দেশের অন্যতম পাইকারি কাপড়ের হাট নরসিংদীর শেখেরচর বাবুরহাট। কিন্তু সরু রাস্তাঘাট, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জরাজীর্ণ ব্রিজ ও ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়ায় হাটে যাতায়াত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নেই শৌচাগারের ব্যবস্থা।
Advertisement
বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা বিভিন্ন ভোগান্তিতে পড়তে হয় বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পাইকার ও হাটের ব্যবসায়ীদের। বিষয়গুলো সমাধানে প্রশাসন জানানো হলেও এখনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নরসিংদী সদর উপজেলার শীলমান্দি ইউনিয়নে অবস্থিত প্রাচ্যের ম্যানচেস্টার খ্যাত শেখেরচরে দেশের সর্ববৃহৎ পাইকারি কাপড়ের হাট এ বাবুরহাট। এখানে দেশের বিভিন্ন জেলার কাপড় ব্যবসায়ীদের যাতায়াত। কমবেশি প্রায় পাঁচ হাজার দোকান আছে হাটে। ৭৯ বছর ধরে চলা এ হাট প্রথমে ছিল এক দিনের। বর্তমানে সপ্তাহে বৃহস্পতি-শনিবার তিন দিন বসে। এ সময় কোটি টাকার লেনদেন হয় এখানে।
দেশের নিত্যব্যবহার্য কাপড়ের চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করছে বাবুরহাট। তাঁতসমৃদ্ধ নরসিংদী ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার উৎপাদিত কাপড় ও কাপড়জাত পণ্য বিক্রি হয় এখানে। রুমাল থেকে জামদানি পর্যন্ত সব কাপড় পাওয়া যায় এক হাটে। তাই দেশের প্রায় সব জেলার কাপড় ব্যবসায়ী এ হাটে আসেন।
তবে সরু রাস্তা, অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাইকারদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এর ওপর সামান্য বৃষ্টি হলেই বাজারে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। ফলে পাইকার ও ব্যবসায়ীদের নির্বিঘ্নে চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
Advertisement
অন্যদিকে বাজারে প্রবেশপথে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত দুটি বেইলি ব্রিজ আছে। এর একটি মাঝ অংশ ভেঙে গেছে। ফলে যান চলাচলসহ হাটে আসা ব্যবসায়ীদের চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে।
হাটে কাপড় কিনতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে আসা সিরাজউদ্দীন বলেন, ‘কয়েকযুগ ধরে এ হাটে কাপড় কিনতে আসি। কিন্তু নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এখানে রাস্তাঘাট খুবই সরু। ফলে কাপড় নিয়ে বাজার থেকে বের হওয়াটা অনেক কষ্টকর। এছাড়া বর্তমানে হাটে কোনো টয়লেটের ব্যবস্থা নেই যার কারণে অনেকটাই বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।’
বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, সারাবছর আমাদের বেচাকেনা যেমনই হোক না কেন রমজান মাসে দ্বিগুণ বিক্রি হয়। কিন্তু বর্তমানে বাজারে ঢোকার রাস্তার ব্রিজের একাংশ ভেঙে পড়েছে। ফলে বাজারে ক্রেতা আসতে ও চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। এতে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
শেখেরচর বাজার (বাবুরহাট) বণিক সমিতির সভাপতি ও শীলমান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ জাগো নিউজকে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদ পাড়ি দিয়ে বাজারে ঢোকার জন্য দুটি ব্রিজ আছে। সেগুলোর অবস্থা জরাজীর্ণ। এরই মধ্যে একটি ভেঙে পড়েছে। এখন ব্রিজ ধসে পড়লে নদী পার হওয়া কঠিন। তখন বাজার রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই বিষয়টি নিয়ে আমি নির্বাহী প্রকৌশলীসহ প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছি।
Advertisement
নরসিংদী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বিজয় ইন্দ্র শঙ্কর চক্রবর্তী বলেন, জরাজীর্ণ যে সব ছোট ব্রিজ আছে সেগুলো অপসারণ করে বড় ব্রিজে রূপান্তরের নির্দেশনা আছে। সে অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অধীনেই ব্রিজ সংস্কার ও নির্মাণ করা হবে।
এসজে/এমএস