জাতীয়

মঙ্গল শোভাযাত্রা ঘিরে চারুকলার শিল্পীদের ব্যস্ততা

আসছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩০ উদযাপন ও মঙ্গল শোভাযাত্রা ঘিরে দিনরাত এক করে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলে তাদের এ কর্মযজ্ঞ। এই উৎসবের আয়োজন পুরোটাই তারা নিজের চেষ্টাই করে থাকে, অনুদান বা কারও সহযোগিতা নিয়ে নয়। এভাবেই তারা বাংলাদেশের সার্বজনীন এ উৎসবের আয়োজন করে চলছে বছরের পর বছর।

Advertisement

এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রা করোনা পূর্ববর্তী সময়ের মতোই করে উদযাপনের আয়োজন করছে চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীরা। চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে চোখে পড়ছে বিভিন্ন রকমের লোকজ মুখোশ সাজানো রয়েছে থরে থরে। এসবের মধ্যে রয়েছে বাঘ, সিংহ, হাতি, পেঁচা, ময়ূরসহ বিভিন্ন প্রাণীর অবয়ব। গ্যালারির সামনের অংশে বিভিন্ন লোকজ জিনিসপত্র বিক্রির জন্য সাজানো আছে। এসবের মধ্যে রয়েছে হাতপাখা, বাঘ, পেঁচা, ছোট পাখি, ফুল, পাতা, চশমা, সরা, পেইন্টিংসহ আরও অনেক কিছু।

মঙ্গল শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্য ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’। চারুকলার প্রাচ্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনিয়া তাবাসসুম গোধূলি বলেন, ‘ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের যে সময়টা পার করছি সেটা উতরিয়ে পৃথিবীতে যেন শান্তির বারি নেমে আসে সেটার জন্য এবারের প্রতিপাদ্যটি রাখা হয়েছে। করোনা মহামারির পরে এরকম যুদ্ধ কখনও কাম্য ছিল না। যেহেতু এটা হয়েছে সেটি থেকে আমরা যেন পরিত্রাণ পাই।’

মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, ‘রমজানের মধ্যে বৈশাখ হওয়ায় এবার জমকালো আয়োজন একটু কম। রমজান না হলে জমজমাট থাকতো এবারের আয়োজন। রোজার মাসে মানুষের একটু ব্যস্ততা থাকে সব মিলিয়ে লোক সমাগম অন্যবারের চেয়ে একটু কম হবে। গতবারও রোজা ছিল। এবারও রোজা। তবে গতবারের তুলনায় এবারের সাড়াটা একটু ভালো।’

Advertisement

মঙ্গলশোভাযাত্রার আয়োজনের অর্থায়ন নিয়ে এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, এ উৎসব আয়োজনের জন্য বাইরে থেকে কোনো অর্থ নেওয়া হয় না। চারুকলার শিক্ষার্থীরা মিলে সারাবছর যে কাজগুলো করে সেগুলো বিক্রির অর্থ দিয়ে এটার আয়োজন করা হয়। এসময়টাতে শিল্পীদের যে খাওয়া-দাওয়া আনুষাঙ্গিক খরচ তাও তাদরে নিজস্ব অর্থায়নে। শিক্ষকরাও কাজ করেন এতে। শিক্ষকদেরও একটা ওয়ার্কশপ হয়। এতে শিল্পীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। তারাও কোনো পারিশ্রমিক নেন না।

চারুকলা অনুষদের ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী সামিউল আইরিন বলেন, ‘আমাদের কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। ১৯ মার্চ আমাদের কাজের উদ্বোধন হয়েছে। ১৩ এপ্রিলের মধ্যে এসব কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।’

চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী শিমুল কুম্ভকার বলেন, ‘এবারের শোভাযাত্রায় আমাদের নতুন কয়েকটি মোটিভ যুক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে আমাদের হারিয়ে যাওয়া নীলগাই। এটিকে মাঝে মধ্যে আমাদের দেশে লোকালয়ে ছুটে আসতে দেখতে পাই। কিন্তু এগুলো মানুষ না চেনায় তাদের ওপর হামলা করে। আমরা আমাদের এ কাজের মাধ্যমে আমাদের জীববৈচিত্র্যের অংশে থাকা প্রাণীটিকে আবারও ফিরিয়ে আনতে চাই। বাঘ, ময়ূরও রয়েছে ঐতিহ্য অনুযায়ী।’

আল-সাদী ভূঁইয়া/এসএনআর/জেআইএম

Advertisement