জাতীয়

৯৯.৩২ শতাংশ পরিবারে বিদ্যুৎ

জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের পাশাপাশি আর্থ-সামাজিক অবস্থার অগ্রগামীতা সম্পর্কে বলা হয়েছে-২০২২ সালে খানার আয় ও ব্যয় জরিপে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ সুবিধাভোগী খানার শতকরা হার ৯৯ দশমিক ৩২ শতাংশ যা ২০১৬ ও ২০১০ সালে ছিল ৭৫ দশমিক ৯২ শতাংশ ও ৫৫ দশমিক ২৬ শতাংশ। অর্থাৎ বর্তমানে দেশে বিদ্যুতায়নের হার শতকরা শতভাগ। পাশাপাশি সাক্ষরতার হার বেড়ে ৭৪ শতাংশ হয়েছে।

Advertisement

দেশে দারিদ্র্যের হার এখন ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। অতিদারিদ্র্যের হার ৫ দশমিক ৬ শতাংশ। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। ওই বছর দেশে হতদরিদ্র জনগোষ্ঠী ছিল ১২ দশমিক ৯ শতাংশ।

বুধবার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এসব তথ্য প্রকাশ করেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিসংখ্যান ভবনে অনুষ্ঠিত ‘খানার আয় ব্যয় জরিপ ২০২২’-এর ফলাফল প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, পল্লী অঞ্চলে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ এবং শহরে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ দরিদ্র রয়েছে।

Advertisement

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের জরিপে দেখা যায়, আয়ের জন্য গিনি সহগের মান শূন্য দশমিক ৪৯৯, যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৮২ এবং ২০১০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৪৫৮। এতে দেখা যায় বৈষম্য বেড়েছে। অন্যদিকে ২০২২ সালে ভোগ ব্যয়ের জন্য গিনি সহগের মান শূন্য ৩৩৪ যা ২০১৬ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৩২৪ এবং ২০১০ সালে ছিল শূন্য দশমিক ৩২১।

প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থায় খানার (পরিবার) অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে বিবিএস। এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে বর্তমানে প্রায় ১৪ দশমিক ১ শতাংশ খানার (পরিবার) অন্তত একজন সদস্য জরিপের আগের ১২ মাসে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন যা ২০১৬ সাল (৭ দশমিক ৫ শতাংশ) ও ২০১০ সালের (৭ দশমিক ৪ শতাংশ) তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এতে প্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক ব্যবস্থায় খানার অন্তর্ভুক্তিমূলক অংশগ্রহণ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

একইভাবে ৯২ দশমিক ২১ শতাংশ খানা উন্নত টয়লেট সুবিধার আওতাধীন এবং ৯৬ দশমিক এক শতাংশ খানায় নিরাপদ খাবার পানির প্রাপ্যতা নিশ্চিত হয়েছে।

বর্তমানে বাংলাদেশে ৭ বছর ও তার ঊর্ধ্বে বয়সীদের সাক্ষরতার হার ৭৪ শতাংশ যা ২০১৬ ও ২০১০ সালে ছিল ৬৫ দশমিক ৬ শতাংশ ও ৫৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। অর্থাৎ সাক্ষরতার হার ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।

Advertisement

২০২২ সালের তথ্য উপাত্তে দেখা যায়, খানায় খাদ্যদ্রব্য ও খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য সম্পর্কিত ব্যয়ে পরিবর্তন হয়েছে। খানার খাদ্যপণ্য ক্রয় সংক্রান্ত ব্যয়ের তুলনায় খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য ব্যয় ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২২ এর তথ্য-উপাত্তে দেখা যায়, খানার খাদ্যপণ্য ক্রয় সংক্রান্ত ব্যয় ৪৫ দশমিক ৮ শতাংশ এবং খাদ্যদ্রব্য বহির্ভূত ভোগ্যপণ্য সম্পর্কিত ব্যয় ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ যা ২০১৬ সালে যথাক্রমে ৪৭ দশমিক ৭ শতাংশ ও খাদ্য বহির্ভূত পণ্যে ৫২ দশমিক ৩ শতাংশ।

ক্যালরি গ্রহণে লক্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে বলে জানানো হয় বিবিএস-এর প্রতিবেদনে। বর্তমান জরিপে তথ্য দেখা যায়, বর্তমানে জনপ্রতি ক্যালরি নেওয়ার পরিমাণ দৈনিক ২ হাজার ৩৯৩ কিলো ক্যালরি, যা ২০১৬ সালে ছিল ২ হাজার ২১০ দশমিক ৪ কিলোক্যালরি এবং ২০১০ সালে ছিল ২ হাজার ৩১৮ দশমিক ৩ কিলোক্যালরি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএস-এর মহাপরিচালক মো.মতিয়ার রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ।

এমওএস/এমআইএইচএস/জিকেএস