জাতীয়

যাত্রার দিন কাউন্টারে মিলবে ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিট

ঈদযাত্রায় রেলের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে আজ (৭ এপ্রিল)। শুধু অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে এই টিকিট। ঈদ এলেই যেখানে প্রতিবছর অগ্রিম টিকিট পেতে কমলাপুর স্টেশনে দীর্ঘ সারি আর সীমাহীন ভোগান্তি থাকতো, সে দৃশ্য এবার আর থাকছে না। তবে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

Advertisement

রেলওয়ে জানিয়েছে, যথাযথ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধিত ব্যক্তিরাই এবার কিনতে পারবেন টিকিট।

শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সকাল ৮টা থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এ নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপ-প্রধান তথ্য অফিসার শরিফুল আলম জানান, ঈদযাত্রায় রেলওয়ের অগ্রিম টিকিট আজ (৭ এপ্রিল) থেকে বিক্রি করা হচ্ছে। আজ ১৭ এপ্রিলের অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে ৮ এপ্রিল ১৮ এপ্রিলের, ৯ এপ্রিল ১৯ এপ্রিলের, ১০ এপ্রিল ২০ এপ্রিলের এবং ১১ এপ্রিল বিক্রয় হবে ২১ এপ্রিলের টিকেট।

আরও পড়ুন: ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হতেই শেষ

Advertisement

ঈদ উপলক্ষে আন্তঃদেশীয় মিতালী এক্সপ্রেস ট্রেন ১৮ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত এবং মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন ২০ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে আন্তঃদেশীয় বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেন যথারীতি চলাচল করবে।

যেভাবে কাটতে হবে টিকিট

আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট অনলাইন বা মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কেনা যাবে। ১৭ থেকে ৩০ এপ্রিলের শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। তবে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের সুবিধার্থে শোভন শ্রেণির (নন এসি) মোট আসনের ২৫ শতাংশ আসনবিহীন টিকিট (স্ট্যান্ডিং) যাত্রার দিন কাউন্টার থেকে বিক্রি করা হবে।

আরও পড়ুন: টিকিট কালোবাজারি পুরোপুরি বন্ধ হবে কি না জানি না: রেলমন্ত্রী

Advertisement

কীভাবে যাত্রীরা অনলাইনে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন, সে বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে গত ২৫ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঈদুল ফিতরে আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট (১৭-৩০ এপ্রিল) শুধু অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয় করা যাবে। এছাড়া বর্তমানে জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাইয়ের মাধ্যমে রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকেটিং ব্যবস্থা ও অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়কৃত টিকিট রিফান্ডের (ফেরত) ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

যাত্রীদের প্রতি রেলওয়ের জানানো নির্দেশনা ও শর্তাবলি হচ্ছে-

>> আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিটপ্রত্যাশীরা জাতীয় পরিচয়পত্র/পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন করবেন।

>> নিবন্ধনের জন্য মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে BR <space> NID নম্বর <space> জন্ম তারিখ (জন্ম তারিখের ফরম্যাট- জন্ম সাল/মাস/দিন) লিখে ২৬৯৬৯ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। ফিরতি এসএমএসের মাধ্যমে নিবন্ধন সফল বা ব্যর্থ হয়েছে কি না, তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

>> ওয়েবসাইট অথবা ‘Rail Sheba’ app-এ সঠিক NID নম্বর ও জন্ম তারিখ verify পূর্বক অন্যান্য তথ্য দেওয়া সাপেক্ষে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন করতে হবে।

>> বিদেশি নাগরিকরা পাসপোর্ট নম্বর প্রদান ও পাসপোর্টের ছবি আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।

>> ১২-১৮ বছর বয়সী যাত্রীরা জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান ও জন্ম নিবন্ধন সনদ আপলোড করার মাধ্যমে নিবন্ধন সম্পন্ন করবেন।

>> সফলভাবে এনআইডি/পাসপোর্ট/জন্ম নিবন্ধন যাচাইপূর্বক নিবন্ধন ব্যতীত কোনো যাত্রী আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ক্রয় করতে পারবেন না। স্ট্যান্ডিং যাত্রীদের ক্ষেত্রেও রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।

>> একজন যাত্রী সর্বোচ্চ চারটি আসনের টিকিট কিনতে পারবেন। তবে অনলাইনে টিকিট কেনার সময় সহযাত্রীদের নাম ও জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন নম্বর লিপিবদ্ধ করতে হবে।

>> ভ্রমণকালে যাত্রীকে অবশ্যই নিজস্ব এনআইডি বা জন্মনিবন্ধন সনদের ফটোকপি/সফটকপি অথবা পাসপোর্ট/ছবিসংবলিত আইডি কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে। টিকিটের ওপরে মুদ্রিত যাত্রীর নাম ও এনআইডি নম্বর যাত্রী কর্তৃক প্রদর্শিত পরিচয়পত্রের সঙ্গে না মিললে যাত্রীকে বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে অভিযুক্ত করা হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রথমবারের মতো এবার ঈদে শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি প্রসঙ্গে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেছেন, ঈদের সময় কমলাপুরের যে পরিবেশ তৈরি হয়, এটা রেলের জন্য খুবই বিব্রতকর। মানুষ দুই দিন কমলাপুরে থেকেও টিকিট পায় না। সব মানুষ টিকিট পাবে না। ঈদের সময় আমাদের সব অর্জন নষ্ট হয়ে যায়। তাই অনলাইনে শতভাগ টিকিট দেওয়া হবে। কমলাপুরে গিয়ে টিকিটের জন্য যাত্রীদের যেন ঘুরতে না হয় এবং তারা যেন বাসায় বসে টিকিট কাটতে পারে সেজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবার যদি কোনো ভুল-ত্রুটি হয় তবে সেটি আগামী ঈদে সংশোধন করা হবে।

আরএসএম/এমএইচআর/এমএস