বরিশালের অভিজাত শপিংমলগুলো ক্রেতাশূন্য থাকলেও জমে উঠেছে ফুটপাতের বেচাকেনা। নিম্নআয়ের মানুষ তাদের সাধ্যমতো পরিবারের সদস্যদের জন্য কেনাকাটা করছেন ফুটপাত থেকে। বিপরীতে শপিংমলগুলোতে দেখে ও দাম শুনে চলে যাচ্ছেন ক্রেতারা।
Advertisement
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) বরিশাল নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ঘুরে দেখা যায়, বেশিরভাগ অভিজাত শপিংমলগুলো অনেকটাই ক্রেতাশূন্য। এর বিপরীতে ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় চোখে পড়ার মতো। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হকারদের হাঁকডাকে মুখর থাকছে ফুটপাতের প্রতিটি দোকান।
ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী এসব দোকানে প্রায় সব কিছুই পাওয়া যাচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের থ্রি-পিস, টু-পিস, লেহেঙ্গা, ফ্রক ও বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস। ছেলেদের জন্য রয়েছে পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জিসহ বাচ্চাদের বাহারি পোশাক।
বাচ্চাদের জন্য ঈদের কাপড় কিনতে আসা নগরীর ৫ নম্বর ওয়ার্ড পলাশপুরের বাসিন্দা শামীম বলেন, ‘একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। বেতন পাই ১৫ হাজার টাকা। ওভার টাইম মিলিয়ে ১৮ হাজার টাকা। ছেলেমেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে চারজনের সংসার। ঘরভাড়া, ছেলেমেয়ের পড়ালেখার খরচ, মাসিক বাজার করে আর হাতে টাকা থাকে না। তার মধ্যে বর্তমানে যা বাজারমূল্য তা দিন দিন আমাদের মতো মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। তারপরও সামনে ঈদ। নিজেরা না কিনলেও বাচ্চাদের জন্য কেনা লাগে। একটু কম দামে কিনতেই ফুটপাতের দোকানগুলোতে আসা।’
Advertisement
সোনারগাঁও টেক্সটাইল মিলে চাকরি করা আরেক ক্রেতা কাওসার বলেন, ‘যে টাকা আয় তা দিয়ে সংসার চালানোই কষ্টের। তারপরও ঈদ এলে সবার জন্য কিছু কেনা লাগে। বাচ্চার জন্য দুটি টপস কিনেছি। ৩৫০ করে ৭০০ টাকা নিয়েছে। দেখতে প্রায় একই রকম পোশাক যদি ব্র্যান্ডের কোনো দোকান থেকে নিতাম তাহলে একেকটা ১ হাজার ৫০০ টাকা করে পড়ে যেতো।’।
দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় মধ্যআয়ের ক্রেতারা ফুটপাতমুখী হচ্ছেন বলে জানান সিটি করপোরেশন সংলগ্ন ফুটপাতের বিক্রেতারা। বিক্রেতা জুলহাস বলেন, ‘মার্কেটে দোকান ভাড়া বেশি। আমাদের এখানে কোনো দোকান ভাড়া লাগে না। তাই আমরা অনেক কম দামে পোশাক বিক্রি করতে পারি।’
আরেক বিক্রেতা শহীদ মিয়া বলেন, ‘ফুটপাতের দোকানগুলোতে বিভিন্ন বয়সী ক্রেতা আসেন। দোকানিরাও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী দোকানে সব পণ্য তোলেন। আমরা সামান্য লাভ হলে মালামাল ছেড়ে দেই। এখানে সবাই কম দামে কিনতে পারেন।’
তবে এর উল্টো চিত্র শপিংমলগুলোতে। নগরীর চকবাজারের অভিজাত বিপণিবিতান জাহানারা মার্কেটের দোকান মালিক মিলন মল্লিক জাগো নিউজকে বলেন, ‘ঈদের এখনো ১৫ দিন বাকি রয়েছে। কিছু কিছু ক্রেতা দেখতে আসছেন। আবার কেউ কিনছেন। আজ মোটামুটি কিছু ক্রেতা এসেছে। ঈদ ঘনিয়ে এলে ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে আশা করি।’
Advertisement
নগরীর ইজি ফ্যাশন হাউজের বিক্রয়কর্মী ফারদিন বলেন, ‘আগে রোজার শুরু থেকেই ঈদের বেচাকেনা শুরু হয়ে যেতো। কিন্তু এ বছর এখনো তেমন একটা বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। রোজার শেষ সপ্তাহে আশানুরূপ বিক্রি হবে আশা রাখি।’
এসআর/এএসএম