লাইফস্টাইল

ওজন কমাতে সেহরি ও ইফতারে যা খাবেন

অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতায় যারা ভুগছেন তারা রমজান মাসে রোজা রেখে বেশ কয়েক কেজি পর্যন্ত কমাতে পারবেন।

Advertisement

এজন্য সঠিক খাদ্যভ্যাস জরুরি। এ সময় সেহরি ও ইফতারে যদি আপনি সঠিক খাবার খেতে পারেন তাহলে ওজন খুব দ্রুত কমবে।

আরও পড়ুন: রমজানে যা খাবেন, যা খাবেন না

রোজায় ওজন কমাতে সেহরি ও ইফতারে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন ডা. তাসনিম জারা।

Advertisement

ইফতারে কোন কোন খাবার খাবেন?

খেজুর

অনেকেই ইফতার শুরু করেন খেজুর দিয়ে। যা খুবই ভালো একটি অভ্যাস। কারণ খেজুরে প্রাকৃতিক চিনি থাকে। দ্রুত সারাদিনের ক্লান্তি কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

এছাড়া এতে ফাইবার বা আঁশসহ নানা ধরনের খনিজ পদার্থ থাকে। রোজার সময় ফাইবার শরীরে জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।

Advertisement

আরও পড়ুন: রোজা রেখে মাথাব্যথার সমস্যা বাড়লে যা করবেন

ডাবের পানি

খেজুর খাওয়ার পরপরই চিনিযুক্ত শরবত পান করেন অনেকেই। যা শরীরের জন্য মোটেও উপকারী নয়। এর পরিবর্তে পানি বা ডাবের পানি পান করুন। এতে পটাশিয়াম থাকে।

সারাদিন শরীরে ঘাম হয়ে যে পানিশূন্যতা হয়, তা মুহূর্তেই কাটিয়ে তোলে ডাবে থাকা পুষ্টিগুণ। এখন যেহেতু গরমে রোজা পড়েছে, তাই ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করতে হবে।

ফলের রস

শরবতের পরিবর্তে বিভিন্ন তাজা ফলের জুস খেতে পারেন। তবে কোনো ধরনের চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করবেন না।

আরও পড়ুন: রোজা রাখলে কমবে ওজন-ডায়াবেটিস, আছে আরও উপকারিতা

চিনি আমাদের শরীরে বাড়তি কোনো পুষ্টি দেয় না। বরং অতিরিক্ত চিনি খেলে ওজন বেড়ে যাওয়াসহ নানা ধরনের রোগ হয়ে থাকে।

মৌসুমী ফল

খেজুর খেয়ে পানি পান করা পর হাতের কাছে থাকা ফল খান। নানা ধরনের ফলে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে।

এ খাবারগুলো খেয়ে বিরতি দিতে হবে। মাগরিবের নামাজ পড়েন নিন। তারপর একটু হাঁটাহাঁটি করুন ঘরেই। সারাদিন উপবাসের পরেই ইফতারে যখন খাওয়া হয়, তখনই তা সঙ্গে সঙ্গে তা ব্রেইনে পৌঁছায় না।

আরও পড়ুন: রমজানে খুব সহজেই ওজন কমানোর ৭ উপায়

কিছুক্ষণ পর ব্রেইন সেটা বুঝতে পারে। এ কারণে অতিরিক্ত আর খেতে ইচ্ছে করে না। রোজায় অতিরিক্ত খাওয়ার কারণেই কিন্ত ওজন বেড়ে যায়।

যারা রোজার এ সময় ওজন কমাতে চান, তারা ইফতারের পর খাবারকে ৪ ভাগে ভাগ করবেন। একটি প্লেটের অর্ধেকে রাখবেন শাক-সবজি ও ফল আর বাকি অংশে রাখবেন লাল চালের এক মুঠো ভাত বা রুটি, মাছ-মাংস ও ডাল। অর্থাৎ প্রোটিনজাতীয় খাবার।

অবশ্যই এ খাবার রান্নায় অতিরিক্ত তেল-মশলা দেওয়া যাবে না। আর রোজার সময় তেল ও মসলাযুক্ত খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়। এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল বা সরিষার তেল ব্যবহার করতে হবে।

আরও পড়ুন: যেসব ডায়াবেটিস রোগী রোজা রাখতে পারবেন না

ইফতারে যা খাবেন না

অনেকেই ইফতারে ছোলা, বেগুনি, পেয়াঁজু ইত্যাদি খেয়ে থাকেন, যা শরীরের জন্য মোটেও ভালো না। পাশাপাশি দ্রুত ওজন বাড়ায়।

এ খাবারগুলো মূলত ডুবো তেলে ভাজা হয়। এ খাবারগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্র্যান্সফ্যাট থাকে। যে ফ্যাট শরীরের জন্য সবচেয়ে ক্ষতিকর।

গবেষণায় দেখা গেছে, আপনার সারাদিনের খাবারের মধ্যে যদি ২ শতাংশ পরিমাণও ট্র্যান্সফ্যাট থাকে তাহলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে ২৩ শতাংশ। এছাড়া ডায়াবেটিস, হাই প্রেশারসহ নানা ধরনের রোগ হতে পারে।

জিলাপি-বুন্দিয়া এ খাবারগুলোও তেলে ভাজা ও অতিরিক্ত মিষ্টি হওয়ার কারণে এড়িয়ে যেতে হবে।

আরও পড়ুন: তরমুজ খেলে ডায়াবেটিস রোগীর শরীরে যা ঘটে

সেহরিতে যা খাবেন

সেহরিতে খেতে দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখে এমন খাবার। ফাইবারজাতীয় খাবার খেলে সারাদিন ক্ষুধা কম লাগে ও অল্প অল্প করে শরীর অ্যানার্জি পায়।

লাল চালের ভাতে অনেক বেশি ফাইবার থাকে। এর বদলে ওটস, বাদাম, চিয়া সিড, কলা, আপেল, কমলা, সেদ্ধ ডিম, রাজমা ডাল এসব খাবারগুলো সাহরিতে খেলে সারাদিন শরীর সুস্থ থাকবেন আপনি। পাশাপাশি ওজনও দ্রুত কমতে শুরু করবে।

সেহরিতেও অতিরিক্ত খাবেন না। আর খাওয়ার পরপরই শোয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুন। এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যায় সারাদিন পেট জ্বালা-পোড়া করতে পারে।

আরও পড়ুন: ডায়াবেটিস রোগীর হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি, যেভাবে সতর্ক থাকবেন

শরীরচর্চা

অনেকেই ভাবেন রোজার সময় শরীরচর্চা করার প্রয়োজন নেই। বিষয়টি ভুল, ইফতারের আগ মুহূর্তে কিংবা সন্ধ্যার পরে আধা ঘণ্টা সময় নিয়ে শরীরচর্চা করুন।

দ্রুত গতিতে হাঁটতে পরেন এ সময়। দৌঁড়াতে পারলে আরও ভালো হয়। সকালে ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করতে পারেন। মোটকথা ওজন কমাতে চাইলে শরীরচর্চার বিকল্প নেই।

জেএমএস/এএসএম