উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর অবকাঠামোগত নেটওয়ার্ক তৈরির লক্ষ্যে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) প্রকল্প চালু হয়। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে চীন প্রকল্পভুক্ত ২২টি উন্নয়নশীল দেশকে বেল আউট হিসেবে ২৪ হাজার কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছে। কয়েক বছর ধরে বেড়েছে এই ঋণের পরিমাণ। ঋণ পরিশোধে সংগ্রাম করছে প্রকল্পভুক্ত দেশগুলো।
Advertisement
বিশ্বব্যাংক, হার্ভার্ড কেনেডি স্কুল, এইডড্যাটা এবং কিয়েল ইনস্টিটিউট ফর দ্য ওয়ার্ল্ডের গবেষকদের প্রতিবেদন বলছে, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয় বেল আউট হিসেবে। বিশেষ করে আর্জেন্টিনা, মঙ্গোলিয়া, পাকিস্তানসহ মধ্য আয়ের দেশগুলোকে।
চীন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অবকাঠামো নির্মাণের জন্য শত শত বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। কিন্তু ২০১৬ সাল থেকে অনেক প্রকল্প প্রত্যাশিত আর্থিক লভ্যাংশ এনে দিতে পারেনি। ফলে ঋণ দেওয়া কর্মসূচি কিছুটা স্তিমিত হয়ে যায়।
আরও পড়ুন> চীনা ঋণের ফাঁদ: বাংলাদেশ নেই তো?
Advertisement
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ও এই গবেষণা প্রতিবেদনের একজন কারমেন রেইনহার্ট বলেছেন, বেইজিং শেষ পর্যন্ত তার নিজস্ব ব্যাংকগুলোকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে। এ কারণে এই প্রকল্প আন্তর্জাতিক বেল আউট ঋণের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।
গবেষণায় উঠে এসেছে, ২০১০ সালে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৫ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৬০ শতাংশ ঋণ সংকটে থাকা দেশগুলোতে চীনা ঋণের পরিমাণ বেড়েছে।
এই প্রকল্পের আওতায় আর্জেন্টিনা সবচেয়ে বেশি ১১১ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছে। এর পরে রয়েছে পাকিস্তান এবং দেশটি পেয়েছে ৪৮ দশমিক ৫ বিলিয়ন বা ৪ হাজার ৮শ ৫০ কোটি ডলার। মিশর ঋণ পেয়েছে ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন বা ১ হাজার ৫শ ৬০ কোটি ডলার। ৯টি দেশ ১ বিলিয়ন ডলারেরও কম ঋণ সহায়তা পেয়েছে।
পিপলস ব্যাংক অব চায়না (পিবিওসি) সুরিনাম, শ্রীলঙ্কা ও মিশরে ১৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেয়। চীনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলো সমর্থন করে ৭০ বিলিয়ন ডলার। উভয় ধরণের ঋণ নবায়নের পরিমাণ ছিল ১৪০ বিলিয়ন ডলার।
Advertisement
প্রতিবেদনের অন্যতম লেখক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি কলেজের গবেষণা ল্যাবের এইডড্যাটার পরিচালক ব্র্যাড পার্কস বলেছেন, চীনের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ঋণ ‘অস্বচ্ছ এবং সমন্বয়হীন।’
বেল আউট ঋণ প্রধানত মধ্য আয়ের দেশগুলোতে দেওয়া হয়। চীনা ব্যাংকগুলোর ব্যালেন্স শিটে ঝুঁকির কারণে এমন অবস্থা যেখানে নিম্ন আয়ের দেশগুলোকে ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব দেওয়া হয়।
চীন জাম্বিয়া, ঘানা ও শ্রীলঙ্কাসহ প্রকল্পভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে ঋণ পুনর্গঠন নিয়ে আলোচনা করছে। তবে এসব ঋণ নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। এরই প্রতিক্রিয়া হিসেবে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলকেও আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স
এসএনআর/জেআইএম