অর্থনীতি

লেনদেন বেড়েছে ৪১ শতাংশ, তবু মিলছে না স্বস্তি

টানা তিন সপ্তাহ পতনের পর গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও তা বিনিয়োগকারীদের পুরোপুরি স্বস্তি দিতে পারছে না। সপ্তাহজুড়ে প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দৈনিক গড় লেনদেন ৪১ শতাংশের ওপরে বেড়ে গেছে। লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি বেড়েছে বাজার মূলধন। সেই সঙ্গে দাম কমার তুলনায় দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান।

Advertisement

তবে আগের মতোই তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সংকটে রয়েছে। ফলে দুইশ’র বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে টানা পতনের পর শেয়ারবাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেলেও তা বিনিয়োগকারীদের পুরোপুরি স্বস্তি দিতে পারছে না।

এমন ক্রেতা সংকটের মধ্যেই গত সপ্তাহে ডিএসইতে বাজার মূলধন প্রায় সাড়ে পাঁচশ কোটি টাকা বেড়েছে। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬২ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসই’র বাজার মূলধন বেড়েছে ৫৪৫ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।

আরও পড়ুন: সিমটেক্সে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

Advertisement

বাজার মূলধন বাড়ার সপ্তাহে ডিএসইতে প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫৭৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪০৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ১৬৮ কোটি ৮৭ লাখ টাকা বা ৪১ দশমিক ২১ শতাংশ।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮৯৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ১ হাজার ৬৩৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ২৫৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা বা ৭৬ দশমিক ৫১ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়।

এদিকে সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৭৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫৮টির। আর ২৪৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

এতে ডিএসই’র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসই-এক্স বেড়েছে ৭ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা দশমিক ১২ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৮ দশমিক ৫১ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ৪ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ এবং ৩৯ দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৬৪ শতাংশ।

Advertisement

আরও পড়ুন: শেয়ারপ্রতি এক টাকা ৭৫ পয়সা দেবে প্রিমিয়ার ব্যাংক

প্রধান মূল্যসূচক বাড়লেও বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক পতনের মধ্যেই রয়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ১০ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৮ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে দশমিক ৭৪ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ এবং ৮ দশমিক ২১ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৭ শতাংশ।

ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও টনা চার সপ্তাহ পতনের মধ্যে রয়েছে। গত সপ্তাহে এই সূচকটি কমেছে ১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা দশমিক ১১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৯ শতাংশ। তার আগের দুই সপ্তাহে কমে ৩ দশমিক ৬০ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ এবং ৫ দশমিক ৪৮ পয়েন্ট বা দশমিক ৪০ শতাংশ।

সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৮ কোটি ৩৯ লাখ ৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ১৭ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৭ কোটি ১২ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। ১৪৮ কোটি ৮৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে আমরা নেটওয়ার্ক।

এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, ইউনিক হোটেল, জেমিনি সি ফুড, এডিএন টেলিকম, অ্যাপেক্স ফুটওয়ার, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন এবং আরডি ফুড।

এমএএস/এমএইচআর/এমএস