রাজনীতি

ফখরুলের মন্তব্য জাতির অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে: কাদের

‘আওয়ামী লীগ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা’- মির্জা ফখরুলের এই মন্তব্য জাতির অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

Advertisement

তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলের এই ধরনের অশালীন ও ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্য শুধু আওয়ামী লীগের ঐতিহ্যকে অসম্মানিত করেনি, বরং ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগকেও অপমানিত করেছে। একইসঙ্গে তিনি সমগ্র জাতি ও জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে তার রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। মির্জা ফখরুলের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এ মন্তব্য সমগ্র জাতির অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত হেনেছে।

মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব এ কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আরও পড়ুন: দেশের রাজনীতির বিষফোঁড়া বিএনপি: ওবায়দুল কাদের

Advertisement

তিনি বলেন, বাঙালি জাতি ও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ইতিহাস জড়িত। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতির ঐক্যবদ্ধ লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত ও আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে এদেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ‘আওয়ামী লীগ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর প্রেতাত্মা’- মির্জা ফখরুলের এ মন্তব্যকে ওবায়দুল কাদের শতাব্দীর সেরা কৌতুক বলে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এটা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তাদের চরম বিদ্বেষ ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি নেতারা এমন অসংলগ্ন প্রলাপ বকছেন। মনে হয় রাজনৈতিক নেতা হিসেবে তাদের বিবেক-বুদ্ধি শুধু হারায়নি, চক্ষুলজ্জাও হারিয়েছে।

আরও পড়ুন: জনগণ চাইলে আছি, না চাইলে নেই: ওবায়দুল কাদের

ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রামে যে নীতি-আদর্শ শক্তি ও প্রেরণা যুগিয়েছে, তা এ রাষ্ট্রের মূলনীতি হিসেবে সংবিধানে প্রতিফলিত হয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

Advertisement

তিনি আরও বলেন, মির্জা ফখরুল কিছুদিন আগে মন্তব্য করেছিলেন- ‘পাকিস্তান আমলে ভালো ছিলাম’। তাদের পাকিস্তান-প্রীতি নতুন কোনো বিষয় নয়। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান এদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করে গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে বাংলাদেশকে পরিচালিত করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ধারাকে পরিপুষ্ট করেছিলেন। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে খালেদা জিয়া একইভাবে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ক্ষমতা দখলের নীলনকশা বাস্তবায়নে ১৯৯১ সালে জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই’র কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নিয়েছিলেন বলে কয়েক বছর আগে সে দেশের আদালতে সংস্থাটির তৎকালীন প্রধান জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি পদে বসার যোগ্যতা আমার নেই: ওবায়দুল কাদের

বিএনপি চেতনা ও মননে পাকিস্তানকে ধারণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর এক জেনারেল আসিফ নাওয়াজ জানজুয়ার মৃত্যুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া শোকবার্তা পাঠিয়ে জাতির ঐতিহাসিক সংগ্রামের চেতনার মূলভিত্তিতে আঘাত করেছিলেন।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিশ্বসভায় মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত পাকিস্তানের গণমাধ্যমেও বাংলাদেশ ও এদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় মিলিটারি ডিক্টেটর জিয়াউর রহমানের পকেট থেকে পাকিস্তানি দর্শনের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনও মানসিকভাবে মেনে নিতে পারে নাই। এটা তাদের মানসিক দৈন্যতা।

দেশের মানুষ যখন স্বাধীনতার সুফল ভোগ করছে, তখন বিএনপি নেতারা স্বাধীনতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করার ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেন সেতুমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি- মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণকারী সমগ্র দেশবাসী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ ঐক্যবদ্ধ। তারা আগামীতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে, ইনশাল্লাহ।

এসইউজে/জেডএইচ/এমএস