আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের দীর্ঘতম যুদ্ধের সমাপ্তি টেনে দীর্ঘ ২০ বছর পর সৈন্য প্রত্যাহারের সময় যে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার জন্য সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে দায়ী করেছে বাইডেন প্রশাসন। এ বিষয়ে ১২ পৃষ্ঠার একটি প্রতিবেদন সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছে ওয়াশিংটন। এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই ভবিষ্যতে এ ধরনের ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্যপটের’ জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
Advertisement
বলা হচ্ছে, ট্রাম্প প্রশাসন সৈন্য প্রত্যাহারের বিষয়ে তালেবানের সঙ্গে যে সমঝোতা করেছিল, বাইডেন সেই প্রতিশ্রুতিকে সম্মান করেছেন। তবে বৃহস্পতিবারের (৬ এপ্রিল) পর্যালোচনা প্রতিবেদনে চুক্তিটি বাস্তবায়নে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবের জন্য সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের কড়া সমালোচনা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন>> তালেবানের দখলে আফগানিস্তান : বাইডেনের পদত্যাগ দাবি ট্রাম্পের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপায়গুলো তার পূর্বসূরির তৈরি করা শর্তের কারণে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসন থেকে বাইডেন প্রশাসনে স্থানান্তরের সময় আফগানিস্তান থেকে কীভাবে সৈন্য প্রত্যাহার করা বা মার্কিন ও আফগান মিত্রদের সরিয়ে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো পরিকল্পনা দিয়ে যায়নি বিদায়ী প্রশাসন।
Advertisement
This is like a horror film #Kabul #Afghanistan pic.twitter.com/lhPLgFBrHa
— Yalda Hakim (@BBCYaldaHakim) August 16, 2021‘প্রকৃতপক্ষে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যখন অফিসে আসেন, তখন চুক্তি মোতাবেক সব সৈন্য প্রত্যাহারে তিন মাসের মতো সময় বাকি থাকলেও এ বিষয়ে কোনো পরিকল্পনাই ছিল না।
আরও পড়ুন>> কাবুল বিমানবন্দরের ‘বিশৃঙ্খলায়’ ৭ জনের মৃত্যু, বলছে যুক্তরাষ্ট্র
অরাজকতায় সৈন্য প্রত্যাহারমার্কিন সৈন্য প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যে ২০২১ সালের আগস্টে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত আফগান সরকারের পতন ঘটে এবং তৎকালীন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এর পরপরই কাবুলের ক্ষমতা দখল করে সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান।
Advertisement
আরও পড়ুন>> বাইডেন-গানির ফোনালাপ ফাঁস, আলোচনায় ‘চমকপ্রদ তথ্য’
প্রত্যাহার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার আগপর্যন্ত কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ ছিল মার্কিন সৈন্যদের হাতে। ওই সময় দেশ ছেড়ে পালাতে বেপরোয়া হয়ে ওঠা অসংখ্য আফগান নাগরিক বিমানবন্দরটিতে ভিড় করেন। এই ঘটনার মধ্যে আইএসের আত্মঘাতী বোমা হামলায় ১৩ মার্কিন সৈন্যসহ নিহত হন অন্তত ১৭৫ জন।
যদিও বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে সৈন্য প্রত্যাহারের সময় বাইডেন প্রশাসনের ভুলগুলো স্পষ্টভাবে স্বীকার করা হয়নি। তবে এটি বলেছে, স্থানান্তর এবং সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য আগাম প্রস্তুতি নিতে শিখেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন>> আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের অর্জন ‘জিরো’: পুতিন
তবে এই প্রতিবেদনে ওঠা অভিযোগগুলোকে অস্বীকার করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি বলেছেন, আমি এই বিপর্যয়টি অন্য সবার মতোই উন্মোচিত হতে দেখেছি। এর জন্য বাইডেনই দায়ী, আর কেউ নয়!
সূত্র: আল-জাজিরাকেএএ/