দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ছে ফরিদপুরে। এতে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে জেলায় ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এযাবতকালের সবচেয়ে বেশি তাপমাত্রার রেকর্ড ফরিদপুরে।
Advertisement
একদিকে রোজা, অন্যদিকে তাপপ্রবাহ সবমিলিয়ে যেন ত্রাহি দশা। বৃষ্টি কিংবা বাতাসের কোনো লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। সারাদিন সূর্যের তেজ ছড়িয়েছে ব্যাপকহারে। আকাশে মেঘের ছিটেফোঁটারও দেখা মেলেনি। ভোরের সূর্য উদয়ের পর থেকেই থমথমে হয়ে ওঠে পরিবেশ। দিনের বেলা ঘর থেকে বের হলেই মরুর দেশের মতো লু-হাওয়া শরীরে বিঁধছে। গাছের সবুজ পাতাগুলো সূর্যের রশ্মিতে কুচকে গেছে। বাতাসের অভাবে নড়তেও দেখা যায়নি। সূর্য ডোবার পরও কমছে না তাপমাত্রা। ঘরে-বাইরে কোথাও এক চিলতে স্বস্তি মিলছে না সাধারণ মানুষের।
বেলা বাড়লেই রাস্তা-ঘাটে মানুষের আনাগোনা কমে যায়। তীব্র গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বয়স্ক ও শিশুরা। এর প্রভাব পড়েছে রোজাদারদের মধ্যে। রোজার দুই-তৃতীয়াংশ শেষ হয়ে এসেছে। তবে তীব্র গরমে জমে উঠছে না ঈদের বাজার। পহেলা বৈশাখ উদযাপনের প্রস্তুতিতেও লেগেছে ভাটার টান।
এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে নিম্ন আয়ের দিনমজুর ও রিকশাচালকরা বিপাকে পড়েছেন। শহীদ মোল্লা নামে এক রিকশাচালক বলেন, পেটের দায়ে সকালে বের হয়েছিলাম রিকশা নিয়ে। কিন্তু প্রচণ্ড রোদের তাপে রাস্তাঘাটে তেমন যাত্রী নেই।
Advertisement
মো. শহিদুল ইসলাম নামে একজন রাজমিস্ত্রি বলেন, প্রখর খরা আর গরমের কারণে গত দুদিন কাজে যাইতে পারি নাই। এখন ঘরে খাবার নাই তাই বাড়িতেও বসে থাকতে পারছি না। এত গরম আমি আমার ৩৫ বছর জীবনে দেখি নাই।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চরদুর্গাপুরে রান্না ঘর থেকে আগুন লেগে কয়েকটি বসতবাড়ি পুড়ে যায়। এর আগেরদিন সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের চর চাঁদপুর বাজারকান্দি গ্রামে ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে চারটি পরিবারের ৯টি ঘর ও মূল্যবান আসবাবপত্র।
ফরিদপুরের আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আজ জেলায় তাপমাত্রার পারদ ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে উঠেছে। ফরিদপুরে এটি এযাবতকালের রেকর্ড তাপমাত্রা। তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে। টানা ভারী বর্ষণ না হওয়া পর্যন্ত গরম প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
এন কে বি নয়ন/এসজে/জেআইএম
Advertisement