সম্প্রতি চাঁদের নিচে উজ্জ্বল এক বিন্দু নিয়ে শুরু হয়েছে নানান জল্পনা কল্পনা। আকাশে বাঁকা চাঁদ, ঠিক তার নিচে শুকতারা। অনেকেই একে আরবি হরফ বা এর মতো দেখতে বলছেন। তবে আসলে এটি কী? শুধু বাংলাদেশেই নয়, পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও এমন দৃশ্য দেখা যাচ্ছে। দৃশ্যটি দেখার পর কৌতূহলী মানুষ এ নিয়ে আলোচনা শুরু করেছে। কেউ কেউ দৃশ্যটি ক্যামেরায় ধারণও করেছেন।
Advertisement
তবে এরপর বিজ্ঞানীরা আরও একটি খবর জানায়, যে বিশ্ববাসী আরও একটি বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। ২৫-৩০ মার্চের মধ্যে পাঁচটি গ্রহ সারিবদ্ধ হয়ে পৃথিবী বিষুবতে প্রবেশ করে। বৃহস্পতি, বুধ, শুক্র, ইউরেনাস এবং মঙ্গল আকাশে সারিবদ্ধ হবে। এমন ঘটনাকে বৈজ্ঞানিক ভাষায় বিজ্ঞানীরা বলে থাকেন প্ল্যানেটারি প্যারেড।
এই পাঁচটি গ্রহ মার্চের শেষ দিনগুলোতে একে অপরের চারপাশে ঘুরতে থাকে, আজ ২৮ মার্চ এগুলোকে সবচেয়ে পরিষ্কার দেখা যাবে আকাশে। সন্ধ্যার পরপরই এই দৃশ্য দেখতে হবে কারণ বুধ ও বৃহস্পতি গ্রহ খুব দ্রুতই দিগন্তে মিলিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: মহাবিশ্বের যেসব নক্ষত্রে প্রাণ আছে
Advertisement
বাংলাদেশেও আজ সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত এই দৃশ্য দেখা যাবে। আকাশে প্রায় রাত নয়টা পর্যন্ত দেখা যাবে শুক্র গ্রহ, যা শুকতারা নামেও পরিচিত। সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় মঙ্গল গ্রহ ও চাঁদ একই সরলরেখায় দেখা যাবে। এই দুই গ্রহ প্রায় সূর্যের সঙ্গেই পৃথিবীর দিগন্তরেখায় অস্ত যায়।
গ্রহ দেখার জন্য সবচেয়ে ভালো জায়গা হলো যেখানে আলো কম, শহুরে কোলাহল নেই এবং দৃশ্যত কোনো বাধা নেই আকাশ দেখতে। খালি চোখেই দেখা যাবে এই বিরল দৃশ্য। চাঁদের সঙ্গে পাশাপাশি, কাছাকাছি দেখা যাবে পাঁচ গ্রহকে। কখনো মনে হতে পারে তারা একই রেখায় রয়েছে। আবার কখনো উপরে নিচে করে দেখা যাবে পাঁচ গ্রহকে। চাঁদের কাছাকাছি থাকবে শুক্র গ্রহও।
শুক্র এবং বৃহস্পতি উভয়ই অত্যন্ত উজ্জ্বল গ্রহ। তাদের খালি চোখে দেখা যাবে। বুধ দেখতে সমস্যা হলেও যদি আকাশ মেঘাচ্ছন্ন না থাকে তাহলে খালি চোখেই দেখা যাবে। গ্রহগুলোকে আকাশে তারার মতো উজ্জ্বল মনে হবে। সেই সঙ্গে দেখা যাবে চাঁদকেও। চাঁদের কাছে থাকবে শুক্র। সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল দেখা যাবে বৃহস্পতিকে। তার পরেই দেখা যাবে মঙ্গলকে। লাল আভা ছড়াবে মঙ্গল। এর কাছেই থাকবে ইউরেনাস। সবুজ আভা ছড়াবে এই গ্রহ।
আরও পড়ুন: আকাশে কত তারা?
Advertisement
এর আগে সবশেষ গত গ্রীষ্মে বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি গ্রহ সারিবদ্ধ হয়েছিল। ১৮ বছর পর যা দেখা গিয়েছিল। এরপর এই ঘটনার সাক্ষী হতে বিশ্ববাসীকে অপেক্ষা করতে হবে ২০৪০ সাল পর্যন্ত। বিজ্ঞানীরা বলছেন কখনো কখনো এই দৃশ্য দেখতে সময় লাগে ৪০০ বছরের বেশি। তাই এই বিরল দৃশ্যের সাক্ষী হতে সূর্যাস্তের পর চোখ রাখুন আকাশে। চাইলে সঙ্গে রাখতে পারেন টেলিস্কোপ।
সূত্র: স্পেস ডটকম, এনপিআর
কেএসকে/এমএস