‘সেদিনের বিভীষিকা এখনো আমার চোখের সামনে ভাসে। সেদিন আমি মিরপুরে শুটিংহাউজের ওয়াশরুমে যাই। সেখানে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে স্পার্ক হচ্ছে মনে হলো। এরপর হঠাৎ বিকট শব্দ। ওই সময় বাথরুমের দরজা ভেঙে উড়ে যায়। আমার শরীর অর্ধেক বাথরুমের ভেতর ছিল, আর অর্ধেক বাইরে। মুহূর্তেই শরীর দগ্ধ হয়ে যায়।’
Advertisement
এভাবেই নিজের জীবনের সবচেয়ে কঠিন মুহূর্তের বর্ণনা দিচ্ছিলেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি। ২৮ জানুয়ারি রাজধানীর মিরপুরে একটি শুটিংবাড়িতে বিস্ফোরণে দগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। তার শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। দীর্ঘ দুই মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়েছেন। ছিলেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে। সবশেষ হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন শারমিন আঁখি।
আরও পড়ুন: বাসায় ফিরছেন অগ্নিদগ্ধ অভিনেত্রী শারমিন আঁখি
বাসায় ফেরার আগে মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে ভয়াবহ সেই দিনের স্মৃতিচারণ করেন শারমিন আঁখি।
Advertisement
অভিনেত্রী বলেন, বিস্ফোরণের পর শুটিং ইউনিটের গাড়ি দিয়ে আমাকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। আপনারা জানেন, গত জানুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঠিক আজকে সেই ২৮ তারিখে আমি আবার বাসায় ফিরে যাচ্ছি।
আরও পড়ুন: অভিনয়টাকেই ভীষণ ভালবাসি : আঁখি
চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে শারমিন আঁখি বলেন, যারা আমাকে দীর্ঘদিন সেবা দিয়ে আজ বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন, আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি যখন আইসিইউতে ছিলাম তখন থেকেই মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের সংবাদ প্রচারের খবর পাই। যেগুলো আমার জন্য খুবই বেদনাদায়ক ছিল। আর এজন্য আজ আমি আমার এই পোড়া শরীর নিয়ে আপনাদের সামনে এসেছি। অনেকে বলছেন, আমি স্মোকিং করতে গিয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সেদিন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনা ঘটার পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই শুটিংহাউজ আমার কোনো খোঁজ নেয়নি। সব সময় আমার পাশে ছিলেন আমার স্বামী রাহাত।
আরও পড়ুন: শুটিংয়ে শর্টসার্কিটে দগ্ধ হয়েছেন অভিনেত্রী শারমিন আঁখি
Advertisement
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, শারমিন আঁখির শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল। আর ৩৫ শতাংশ দগ্ধ যে কোনো মানুষের জন্য আশঙ্কাজনক। ১৫ শতাংশ দগ্ধ হলে তাকে আমরা শঙ্কামুক্ত বলতে পারি না, সেখানে তিনি তো ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমাদের তত্ত্বাবধানে দুই মাস চিকিৎসা শেষে আজ তাকে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দিচ্ছি।
কাজী আল আমিন/জেডএইচ/এমএস