বিশ্বজুড়ে সব নাট্যকর্মী ও শিল্পীর মধ্যে সৌহার্দ্য স্থাপন, নাটকের বার্তা সবার মাঝে ছড়িয়ে দিয়ে এর শক্তিকে নতুন রূপে আবিষ্কার করার লক্ষ্যেই প্রতিবছর ২৭ মার্চ বিশ্ব নাট্য দিবস পালন করা হয়। দিনটি উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, আইটিআই বাংলাদেশ কেন্দ্র, গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশন ও পথনাটক পরিষদের সম্মিলিত আয়োজনে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে পালিত হলো ‘বিশ্ব নাট্য দিবস-২০২৩’।
Advertisement
আরও পড়ুন: শিল্পকলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন
বিশ্ব নাট্য দিবস উপলক্ষ্যে নাট্যকর্মী, অভিনয় শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অংশগ্রহণে ২৭ মার্চ বিকাল ৫টায় বের হয় বিশ্ব নাট্য দিবসের বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে থেকে বের হয়ে চারুকলা ভবনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সন্ধ্যা ৬ টায় একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় আয়োজন করা হয় প্রীতি সম্মিলনীর। ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে আয়োজিত হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। এবারের অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে ছিল বিশ্ব নাট্যদিবসের বাণী পাঠ, বিশ্ব নাট্য দিবসে জাতীয় বাণী প্রদান, বিশ্ব নাট্য দিবস সম্মাননা প্রদান এবং বিশ্ব নাট্য দিবসের বক্তৃতা।
Advertisement
আরও পড়ুন: সব উপজেলায় হচ্ছে শিল্পকলা একাডেমি : সংস্কৃতিমন্ত্রী
আলোচনা পর্বে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সেলিম, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সেক্রেটারি জেনারেল চন্দন রেজা এবং বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সভাপতি মিজানুর রহমান।
এবারে বিশ্ব নাট্য দিবসের আন্তর্জাতিক বাণী প্রদান করেছেন মিশরের বরেণ্য অভিনেত্রী এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সামিহা আইয়ুব। তার বাণী পাঠ করেন বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নাট্যজন লাকী ইনাম। এবারের বিশ্ব নাট্য দিবসের জাতীয় বাণী প্রদান করেছেন বরেণ্য নাট্য অভিনেতা ও নির্দেশক লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানে জাতীয় বাণী পাঠ করেন তিনি।
আলোচনা পর্বের পর প্রদান করা হয় বিশ্ব নাট্যদিবসের সম্মাননা। করোনার কারণে গত ৩ বছরে কোনো অনুষ্ঠান না হওয়ায় এবার বিগত বছরের সম্মননাও তুলে দেয়া হয়। দেশের নাটকের অঙ্গনে বিশেষ অবদান রাখায় বিশ্ব নাট্য দিবসে সম্মাননা তুলে দেয়া হয় তাদের। ২০২০ সালের বিশ্ব নাট্যদিবসের সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন নাট্যকার ও নির্দেশক মিলন চৌধুরী এবং অভিনেতা ও সংগঠক পরেশ আচার্য্য।
Advertisement
২০২১ সালে সম্মাননা প্রাপ্ত হয়েছেন অভিনয় শিল্পী প্রয়াত লিলি চৌধুরী। শ্রদ্ধেয় লিলি চৌধুরীর পক্ষে তার সম্মাননা গ্রহণ করেন তার ছেলে আসিফ মুনীর। সম্মাননা তুলে দেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইন্সটিটিউট বাংলাদেশ কেন্দ্রের সভাপতি অধ্যাপক আবদুস সেলিম। ২০২২ সালে মরণোত্তর সম্মাননায় ভূষিত হন অভিনয় শিল্পী, নাট্যকার ও নির্দেশক প্রয়াত মান্নান হীরা। মান্নান হীরার পক্ষে সম্মাননা স্মারক গ্রহণ করেন তার স্ত্রী সৈয়দা নাদিরা মান্নান।
এবার ‘বিশ্ব নাট্য দিবস-২০২৩’-এর বিজয়ী হন অভিনয় শিল্পী, নাট্যকার ও নির্দেশক মামুনুর রশীদ। তাকে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী লাকী।
পরে বিশ্ব নাট্য দিবসের স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন অভিনয় শিল্পী মাসুদ আলী খান। পরে সভাপতির বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ও ঋত্বিক নাট্যপ্রাণ লিয়াকত আলী লাকী। পরে একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
এমআই/এমএমএফ/জেআইএম