প্রেমে পড়লে মানুষের মন সব সময় ফুরফুরে থাকে। আর ঠিক উল্টোটা ঘটে যখন মন ভাঙে। ব্রেকআপের পর স্বভাবতই নারী-পুরুষ উভয়ের মনেই নেতিবাচক চিন্তা ভর করে, খিদে কমে যায়, ঘুমে অনিয়ম ঘটে।
Advertisement
নিজেকে সামলে নিলেও ফিরে ফিরে আসে পুরনো স্মৃতি। তবুও মন ভাঙার কষ্ট ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। তবে ব্রেকআপ কিংবা কোনো বিষয় নিয়ে মন খারাপ শুধু যে আপনাকে মানসিকভাবে ভাবিয়ে তোলে, তা নয়। মন ভাঙলে শারীরিক ভাবেও তার কষ্ট প্রকাশ পায়।
আরও পড়ুন: সম্পর্কে যেসব লক্ষণ দেখা দিলে ব্রেকআপ করা জরুরি
মন ভাঙলে কেন এত কষ্ট হয়, তার একটি ফিজিওলজিক্যাল ব্যাখ্যা দিয়েছে লাইভ সায়েন্স। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, মন ভাঙলে তার কষ্ট শারীরিকভাবেও অনুভব করা যায়।
Advertisement
এর পেছনে মূলত দায়ী হলো আমাদের হরমোন। যখন আপনি প্রেমে পড়েন, তখন শরীরে ‘ফিল-গুড’ হরমোন উৎপন্ন হয়। তখন ‘কাডল’ হরমোন অক্সিটোসিন ও ‘ফিল-গুড’ হরমোন ডোপামাইন উৎপন্ন হয় ও মন ফুরফুরে থাকে।
আরও পড়ুন: ব্রেকআপের আগে নিজেকে ৫ প্রশ্ন করুন
একইভাবে প্রেমে বিচ্ছেদ ঘটলে শরীরে অক্সিটোসিন ও ডোপামাইন হরমোনের মাত্রা কমে যায়। উল্টে বেড়ে যায় ‘স্ট্রেস’ হরমোন কর্টিসলের মাত্রা। এই কর্টিসল হরমোনের মাত্রা বাড়লে রক্তচাপও বাড়ে, ওজন বাড়তে থাকে ও বিষণ্নতা বাড়ে।
মন ভাঙার সঙ্গে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার জেরে শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন দেখা দেয়। এই অবস্থাকে আপনি মন খারাপ বললেও, চিকিৎসা ভাষায় একে বলে তাকাতুবো কার্ডিওমায়োপ্যাথি বা ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম।
Advertisement
আরও পড়ুন: পুরোনো প্রেম ভুলতে পারছেন না? জেনে নিন করণীয়
চিকিৎসকদের মতে, এটি হার্টের এক ধরনের অবস্থা যা স্বল্পমেয়াদী, যা তীব্র মানসিক বা শারীরিক চাপের কারণে শুরু হয়। এর জেরে হৃৎপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার পদ্ধতিতে অস্থায়ী পরিবর্তন ঘটে। কখনো কখনৈা হৃদপিণ্ডকে রক্ত পাম্প করতে আরও কসরত করতে হয়। এ কারণে বুকে ব্যথাও অনুভব করেন অনেকেই।
ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোম কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে কারও দিন, কারও আবার মাস কিংবা বছরও লেগে যেতে পারে। যদিও খুব কম ঘটনা আছে, তবে মন ভাঙার কারণে ব্রোকেন হার্ট সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রেমে প্রতারিত হলে যা করবেন
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রোগ সবচেয়ে বেশি নারীদের মধ্যে দেখা যায়। হয়তো অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হওয়ার কারণেই এমনটা ঘটে। তবে গবেষণা বলছে, ব্রেকআপে নারী চেয়ে পুরুষের বেশি কষ্ট হয়।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স
জেএমএস/এমএস