দেশজুড়ে

গাজীপুরে এবারও ভোগান্তির কারণ হবে বিআরটি

অর্ধযুগ ধরে চলছে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত প্রায় ২১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ। এ প্রকল্পের কাজের শুরুতেই টঙ্গী থেকে গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার সড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে বর্ষা মৌসুম ও দুই ঈদ উদযাপনের সময় তীব্র যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন ঘরমুখো যাত্রীরা।

Advertisement

যদিও ভোগান্তি আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে, তারপরও যানজট থেকে সহসা মুক্তি মিলছে না এ সড়কে চলাচলকারী যানবাহনগুলোর। তাই এবারও ভোগান্তির কারণ হবে বিআরটি।

বিমানবন্দর থেকে চান্দনা গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত বিআরটি প্রকল্পের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে চলমান বিআরটি প্রকল্পের কাজ। কোথাও চলছে বিআরটি স্টেশন নির্মাণ কোথাও উড়াল সড়কের নির্মাণকাজ। কোথাও রাস্তা প্রশস্তকরণ ও উন্নয়নকাজ।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কের বিভিন্ন অংশে কোথাও দুই লেন আবার কোথাও তিন লেন করা হয়েছে। মূল সড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী, ভারী যন্ত্রপাতি ফেলে রাখা হয়েছে। চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া বাইপাস মোড়ে উড়াল সড়কের কাজ চলমান। চান্দনা চৌরাস্তার পশ্চিম প্রান্তে মহাসড়কের ওপর সাটারিং লাগানো রয়েছে। যদিও এগুলো ঈদের আগে অপসারণ করার কথা জানিয়েছেন গাজীপুর মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: এবারও ভোগাবে উত্তরের ঈদযাত্রা

বিআরটি প্রকল্পে নির্মাণকাজের জন্য সড়কের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী ব্রিজ পর্যন্ত অংশটুকু দুই পাশে সংকুচিত হয়ে গেছে। সড়কটির বিভিন্ন অংশে এমনও জায়গা আছে, যেখানে একটির বেশি গাড়ি চলতে পারছে না। ঈদে একটি লেন দিয়ে যানবাহন চলাচলের ফলে তৈরি হবে যানবাহনের দীর্ঘ সারি।

টঙ্গী ব্রিজ এলাকায় দেখা যায়, তুরাগ নদের ওপর নির্মিত বিআরটি প্রকল্পের উড়াল সড়কের কাজ চলায় দুটি বেইলি ব্রিজের একটির ওপর গাজীপুরমুখী, আরেকটির ওপর দিয়ে ঢাকামুখী গাড়ি চলছে। টঙ্গী ব্রিজ থেকে কামারপাড়া পর্যন্ত সড়কের বেশিরভাগ জায়গা খানাখন্দে ভরা। এ অংশে সড়কের মাঝখানে স্থায়ী প্রতিবন্ধক বানিয়ে চলছে বিআরটির কাজ। রাস্তা অনেক জায়গায় সংকুচিত করা হয়েছে। চালকরা বলছেন, ঈদযাত্রায় ব্যাপক যানজট তৈরি করতে পারে প্রকল্পের এ অংশটি।

কামারপাড়া সড়কের মাথা থেকে মিলগেট হয়ে চেরাগআলী পর্যন্ত সড়কের ওপর নির্মাণসামগ্রী, ক্রেন ও সাটারিংয়ের জিনিসপত্র যত্রতত্র ফেলে রাখা হয়েছে। তামিরুল মিল্লাত মাদরাসা, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে কুনিয়া পর্যন্ত সড়কের মাঝখানে বিআরটি স্টেশনের কাজ চলায় সংকুচিত হয়ে আছে মূল সড়ক। রাস্তা সংকুচিত হওয়ায় যান চলাচলে ধীরগতি লেগেই থাকছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় সড়কে শৃঙ্খলা কার্যকর করা বড় চ্যালেঞ্জ: কাদের চান্দনা চৌরাস্তায় চলছে পুরোদমে বিআরটি প্রকল্পের কাজ। এ কাজ চলমান থাকায় যানবাহন প্রবেশ ও প্রস্থানের রাস্তা হয়েছে সংকুচিত। পাশাপাশি চান্দনাসহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের দুই পাশে ফুটপাত দখল করে অস্থায়ী দোকানপাট বসানোয় যান চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে। ট্রাফিক উপ-পুলিশ কমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, ঈদের আগেই বিমানবন্দর থেকে টঙ্গী চেরাগআলী মার্কেট পর্যন্ত সাড়ে চার কিলোমিটার উড়াল সড়কের দুই লেন খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। চান্দনা চৌরাস্তার পশ্চিম পাশে উড়াল সড়কের সাটারিং খুলে দেওয়া হবে। এতে সড়ক প্রশস্ত হবে। এছাড়া যেখানে মহাসড়ক সংকুচিত সেখানে প্রশস্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, আশা করা যায় অন্যবারের তুলনায় এবার যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন।

বিআরটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তার ওপর রাখা নির্মাণসামগ্রী, ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলা হবে। যতটুকু সম্ভব রাস্তা সম্প্রসারণ করে যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে তোলা হবে। ঈদের সময় বিআরটি প্রকল্পের কাজ সাময়িক বন্ধ রাখা হবে।

এসআর/এএসএম