ক্যাম্পাস

রোজায় হলের ডাইনিং-ক্যান্টিনে বেড়েছে খাবারের দাম

রমজানে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যান্টিনে বেড়েছে খাবারের দাম। তবে বাড়েনি খাবারের মান। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হলের শিক্ষার্থীরা।

Advertisement

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দাম বাড়লেও খাবারের মান বাড়েনি। খাবারের দাম বাড়ানোয় অনেক শিক্ষার্থী কষ্ট করে রোজা রাখছে। ফলে অনেক শিক্ষার্থীরা নিজেরা রান্না করেন কিংবা বাইরে থেকে খাবার কিনে সেহরি করেন।

তারা আরও জানান, এখন খাবারের পরিমাণও কমানো হয়েছে। বিশেষ করে ক্যান্টিনে আগে একবারে যে পরিমাণ তরকারি দেওয়া হতো, এখন দুবারে সে তরকারি দেওয়া হয়। বাড়তি ভাত-তরকারি আনতে আলাদা টাকা গুনতে হয়। এছাড়া গরুর মাংস ও মুরগির মাংসের আগের চেয়ে ছোট ছোট টুকরো দেওয়া হয়।

হল সূত্রে জানা যায়, এবারের রমজানে সেহরিতে খাবারের আইটেমের দাম ৫-১০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে খাবারের মেন্যুতে দেখা যায়, ছেলেদের হলের ডাইনিংয়ে খাসির মাংস ১০০ টাকা (আগে ছিল ৯০), খাসির কলিজা ৭০ টাকা (আগে ছিল ৬০), গরুর মাংস ১০০ টাকা (আগে ছিল ৯০), ঝাল ফ্রাই ৬০ টাকা (আগে ছিল ৫০), ডিম ভুনা ৩৫ টাকা (আগে ছিল ২০), মিক্সড সবজি ৩৫ টাকা (আগে ছিল ৩০), পাবদা মাছ ৬০ টাকা (আগে ছিল ৫০), রুই মাছ ৫০ টাকা (আগে ছিল ৩৫)।

Advertisement

ক্যান্টিনে খাসির মাংস ১১০ টাকা (আগে ছিল ১০০), খাসির কলিজা ৭০ টাকা (আগে ছিল ৬০), গরুর মাংস ১০০ টাকা (আগে ছিল ৮০), ঝাল ফ্রাই ৬৫ টাকা (আগে ছিল ৫০), শুঁটকি ৪০ টাকা (আগে ছিল ৩৫), ডালভুনা ৩৫ টাকা (আগে ছিল ৩০)।

অপরদিকে মেয়েদের হলের ক্যান্টিনে ঝালফ্রাই ৪০ টাকা (আগে ছিল ৩০), রুই মাছ ৩৫ টাকা (আগে ছিল ৩০), ডিম ভুনা ৩০ টাকা (আগে ছিল ২৫), গরুর মাংস ১২০ টাকা (আগে ছিল ১০০), খাসির মাংস তৈরি হয় না। এছাড়া ডাইনিংয়েও খাবারে ৫-১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ছাত্রী হলের শিক্ষার্থী ফারজানা আক্তার রিমি বলেন, ‘ক্যান্টিনে রুই মাছ, ব্রয়লার মুরগি ছাড়া অন্য কোনো মাছ-মাংস খুবই কম দেখা যায়। কিন্তু ব্রয়লার মুরগি ও রুই মাছেও এখন দাম বাড়ানো হয়েছে। যেগুলো একজন ছোট বাচ্চার জন্য যথেষ্ট। কিন্তু সারাদিন ব্রেইন খাটিয়ে আসা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের জন্য নিতান্তই অল্প। ক্যান্টিনের এতো অল্প পরিমাণে স্বল্প পুষ্টির খাবার খেয়ে রোজা রাখা এখন কষ্টকর হয়ে পড়েছে।’

বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী মারুফ হাসান রাসেল বলেন, ‘রমজান শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খাবারের দাম বেড়েছে। প্রথম দিকে খাবারের মান একটু ভালো থাকলেও এখন আবার কমেছে। ফলে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী হলের খাবার নিয়ে সন্তুষ্ট নন। কোনো উপায় না থাকায় বাধ্য হয়ে আমাদের এ খাবার খেতে হচ্ছে।’

Advertisement

এদিকে খাবারের দাম নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপে একটি পোস্টের মাধ্যমে এক শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি ওই পোস্টে লিখেন, ‘হলে থেকেও মেসের চেয়ে বেশি খরচ। রমজান মাস শুরু হতে না হতেই হলগুলোর ডাইনিং ও ক্যান্টিনের খাবারে ১০ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। পাইছে একটা হুজুগ যে, সব কিছুর দাম বাড়ছে। অথচ এ সুযোগ নিয়ে যা ইচ্ছে হলগুলোতে করছে।’

দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে ডাইনিং ও ক্যান্টিন পরিচালকদের সাথে যোগাযোগ করলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টিকে তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু হলের ডাইনিং পরিচালক মাসুক মিয়া বলেন, রমজান উপলক্ষে প্রায় প্রতিটি জিনিসেরই দাম বেড়েছে। আগে জিনিসপত্র যে টাকা দিয়ে কিনতাম, এখন এগুলোর দাম অনেক বেড়েছে। যে দামে খাবার বিক্রি করতাম আমাদের লোকসানের মধ্যে পড়তে হতো। তাই কিছু দাম বাড়িয়েছি। তবে শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে ২৫ টাকায় যে খাবার পাওয়া যায় সেটির দাম বাড়ানো হয়নি।

এ নিয়ে হল প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং বডির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান খান জাগো নিউজকে বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ায় খাবারের দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। তবে খাবারের মান যাতে ভালো থাকে এজন্য ক্যান্টিন-ডাইনিং পরিচালকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া আছে।

এসজে/এমএস