। সে নিজের (দাসী) অবস্থার কথা ভুলে গেলো। তাঁর লোভ জাগলো রাজবিছানায় শয়ন করার। অতি সন্তপর্ণে সে রাজবিছানায় শুয়ে পড়লো। এক পর্যায়ে সে ঘুমিয়ে পড়লো।ঘুমন্ত অবস্থায় বালিকা দাসীকে রাজ বিছানায় পাওয়া গেলো। বাদশাহ ইবরাহিম আদহাম শিকার থেকে বাড়ি ফিরলে তাঁকে এ ঘটনা অবহিত করা হয়। যা শুনে রাজা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন এবং বালিকা দাসীকে ৫০টি বেত্রাঘাত করার নির্দেশ দিলেন।বাদশাহর হুকুম বাস্তবায়নের পর তিনি বললো, হে বালিকা! তুমি তোমার কৃতকর্মের জন্য নিশ্চয় দুঃখবোধ করছো?বালিকা দাসী উত্তর দিলো- হ্যাঁ, মহামান্য রাজা। কিন্তু আমি আমার চেয়ে আপনার জন্যই বরং বেশি দুঃখবোধ করছি।রাজা উদ্যতস্বরে বললেন, কেন এ অমূলক চিন্তা করছো?বালিকা দাসী বললো, কিছু সময় রাজ বিছানায় শয়ন করার অপরাধে যদি ৫০টি বেত্রাঘাত সহ্য করতে হয়। তবে বছরের পর বছর ঐ বিছানায় শয়ন করার জন্য আপনার কেমন শাস্তি হবে, তা ভেবে আমি দুঃখবোধ করছি।বালিকা দাসীর কথায় বাদশাহর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। মনে হয় এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত। বাদশাহ ইবরাহিম আদহামের চেহারা পাল্টে গেলো। তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তার সকল পরিচারিকাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, তাকে এখান থেকে নিয়ে যাও এবং উত্তম চিকিৎসা প্রদান করো। আর আমাকে একাকি থাকতে দাও।সুতরাং মানুষের হিদায়াতের জন্য প্রত্যেকের জীবনের প্রতি কর্মকাণ্ডের বিচার-বিশ্লেষণই যথেষ্ট। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আত্মসমালোচনা করার মাধ্যমে তাঁর হিদায়াত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।এমএমএস/পিআর

Advertisement