২০১৯ সালের ২ এপ্রিল জাগো নিউজে প্রকাশিত একটি সংবাদের কাটিং দেখিয়ে বঙ্গবাজারের আগুনের বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন। ওই প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বঙ্গবাজার মার্কেটকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা’ করা হয়েছিল। এরপর সংশ্লিষ্টদের ১০ বার নোটিশ দেওয়া হয়। কিন্তু তারা কথা শোনেননি।
Advertisement
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) বঙ্গবাজারে লাগা ভয়াবহ আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ঘটনাস্থলে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জাগো নিউজের ওই প্রতিবেদনটি তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গবাজার মার্কেটকে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, ২০১৯ সালে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে বঙ্গমার্কেটটি ‘অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ’ ঘোষণা করা হয়েছিল। এছাড়া আমরা ব্যানার টানিয়ে ভবনটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ জানিয়ে ১০ বার নোটিশ দিয়েছি। আমাদের যা যা করণীয় ছিল সব করেছি। তারপরও এখানে ব্যবসা চলেছে।
Advertisement
ফায়ার সার্ভিস দশবার নোটিশ দিয়েছে, এরপর বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ছিল সিটি করপোরেশন বা রাজউকের। তাদের অবহেলার কারণেই কি আগুনের ঘটনা ঘটেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ফায়ারের ডিজি বলেন, এ প্রশ্নের উত্তর আমার কাছে নেই। এই প্রশ্নটা যে যে সংস্থার নাম আপনারা উচ্চারণ করলেন, তাদের জিজ্ঞাসা করাটা উত্তম।
আরও পড়ুন: বারবার আগুনের কারণ অনুসন্ধান ও সমাধানের নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের অফিসার এবং সব পদবির কর্মকর্তা-কর্মচারী মানুষের জন্য জীবন দেন। গত এক বছরে ১৩ জন ফায়ার ফাইটার শহীদ হয়েছেন। তারা ‘অগ্নিবীর’ খেতাব পেয়েছেন। ২৯ জন ফায়ার ফাইটার আহত হয়েছেন। আজও আমাদের আটজন সদস্য আহত হয়েছেন। কেন বা কারা ফায়ার সার্ভিসের ওপর আঘাত হানলো বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।
ফায়ার সার্ভিস সব দুর্যোগে সবার আগে মানুষের পাশে থাকে জানিয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, কেন আমাদের সদস্যদের ওপর আক্রমণ? কেন আঘাত? এই আগুনের সুষ্ঠু তদন্ত আমরা করবো এবং আপনাদের জানাবো।
Advertisement
আরও পড়ুন: জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মালামাল রক্ষা হলো না
নিজের মোবাইলে ধারণ করা একটি ভিডিও দেখিয়ে সাংবাদিকদের ফায়ার সার্ভিসের ডিজি বলেন, এখানকার উৎসুক জনতার ভিড়ে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। এখানে এত পারিমাণ ভিড় ছিল যে কোনো জায়গায় গিয়ে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন সে জায়গাটিও ছিল না। দ্বিতীয় সমস্যাটি ছিল পানির স্বল্পতা আর তৃতীয়ত বাতাস। বাতাসের কারণে এক জায়গার আগুন অন্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়।
আরও পড়ুন: বেঁচে যাওয়া শেষ সম্বলটুকু উদ্ধারের চেষ্টায় ব্যবসায়ীরা
আগুন নিয়ন্ত্রণ কাজে অংশ নেওয়া ফায়ার সার্ভিসের আহত আট সদস্যের মধ্যে দুজনের অবস্থা ‘আশঙ্কাজনক’ জানিয়ে ফায়ারের ডিজি বলেন, তারা ক্রিটিক্যাল অবস্থায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন।
ফায়ার সার্ভিস সদরদপ্তরে হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক বলেন, আগুন লাগা মার্কেটটি ও ফায়ার সার্ভিস কার্যালয় রাস্তার এপাশ-ওপাশ। আমি ফায়ার সার্ভিসের ডিজি হিসেবে প্রশ্ন রাখতে চাই, আমাদের ওপর কেন হামলা? কারা করেছে এ হামলা?
এ হামলার ঘটনা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
টিটি/এমকেআর/এএসএম