প্রথম দিনে সার্ভার নিয়ে কোনো জটিলতা না হলেও দ্বিতীয় দিনে টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঈদযাত্রায় রেলের টিকিটপ্রত্যাশীরা। এতে টিকিট দেখা গেলেও তা কিনতে পারেননি অনেক যাত্রী।
Advertisement
শনিবার (৮ এপ্রিল) সকাল আটটা থেকে টিকিট বিক্রয় কার্যক্রম শুরু হলে সার্ভার জটিলতায় যাত্রীরা টিকিট কাটতে সমস্যায় পড়েন। এতে টিকিটপ্রত্যাশী যাত্রীরা পড়েছেন নতুন ভোগান্তিতে।
গতকাল শুক্রবারের মতো শনিবারও প্রচণ্ড চাপ ছিল টিকিট কাটার। সার্ভার জটিলতায় অনেকে ‘রেলসেবা’ অ্যাপে ঢুকতেই পারেননি। অনেকে অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে ঢুকতে পারলেও টিকিট বুকিং অপশনে ক্লিক করার পরে দীর্ঘক্ষণ আটকে থেকেছে। অনেকের পরবর্তী ধাপে সিলেক্ট হলেও টিকিট পারচেজ হয়নি। ওয়েবসাইটে টিকিট দেখা গেলেও লগইন করতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অনেকে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে পরিবার নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে মনোয়ারুল ইসলাম মনোয়ার ভোগান্তির কথা তুলে ধরে লিখেছেন, ‘আজ তো রেলওয়ে ওয়েবসাইটে লগইন করা যাচ্ছে না।’
Advertisement
শাহেদ নামের আরেকজন জানিয়েছেন, ‘আমারও একই অবস্থা। সকাল থেকে এখন (১১টা ১৫ মিনিট) পর্যন্ত লগইন করতে পারিনি।’
আরও পড়ুন: ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতেই শেষ
‘বাংলাদেশ রেলওয়ে হেল্পলাইন’ নামের আরেকটি গ্রুপে নিজেদের নানা ভোগান্তি তুলে ধরেছেন যাত্রীরা।
এমডি জাভেদ নামে একজন লিখেছেন, ‘গত দুই ঘণ্টা ধরে সার্ভারের এই অবস্থা। লগইন করা যাচ্ছে না। কিন্তু টিকিট সেল হয়ে যাচ্ছে।’
Advertisement
বখতিয়ার রহমান নামে অন্য একজন লিখেছেন, ‘কোনোভাবেই সার্ভারে ঢোকা গেলো না।’
হাসান শাফায়েত নামের একজন তার আইডিতে লিখেছেন, ‘রেলের অনলাইন টিকিট নিয়ে গতকাল যারা খুশিতে গদ গদ হলেন আজকে তাদের ফিলিংস কেমন...!?’
এছাড়া চাহিদা থাকার পরও উত্তরবঙ্গে স্পেশাল ট্রেন না দেওয়ার সমালোচনা করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে একদিন ছুটি বাড়ানোর দাবি
মাসুদ রানা নামে একজন লিখেছেন, ‘কী আশ্চর্য বিষয়! সিলেটে টিকিট নেওয়ার মতো মানুষ নাই। অথচ আমাদের উত্তরবঙ্গে ০৮ টার পরপরেই টিকিট খুঁজে পাওয়া যায় না। তাহলে সিলেটে এত ট্রেন দেওয়ার মানে কি! ঈদ উপলক্ষেও তো রংপুর বিভাগের ০২টা ট্রেন বেশি দিতে পারতো!’
কাজী শামীম হাসান নামে একজন ফেসবুকে এক পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন, ‘সকাল আটটার আগে থেকেই শোভন চেয়ার ছাড়া বাকি ক্লাসগুলোর সিট আগে থেকেই বুকিং করা ছিল। স্নিগ্ধা এবং এসি শ্রেণির সিট অনলাইনে শো করে নাই। সিল্কসিটিসহ একাধিক ট্রেনের ক্ষেত্রে এটা ঘটেছে। এইখানে কারসাজি হয়েছে।’
সার্ভার জটিলতায় উত্তরবঙ্গের একতা, দ্রুতযান, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস ও কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের টিকিট শেষ হতে সময় নেয় দুই ঘণ্টার বেশি।
ঢাকা থেকে রাজশাহীতে চলা চারটি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটও শেষ হয় সাড়ে নয়টার পর। যদিও গতকাল এসব ট্রেনে সকাল ৮টার কিছুক্ষণ পরেই কোনো টিকিট পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: আকাশপথে ঈদযাত্রা: অভ্যন্তরীণ রুটে ৭০ শতাংশ টিকিট শেষ, আগ্রহ কম আন্তর্জাতিকে
যশোর ও খুলনাগামী সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসে যশোরের মাত্র ৫টি সিট খালি থাকলে খুলনার প্রায় ২০০ সিট খালি রয়েছে। অন্যদিকে বেনাপোল রুটের বেনাপোল এক্সপ্রেসে খালি রয়েছে ২৪টি সিট। সিলেট রুটের কালনী, পারাবত, জয়ন্তিকা, উপবন এক্সপ্রেসের টিকিট এখনো পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম রুটের চট্টলা, সুবর্ণা, সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের টিকিটও পাওয়া যাচ্ছে।
তবে ময়মনসিংহ, জামালপুর রুটের চলাচলকারী অগ্নিবীণা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, জামালপুর ও তিস্তা এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের চাহিদাও ছিল বেশি। তবে এ রুটের যাত্রীদের টিকিট কাটতে ভোগান্তি পোহাতে হয়নি। ১০টা ৫০ মিনিটের সময় এ রুটের ৩ হাজার টিকেটের মাঝে মাত্র ১৫টি অবিক্রিত ছিল।
টিকিট বিক্রির দ্বিতীয় দিনে যাত্রীদের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চেয়ে সহজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ দেবনাথ-এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
আরএসএম/এমএইচআর/জেআইএম