আন্তর্জাতিক

সেহরিতে ঘরের চেয়ে বাইরের খাবারে টান কলকাতাবাসীর

স্বপ্ননগরী কলকাতায় বেশিরভাগ মানুষ যখন রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তখন রমজান মাসে জেগে থাকেন কিছু মানুষ। পবিত্র এই মাস এলেই তিলোত্তমার শহরের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে ধরা পড়ে অন্যরকম এক চিত্র। আলো ঝলমলে কলকাতায় সেহরির আগে দেখা মেলে রাতজাগা এক দল যুবক ক্রিকেট-ফুটবল খেলায় ব্যস্ত। রাতের ফাঁকা রাস্তায় উৎসবের আমেজে মেতে ওঠে তরুণপ্রাণ। সবশেষ সেহরির পর দলবেঁধে ফজরের নামাজ পড়ে ঘুমাতে যায় তারা।

Advertisement

কলকাতার বেশিরভাগ মুসলিম বাসায় সেহরি করতে অভ্যস্ত নন। অধিকাংশই রেস্তোরাঁমুখী। তাই গভীর রাতে রেস্তোরাঁগুলোতে দেখা যায় উপচেপড়া ভিড়। উদ্দেশ্য একটাই- দলবেঁধে রেস্তোরায় বসে গরম খাবারের স্বাদ নেওয়া আর স্থানীয় মসজিদে ফজরের নামাজ পড়া।

আরও পড়ুন>> পা ফেলার জায়গা নেই নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন ইফতারি বাজারে

এই দৃশ্য দেখা যায় প্রায় সব এলাকাতেই। তাই অনেকে বলেন, রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলকাতার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় একবার যে চুলা জ্বালানো হয়, সেটি আর নেভে না।

Advertisement

কলকাতাবাসী মুসলিমদের সেহরিতে পছন্দের খাবার পুরি-সবজি, সঙ্গে হালুয়া, পরোটা, গরুর মাংস, তন্দুরি চিকেন। এ ধরনের খাবারের শেষে পাতে অবশ্যই চাই ফিরনি বা জিলাপি। অনেক আবার পছন্দ করেন এক গ্লাস গরম দুধ, সঙ্গে পাউরুটি বা গরম দুধে ভেজানো লাচ্ছা সেমাই।

আরও পড়ুন>> যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু ইফতারি কিনতে পারবেন কলকাতায়

কলকাতার নিউমার্কেট এলাকাকে অনেকেই বলেন ‘এক টুকরো বাংলাদেশ’। সেই নিউমার্কেট এলাকাতেও কয়েক বছর ধরে সেহরির জন্য রাত জাগছেন বাংলাদেশি পর্যটকরা। এসব এলাকায় হোটেল ব্যবসায়ীরা পর্যটকদের কথা ভেবে পবিত্র রমজান মাসে সেহরিতে রাখছেন ভাত, ডাল, মাছ, চুইঝাল দিয়ে মাংসসহ বিভিন্ন ধরনের বাংলাদেশি খাবার।

কেউ কেউ পছন্দ করেন বিভিন্ন ফলের স্বাদে তৈরি কেক বা পেস্ট্রি। সবশেষ মাটির পাত্রে ধোঁয়া ওঠা গরম গরম চা।

Advertisement

আরও পড়ুন>> রমজানে কলকাতায় আতরের চাহিদা দ্বিগুণ

নিউমার্কেট এলাকার একটি খাবারের হোটেলের মালিক মীর শামীম বলেন, এখানে বাংলাদেশি যারা আসেন, তাদের জন্য সেহেরির বিষয়টা থাকে। তাই এ এলাকার সব মুসলিম হোটেলই সারারাত খোলা থাকে। রমজান মাসে একবার চুলা জ্বালালে আর নেভানো হয় না। এখানকার হোটেলগুলোতে সেহরির জন্য বাংলাদেশিদের পছন্দের খাবার তৈরি করা হয়। ভাত, মাছ, মাংস- সবই পাওয়া যায়। মধ্যরাত থেকে শুরু করে ফজরের নামাজের আগপর্যন্ত চলে জমজমাট বেচাকেনা।

কেএএ/