জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। এবার গম চাষাবাদ বেশি হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এরই মধ্যে মাঠ থেকে গম কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। এবার শুরু থেকেই গমের বাম্পার ফলন ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন উপজেলার কৃষকরা।
Advertisement
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এবার পাঁচবিবি উপজেলায় ১ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। যা গত বছর ছিল ১ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে। এবার ৫ হেক্টর বেশি চাষাবাদ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৪৫ মেট্রিক টন। উপজেলায় এবার চাষ করা গমের বেশিরভাগই সরকারি প্রণোদনার আওতাভুক্ত। চলতি মৌসুমে উপজেলার ১ হাজার ৩০০ জন কৃষকের মাঝে প্রণোদনার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি উপজেলায় সরকারিভাবে ১৫ জন কৃষকের মাঝে প্রদর্শনীও দেওয়া হয়েছে বলে জানায় কৃষি বিভাগ।
আরও পড়ুন: চৈত্র মাসে পাট চাষে করণীয়
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকারিভাবে পাওয়া প্রণোদনার বীজ ও বাজার থেকে কেনা বীজ দিয়ে দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। মোটামুটি ভালো ফলন হয়েছে। এরই মধ্যে কিছু গম বিক্রিও করেছি। দাম ভালোই পেয়েছি।’
Advertisement
নন্দইল গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমি এবার তিন বিঘা জমিতে গম আবাদ করেছি। গমের দানা ও ফলন খুব ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘায় চাষাবাদে খরচ হয়েছে ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। ফলন হয়েছে ১৩ থেকে ১৪ মণ। বাজারে ভালো দাম থাকায় এবার লাভবান হয়েছি।’
রতনপুর হিন্দুপাড়া গ্রামের কৃষক প্রসাদ চন্দ্র মন্ডল, রতন কুমারসহ কয়েকজন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এরআগে গম মাড়াই সমস্যার কারণে চাষাবাদে অনীহা এসেছিল। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন মাড়াই যন্ত্র আসার কারণে গম চাষে আগ্রহী হয়ে ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। অন্য ফসলের তুলনায় গম চাষে খরচ কম হয়। আবার গম মাড়াই করে গমের কাষ্টি জ্বালানি হিসাবেও ব্যবহার করা যায়।’
আরও পড়ুন: তরমুজে লাভের আশা দাকোপের চাষিদের
রতনপুর বাজারের গম ব্যবসায়ীরা জাগো নিউজকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমে শুরুতেই প্রতি মণ গমের বাজারদর ছিল ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ টাকা। পরে বাজার কিছুটা কমে যায়।’ বাজার ঘুরে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতি মণ গম ১৭০০ টাকা থেকে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত বেচাকেনা হচ্ছে। তবে গমের বাজার আরও বাড়তে পারে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
Advertisement
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বারি-৩২, বারি-৩৩ জাতের গম উচ্চ ফলনশীল ও রোগ প্রতিরোধী হওয়ায় কৃষকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। এর ফলন ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। এমনকি খরা সহিষ্ণু। যে কারণে গমের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।’
এসইউ/এমএস