নিয়ামুর রশিদ শিহাব
Advertisement
এক সময় নিত্যদিনের খবরাখবরের একমাত্র মাধ্যম ছিল বেতার (রেডিও)। সেই বেতার আজ যেন বিলুপ্তপ্রায়। সর্বত্র বিজ্ঞানের অত্যাধুনিক আবিষ্কারগুলো পৌঁছে যাওয়ায় বেতারের যেন কদর নেই।
বিভিন্ন গ্রাম ঘুরেও বেতারের দেখা তেমন মেলে না এখন। কিছু কিছু ঘরে বেতার থাকলেও তা আজ শিশুদের খেলার সামগ্রী হয়ে গেছে। অনেকে আবার নিজ যত্নে সাজিয়ে রেখেছেন শোকেসে।
গ্রামের প্রবীণদের কাছ থেকে জানা গেছে, আগেরকার দিনে নানা অনুষ্ঠান, বিনোদন ও খেলার বিবরণী ছাড়াও আবহাওয়া, রাজনৈতিক খবর শোনার একমাত্র মাধ্যম ছিল বেতার।
Advertisement
আরও পড়ুন: রাজকীয় খেলা ‘ফেন্সিং’
বিশেষ করে উপকূলবাসীর আবহাওয়ার খবর জানার প্রধান যন্ত্র ছিল বেতার। এছাড়া জেলে সম্প্রদায়, যারা গভীর সাগরে মাছ ধরতে যেতেন; তাদের আবহাওয়ার খবরের জন্য ব্যবহার করতেন বেতার।
বেতারের প্রচলন শুরু হওয়ার পর প্রায় ঘরে ঘরে জায়গা করে নেয় ‘ট্যানডেস্টার’ খ্যাত বেতার। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দেওয়া হতো এটি। তরুণ-তরুণী থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের কাছে বেতার বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।
তরুণ-তরুণীরা বেশিরভাগ সময় নজরুল-রবীন্দ্রসংগীত, গানের ডালি, দুর্বার, সুখী সংসার, দর্পণ, বাংলা ছায়াছবির গান, ম্যাগাজিন ও নাটক শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতেন।
Advertisement
আরও পড়ুন: পুরান ঢাকায় সাকরাইনের আমেজ
আধুনিক যুগে মোবাইল ফোন বা স্মার্ট ডিভাইস, টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের কারণে বেতার এখন বিলুপ্তপ্রায়। বেতারের জনপ্রিয়তা যেন হারিয়ে গেছে। আগের মতো কেউ আর বেতার শোনেন না। গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাওয়ায় বেতার খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
দিন দিন হারিয়ে যাওয়া বেতার আগামী প্রজন্মের কাছে শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে। ভবিষ্যতে বইয়ের পাতায় স্থান পেলেও বাস্তবে বেতার দেখতে যেতে হতে পারে বিভিন্ন জাদুঘরে।
গলাচিপার রতনদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিক মোসা. লুৎফুন নাহার বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে বিভিন্ন বিষয়ে যা কিছু জানা, সবই প্রায় এই রেডিওর কারণে। ঘরে টেলিভিশন থাকলেও বেতারটি সংগ্রহ করি। বাজারে এখন বেতার পাওয়া কঠিন। শত দোকান খুঁজলেও পাওয়া যায় না। তবুও সুখে-দুঃখে রেডিও আজও আমার সঙ্গী।’
লেখক: শিক্ষার্থী, বরিশাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট।
এসইউ/এএসএম