ভ্রমণ

ঈদের ছুটিতে অপরূপ ক্যাম্পাসের প্রকৃতি

মামুনূর রহমান হৃদয়

Advertisement

রোজা ও ঈদের ছুটিতে বদলে গেছে তিতুমীর কলেজের ক্যাম্পাসের চিত্র। বন্ধের আগে যে ক্যাম্পাসে সারাদিন থাকতো হই-হুল্লোড়, আড্ডা, পড়াশোনা, রুটিন মাফিক ক্লাস; সেই ক্যাম্পাসে এখন বিরাজ করছে শূন্যতা। এ শূন্যতাকেই কাজে লাগাচ্ছে প্রকৃতি। নিজেকে গুছিয়ে নিচ্ছে, সাজিয়ে নিচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব। এটাই যেন উপযুক্ত সময়। শহীদ মিনার, বেলায়েত চত্বর, পুষ্পকাননে ভিড় করছে না কেউ। নেই সাইকেলের টিংটিং আওয়াজ, গাড়ির হর্ন।

বসন্তের কোকিল ফাঁকা ক্যাম্পাসে গাইছে গান। প্রজাপতিরা বসেছে ফুলের মধু নিতে। বিড়ালছানা শরীর নাচিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে চারদিকে। প্রাণ ফিরে পেয়েছে সবুজে ঘেরা মাঠ, গাছ-পালা, বোটানিক্যাল গার্ডেন, পুষ্পকানন ও নানা প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ। প্রকৃতিতে ধরা দিয়েছে প্রাণবন্ততা।

আরও পড়ুন: ছুটির দিনে ঘুরে আসুন লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি

Advertisement

দেখে মনে হবে, তিতুমীর কলেজের প্রকৃতি যেন সব মুগ্ধতাকে হার মানাচ্ছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মনোমুগ্ধকর লীলাভূমি বাংলাদেশের নয়নাভিরাম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তিতুমীর কলেজ। বন্ধ ক্যাম্পাসে শুধুই প্রকৃতির অন্তরঙ্গতা। ডালে ডালে সবুজের সমারোহ। এক টুকরো সবুজের মাঝে লাল ইটের তৈরি ইমারত বৈচিত্র্যময় ক্যাম্পাসকে করে তুলেছে আরও নান্দনিক।

ভিন্ন রকম নীরব-নিস্তব্ধ পরিবেশ। পাখ-পাখালির মন মাতানো গান ছাড়া আর কোনো শব্দ নেই। সবুজ পাতায় ছেয়ে গেছে চারদিক। মনে হয়, কেউ বুঝি সবুজ রং ছিটিয়ে দিয়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে। প্রকৃতি যেন তার রূপ, রস ও সৌন্দর্য বৃক্ষের ঝুলিতে ঢেলে দিয়েছে। প্রকৃতির অপরিমেয় মায়াময় রূপ বঞ্চিত করেনি কাউকে। ঘিরে রেখেছে লাইব্রেরি, ক্যান্টিন, দিগন্ত জোড়া মাঠ, পায়ে হাঁটা রাস্তাসহ ১১ একরের পুরো ক্যাম্পাস। পাখির চোখে বিস্তৃত সবুজের মাঝে বুক টান করে দাঁড়িয়ে আছে রবীন্দ্র-নজরুল মুক্তমঞ্চ।

আরও পড়ুন: নুহাশ পল্লীতে হলুদ হিমুদের বিচরণ

মানুষের জীবন ও অস্তিত্ব প্রকৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেখানে প্রকৃতি নেই, সেখানে প্রাণের সন্ধান নেই। তিতুমীর কলেজের নানা জাতের গাছ-গাছালির সমারোহ ক্যাম্পাসকে দিয়েছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। শুধু প্রকৃতিপ্রেমীর কাছে নয়, পরিবেশ সচেতনদেরও করেছে বিমোহিত। ছুটিতে যখন ক্যাম্পাস হয়ে পড়েছে নিস্তব্ধ; তখন বৃহদাকার বেল গাছ, আম, কাঁঠাল, জামরুল, জলপাই, মাঠের ঘাসগুলো তরতর করে লাফিয়ে বড় হচ্ছে। ছুটির রেশ নেই ওদের মনে। ক্যাম্পাসের বুকে কান পাতলেই বাতাসে ভেসে আসে প্রাণোচ্ছ্বাসের মর্মধ্বনি।

Advertisement

প্রজাপতি, ঘাসফড়িং, চড়ুই, কোকিল, দোয়েল, কাঠবিড়ালিসহ হরেক প্রজাতির প্রাণী নিজেদের সবটুকু মেলে ধরেছে ক্যাম্পাসের প্রকৃতিতে। এ যেন প্রাণিকূলের এক অভয়ারণ্য। ফুটছে ফুল। ফুল যে কেবল গাছের মধ্যেই তার শোভা ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে, তা নয়। মানুষের মনেও তার রং ছড়িয়ে দিয়েছে। নির্জন ক্যাম্পাসে খইয়ের মতো ছড়িয়ে আছে নাম না জানা অসংখ্য ফুল।

লেখক: শিক্ষার্থী ও গণমাধ্যমকর্মী।

এসইউ/এমএস