দেশজুড়ে

৪০০ বছরের পুরোনো মসজিদে ঝুঁকি নিয়ে নামাজ আদায়

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপালে চারশ বছরের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাক্ষী হয়ে আছে হাজিপাড়া শাহী জামে মসজিদ। তিনটি গম্বুজসহ ছোটবড় ১০টি মিনার নিয়ে গড়া প্রাচীন নির্মাণশৈলীর এ মসজিদে এখনো নামাজ পড়েন মুসল্লিরা। আসেন দূর-দূরান্তের মানুষও।

Advertisement

৪০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের এ মসজিদে ৬০ ইঞ্চি ওয়াল গাঁথুনি, তিনটি দরজা, চারটি জানালা আছে। তৎকালীন সময় দুই কাতারে ৫০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতেন। এছাড়া মসজিদের বাইরে আছে একটি প্রাচীন প্রবেশদ্বার।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১২৮৮ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন ওই এলাকার বাসিন্দা হাজি ত্যালেঙ্গা বসুনিয়া। ১৩০১ সালের আগেই শেষ হয়েছিল মসজিদটির নির্মাণ কাজ। তবে নির্মাণ সাল নিয়ে নানা মত থাকলেও জনশ্রুতি আছে মসজিদটি নির্মাণে ব্যবহার হয়েছে চুন ও সুরকি। ১৩১২ সালে হাজি ত্যালেঙ্গা বসুনিয়া মারা গেলে মসজিদের পাশেই তাকে সমাহিত করা হয়।

বর্তমানে মসজিদটিতে মুসল্লির সংখ্যা বাড়ায় স্থানীয়দের উদ্যোগে দুবার টিনের বারান্দা বানিয়ে বাড়ানো হয়েছে নামাজের স্থান। তবে দিন দিন ঐতিহাসিক এ মসজিদ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

Advertisement

মো. আব্বাস আলী চৌধুরী বলেন, মসজিদটি আমার দাদার-দাদা নির্মাণ করেছেন। এর বয়স চারশ বছরেরও বেশি। দাদার কাছে শুনেছি মসজিদটা চিড়া ও চিনি দিয়ে বানাইছে। কিন্তু এখন এ মসজিদে আর জায়গা হয় না। আমরা উদ্যোগ নিয়ে বারান্দা বানিয়েছি।

রেদাওনুর রহমান নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, হাজি ত্যালেঙ্গার সাত সন্তান মিলে মসজিদটি নির্মাণ করে। নির্মাণের সময় তো লোকজন কম ছিল। তখন ৫০-৬০ জন নামাজ পড়তে পারতেন। তবে এখন লোকজন বেশি। আমরা কয়েকবার নামাজের জায়গা বাড়াইছি। তাও জায়গা হয় না। মসজিদটি ভেঙে পুনরায় নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নিলেও বার বার প্রশাসন থেকে নিষেধ এসেছে। মসজিদে অনেক ফাটল ধরছে। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমরা ঝুঁকি নিয়েই নামাজ পড়ছি।

সোলেমান উদ্দিন বলেন, মসজিদে এখন ঢুকতে আমাদের ভয় লাগে। কোনোরকম ভেঙে যায় আমাদের অনেক প্রাণ চলে যাবে। যদি সরকার ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের এর পাশে বা এ মসজিদে কোনো ব্যবস্থা করে দিতো, তাহলে অনেক মানুষ শান্তিতে নামাজ আদায় করতে পারতাম। যেহেতু প্রশাসন বাধা দিচ্ছে তাহলে আমাদের তো বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে জলঢাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈনুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

Advertisement

নীলফামারী জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ জাগো নিউজকে বলেন, মসজিদ সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। কিছু বলতে পারবো না। কোথায় আছে এ মসজিদ জানি না।

রাজু আহম্মেদ/এসজে/এমএস