জাতীয়

র‌্যাবকে শৃংখলায় আনার আহ্বান

র‌্যাবকে শৃংখলায় আনতে হবে বলে মত দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ও ইংরেজি দৈনিক অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, র‌্যাবের পুর্নগঠন করা দরকার। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেছেন, র‌্যাবের অনেক ভালো কাজ করেছে এটা ঠিক। কিন্তু কিছু সদস্য পুরো র‌্যাবকে কলঙ্কিত করেছে। বিডিআরের নাম বদলে যেমন বিজিবি রাখা হয়েছে, তেমনি র‍্যাবেরও নাম পরিবর্তন করা দরকার।শনিবার সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের চুরানব্বইতম পর্ব এ প্যানেল সদস্য হিসেবে তারা এসব কথা বলেছেন। ১০ ডিসেম্বর বিশ্ব মানবাধিকার দিবসকে সামনে রেখে আয়োজন করা হয় বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপের একটি বিশেষ পর্ব।  প্যানেল সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ও ইংরেজি দৈনিক অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, বেসরকারি সংগঠন উবিনীগের নির্বাহী পরিচালক ফরিদা আখতার এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ফাওজিয়া করিম ফিরোজ।অনুষ্ঠানের প্রথম প্রশ্ন ছিলো: সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো গুমের ঘটনায় অনেক ক্ষেত্রে তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়নি। গুমের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে কি রাষ্ট্রের এক ধরণের নিষ্ক্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে?উত্তরে ফরিদা আখতার বলেন, এসব ঘটনায় রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্টতা আছে। এ গুমের ঘটনা মানবাধিকার হরণ। ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, ঢালাওভাবে সবাই গুম হয়ে গেছে বলা যাবে না। মানবাধিকার রক্ষায় সরকার কখনো গুরুত্ব দিচ্ছে আবার কখনো দিচ্ছে না। আরো জোরালো অবস্থান নিতে হবে, কিন্তু সেটা হচ্ছে না।মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, সরকারি সাহায্য ছাড়া কোন গুম-খুন হতে পারে না।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সরকার নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করায়, তারা সরকারের এ দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে নিজেরা গুম খুন করছে।ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, গুম হচ্ছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। মানবাধিকার সংস্থাগুলো কোন তদন্তকারী দলের সাথে যুক্ত নয়। তারা যদি নিজেরা অনুসন্ধান করে স্পেসিফিকালি বলতে পারতো তাহলে আরো ভালো হতো। নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে কোন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কখনো এভাবে বিচার করা হয়নি।দ্বিতীয় প্রশ্ন: র‌্যাবের অনেক কর্মকাণ্ডকে মানবাধিকার বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত করে এই বাহিনীটির বিলুপ্তি দাবী করা হয়েছে দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে। একটি বাহিনী ভেঙ্গে দেয়ার দাবী কতটুকু যৌক্তিক বলে আপনারা মনে করেন?উত্তরে মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, র‍্যাব অনেক ভালো কাজ করেছে এটা ঠিক। কিন্তু কিছু সদস্য পুরো র‍্যাবকে কলঙ্কিত করেছে। বিডিআরের নাম বদলে যেমন বিজিবি রাখা হয়েছে, তেমনি র‍্যাবেরও নাম পরিবর্তন করা দরকার।ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, র‌্যাবের পুর্নগঠন করা দরকার।ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, সরকার পরিবর্তনের ফলে র‍্যাবে নতুন লোক আসায় এমন ঘটনা ঘটেছে। অপরাধীদের শাস্তি দিতে হবে এবং র‍্যাবে শৃঙ্খলা আনতে হবে।ফরিদা আখতার বলেন, যখন কোন বাহিনী শাষক শ্রেণীর পক্ষে খুনী বাহিনী হিসেবে পরিচিত হয় তখন তাকে বিলুপ্ত করার প্রয়োজন হয়।তৃতীয় প্রশ্ন: কোন সদস্য রাষ্ট্রে ব্যাপক মাত্রায় মানবাধিকারের লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটতে থাকলে জাতিসংঘের কি উচিত সেখানে হস্তক্ষেপ করা?উত্তরে মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, জাতিসংঘ চাইলে চাপ তৈরি করতে পারে।ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, জাতিসংঘ ডিক্টেশন নয়, অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের মতামত দিতে পারে। ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল বিশ্বের একটি দেশে জাতিসংঘ হস্তক্ষেপ করতে পারলে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে।ফরিদা আখতার বলেন, যেহেতু জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশনে বাংলাদেশের ভূমিকা আছে, সেহেতু বাংলাদেশে মানবাধিকার লংঘন করলে অবশ্যই অনুরোধ করতে পারে।চতুর্থ প্রশ্ন: বাংলাদেশের নাজুক মানবাধিকার পরিস্থিতির জন্য কি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কোন রকম দায়ভার রয়েছে?উত্তরে ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেন, কমিশনকে মর্যাদা না দিলে, আস্থা না রাখলে কিভাবে কাজ করবে। কিন্তু আমাদের দেশে হিউম্যান রাইটস কালচারটাই তো নেই। কমিশন ঢাকে ঢোল পিটিয়েছে আস্তে আস্তে হবে।ফরিদা আখতার বলেন, মানবাধিকার কমিশন হওয়ার পর আমরা যতখানি আশাবাদী হয়েছিলাম, ততটাই আশাহীন হয়েছি। মুহাম্মদ শাহজাহান ওমর বলেন, মানবাধিকার কমিশনের অর্থবল, জনবল, ক্ষমতা কোন কিছুই নেই।অনুষ্ঠানটির প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন।

Advertisement