বিশ্বের বড় বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই-ভিত্তিক চ্যাটবট তৈরির প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েছে, তখন চীনা জায়ান্ট আলিবাবার পক্ষে কি আর হাত গুটিয়ে বসে থাকা সম্ভব! এ কারণে তারাও নাম লিখিয়েছে এ দৌড়ে। চ্যাটজিপিটি-বার্ডের আদলে আলিবাবাও আনতে চলেছে নিজস্ব এআই চ্যাটবট।
Advertisement
সম্প্রতি মাইক্রোসফট ও গুগলের মতো বেশ কয়েকটি বৃহৎ কোম্পানি তাদের নিজস্ব ‘জেনারেটিভ এআই চ্যাটবট’ উন্মোচন করেছে। ২০২২ সালের নভেম্বরে মাইক্রোসফটের ওপেনএআই বাজারে ছেড়েছে চ্যাটজিপিটি।
আরও পড়ুন>> ৬ ভাগ হচ্ছে আলিবাবা
গুগলও এরই মধ্যে বার্ড নামে একটি চ্যাটবট পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে। তবে আপাতত তা শুধু ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য। চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি বাইদুও একই ধরনের চ্যাটবট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে।
Advertisement
বলা হচ্ছে, এআই হচ্ছে আগামী দিনের প্রযুক্তি। এ নিয়ে বৃহৎ কোম্পানিগুলোর মধ্যে শুরু হয়ে গেছে তীব্র প্রতিযোগিতা। সারা বিশ্বে এআই প্রযুক্তি নিয়ে চলছে হইচই।
আলিবাবা বলেছে, তাদের নিজস্ব চ্যাটজিপিটি-জাতীয় প্রযুক্তির নাম হবে ‘টোংগি কিয়ানওয়েন’। অদূর ভবিষ্যতে এটি আলিবাবার সব ব্যবসার সঙ্গেই যুক্ত হবে। যদিও তার সুনির্দিষ্ট কোনো সময় জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন>> চ্যাটজিপিটি নিষিদ্ধ করলো ইতালি
‘টোংগি কিয়ানওয়েন’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে ‘হাজার প্রশ্ন করে একটি জবাব খোঁজা’। এর কোনো ইংরেজি নাম দেওয়া হয়নি। তবে এটি ইংরেজি ও চীনা– দুই ভাষাতেই কাজ করতে পারবে।
Advertisement
বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও চ্যাটবট নিয়ে গুগল, মাইক্রোসফট আর বড় বড় চীনা কোম্পানিগুলো এমন প্রতিযোগিতায় নেমেছে কেন?
বলা হচ্ছে, এআই হবে আগামী দিনের প্রধান প্রযুক্তি এবং ভবিষ্যতে মানুষের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভূমিকা থাকবে। অনলাইনভিত্তিক বহু সেবা হয়তো মানুষের পরিবর্তে এআই’র হাতে চলে যাবে।
আরও পড়ুন>> এআই কেড়ে নিতে পারে ৩০ কোটি চাকরি: রিপোর্ট
সম্প্রতি আন্তজাতিক বিনিয়োগ ব্যাংক গোল্ডম্যান স্যাশের এক প্রতিবেদনে একই ধরনের আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। তারা বলছে, ভবিষ্যতে ৩০ কোটি পূর্ণকালীন চাকরির জায়গা নিয়ে নিতে পারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। আর ইউরোপ-আমেরিকার মোট কর্মসংস্থানের এক-চতুর্থাংশই হয়তো চলে যাবে চ্যাটবটের হাতে।
অর্থাৎ, এআই হতে যাচ্ছে এক বিরাট ব্যবসা এবং তাতে মুনাফাও হবে বিপুল। যদিও সব বিশেষজ্ঞ এ পূর্বাভাসের সাথে একমত নন।
তবে, অনলাইনে আমাদের নানা জিনিস খোঁজা বা ইন্টারনেট সার্চ এখনই এক বিরাট ব্যবসা। গুগলের মূল কোম্পানি অ্যালফাবেট ২০২০ সালে শুধু সার্চ থেকেই ১০ হাজার ৪০০ কোটি ডলার আয় করেছে। মনে করা হচ্ছে, চ্যাটবট হয়তো আগামী দিনে এই ইন্টারনেট সার্চের প্রকৃতিও বদলে দিতে পারে।
আরও পড়ুন>> চ্যাটজিপিটির কারণে ঝুঁকিতে যেসব পেশা
এসব কারণেই কোম্পানিগুলো বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে ও নিজস্ব চ্যাটবট তৈরি করাচ্ছে। গুগলের বার্ড বা মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটি-ই শুধু নয়, অন্য কোম্পানিগুলোও বসে নেই।
ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রামের মালিক মেটা গত গ্রীষ্মেই নিজস্ব চ্যাটবট চালু করেছে, যার নাম ব্লেন্ডারবট। চীনা কোম্পানি বাইদু তাদের চ্যাটবট আর্নি বা ওয়েনশিন ইয়ানের একটি আরও আধুনিক সংস্করণ তৈরি করেছে।
চ্যাটজিপিটির মতো প্রযুক্তি এখন বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাচ্ছে। কিন্তু ওপেনএআই ঘোষণা দিয়েছে, উচ্চতর পর্যায়ের ব্যবহারকারীদের এজন্য অর্থ ব্যয় করতে হবে।
সূত্র: বিবিসি বাংলাকেএএ/