অন্য অনেক দেশের মতই বাংলাদেশের প্রথম পছন্দের খেলা ছিল ফুটবল। এখনও গ্রাম-গঞ্জে বড় কোন ফুটবল ম্যাচ আয়োজন হলে হাজার হাজার মানুষ মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে যায় খেলা দেখতে। ফুটবলের প্রতি মানুষের ভালবাসা যেন আদি এবং অকৃত্রিম। বিশ্বকাপ ফুটবল এলেই দেখা যায়, এ দেশের প্রায় প্রতিটি বাড়ির ছাদে উড়বে ব্রাজিল না হয় আর্জেন্টিনা, জার্মানি কিংবা স্পেনের পতাকা। দেখে মনে হবে যেন, প্রতিটি বাড়িতেই একএকটি দেশের উপনিবেশ। সত্যিই এক মাসের জন্য, বাংলাদেশের ঘরে ঘরে যেন উপনিবেশ কায়েম করে ব্রাজিলের সুপার পাওয়াররা। ফুটবলের এমন জনপ্রিয়তাকে ছাপিয়ে বাংলাদেশে ক্রিকেটই হয়ে উঠেছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। সেই ৮০’র দশকেও ক্রিকেটের সঙ্গে পরিচিত ছিল না খুব বেশি মানুষ। ৯০-এর দশক থেকে পরিচিত হয়ে উঠতে উঠতে ১৯৯৭ সালে এসে প্রবল পরাক্রমে বাড়তে থাকে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা। কিভাবে, কখন থেকে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বাড়তে শুরু করে- সেটাই তুলে ধরা হলো জাগো নিউজের পাঠকদের সামনে-প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে আইসিসি ট্রফিতে। একদিনের ম্যাচে বাংলাদেশের বিশ্ব ক্রিকেটে অভিষেক এশিয়া কাপ দিয়েই। তখন এশিয়া কাপে একদিনের ম্যাচ হতো। সেটা ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ এবং প্রথম ম্যাচটাই বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছিল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানকে হারিয়ে এবার ফাইনালে পৌঁছে গিয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগার্সরা। দশ নম্বর দেশ হিসেবে ২০০০ সালে প্রথম টেস্ট ক্রিকেট খেলার ছাড়পত্র পায় বাংলাদেশ। সেটা হয়েছিল ঢাকায় ভারতের বিরুদ্ধে। আবার সেই ভারতের সামনে বাংলাদেশ। এবার এশিয়া কাপ ফাইনাল।এত বছরে অনেক প্রতিবন্ধকতাকে কাটিয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। অতীতে যে সাফল্যের মুখ দেখেনি তা নয়; কিন্তু সেটা ধারাবাহিক ছিল না। একটি ম্যাচ জয় তো চারটিতে হার। তবে এ বছর এশিয়া কাপের শুরু থেকেই নিজেদের প্রতি মুহূর্তে চিনিয়েছেন মাশরাফি, সাকিবরা।একটা সময় পর্যন্ত বাংলাদেশে সব খেলার সেরা বাঙালির ভুমি ফুটবলই ছিল। কিন্তু একটু একটু করে বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানে মানুষ ক্রিকেটপ্রেমী হতে শুরু করে। ১৯৯০ থেকে বাংলাদেশ ক্রীড়াক্ষেত্রের দখল নেয় ক্রিকেট। ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ায় প্রথম আইসিসি ট্রফি জিতে ইংল্যান্ডে ১৯৯৯ বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করে নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম। এটা ছিল বাংলাদেশ ক্রিকেটের সব থেকে বড় সাফল্য এবং প্রথম বিশ্বকাপেই পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারিয়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। হারিয়েছিল স্কটল্যান্ডকেও। তখনও আইসিসির সম্পূর্ণ সদস্য হতে পারেনি তারা। তখন অ্যাসোসিয়েট মেম্বার হিসেবেই বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ। ২০০০-এর ২৬ জুন বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ সদস্যপদ দেয় আইসিসি।খারাপ সময়ও কম যায়নি। পর পর সব থেকে বেশি টেস্ট ম্যাচ হারের রেকর্ড রয়েছে বাংলাদেশেরই। এর সঙ্গে বিশ্বকাপে ওই দুটো ম্যাচ জয়ের পর আবার বাংলাদেশ একদিনের ম্যাচে জয়ে ফেরে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে। বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় ২০০৯ এ ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। ৩১২টি একদিনের ম্যাচ খেলে ৯৮টি জিতেছে বাংলাদেশ। টি২০ খেলেছে ৫৪টি। জয় মাত্র ১৮টিতে।র্যাংকিংয়ের দিক থেকেও সেরা ফর্মে রয়েছে বাংলাদেশ। টেস্টে ৯, ওয়ানডে তে ৭, টি২০-তে এই মুহূর্তে রয়েছে ১০ নম্বর স্থানে। এশিয়া কাপ শেষে টি২০ র্যাংকিংয়ে যে অনেকটাই উত্থান হবে সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়।আইএইচএস/এবিএস
Advertisement