ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা এখন সব ঘরে ঘরেই। ‘আন্তর্জাতিক ডায়াবিটিস ফেডারেশন’এর হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে ৫৩৭ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছেন।
Advertisement
এই সংখ্যা এরই মধ্যেই উদ্বেগজনক অবস্থায় আছে। ধারণা করা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪৩ লাখ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন।
আরও পড়ুন: স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম ২ কারণ জানালো গবেষণা
দীর্ঘমেয়াদী এই রোগ একবার শরীরে বাসা বাঁধলে তা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ করা মুশকিল হয়ে ওঠে। রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে গেলে বা ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে একাধিক স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়। এমনকি বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকিও।
Advertisement
উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরলের মতো অসুখ স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায়। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা জানাচ্ছে, ডায়াবেটিস রোগীদেরও স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তাই রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে স্ট্রোক নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন: স্ট্রোকের রোগীকে বাঁচাতে যে ৬ লক্ষণ জানা জরুরি
রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি থাকলে রক্তনালিগুলোতে চর্বি জমে। দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিসে ভোগার ফলে রক্তনালিতে এই চর্বি জমাট বাঁধতে শুরু করে। এই জমাট বাঁধা চর্বি রক্তনালিকে সঙ্কুচিত করে তোলে। ফলে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় ধীরে ধীরে।
মূলত দু’ধরনের স্ট্রোক হয়। ইস্কেমিক ও হেমরেজিক। আর এই দু’ধরনের স্ট্রোকের নেপথ্যে আছে শরীরে শর্করার মাত্রার ওঠানামা। সমীক্ষা অনুসারে, প্রতি বছর ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে ৩ শতাংশ।
Advertisement
আরও পড়ুন: ঘুমের যে ব্যাধিতে হঠাৎ ব্রেইন স্ট্রোক হতে পারে
ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি তিন গুণ বেশি। সাধারণত রক্তে শর্করার পরিমাণ ১১.১ মিলিলিটারের চেয়ে বেশি হলে ‘হাইপারগ্লাইসেমিয়া’ অবস্থা তৈরি হয়।
আর তখনই বাড়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি। চিকিৎসকদের মতে, স্ট্রোকের মতো আকস্মিক বিপদ এড়াতে যেভাবেই হোক ডায়াবেটিস বশে রাখা জরুরি।
আরও পড়ুন: প্রচণ্ড গরমে হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচাবে ৫ পানীয়
কোন কোন লক্ষণে টের পাবেন?
এই স্ট্রোক হওয়ার আগে হাত ও পা দুর্বল-শিথিল হয়ে যেতে পারে। স্ট্রোকের অন্যান্য সমস্যা হঠাৎ দেখা দেয়। তবে এই উপসর্গটি দেখা দেয় বাকি সব লক্ষণ জানান দেওয়ার আগেই।
এক্ষেত্রে হাত-পা নাড়াতে সমস্যা হয়। প্যারালাইসিসের শুরু হয় এ সময় থেকে। কোনো কাজ করতে গেলেই হাত-পা বাঁধা তৈরি করতে পারে। চেষ্টা করা স্বত্ত্বেও প্রয়োজনমাফিক হাত-পা নড়াচড়া করা যায় না।
আরও পড়ুন: স্ট্রোক প্রতিরোধে যা করবেন, যা করবেন না
এর পেছনের মূল কারণ হলো, আমাদের সব ধরনের নড়াচড়ার সংকেত আসে মস্তিষ্ক থেকে। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল কমতে শুরু করলে তা পেশিতেও প্রভাব ফেলে।
এর ফলে পেশী শক্ত হয়ে যেতে শুরু করে। তাই হাত-পা নাড়াতেও তখন সমস্যা হয়। কখনো যদি এমন সমস্যা বোধ করেন তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের শরনাপন্ন হন। না হলেই ঘটতে পারে বিপদ।
সূত্র: বিবিসি/টাইমস অব ইন্ডিয়া/ওয়েব এমডি
/জেআইএম