রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদের তীরে চাষ হওয়া তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। রমজান শুরু হওয়ায় তরমুজের চাহিদা বেড়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় বিক্রি ভালোই হচ্ছে। চাষি ও মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীরা এমনটিই জানালেন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার তরমুজের উৎপাদন ভালো হয়েছে।
Advertisement
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের তীরে জুরাছড়ি, বরকল, লংগদু, বিলাইছড়ি, নানিয়াচর, বাঘাইছড়ি, কাপ্তাই, সদর উপজেলা ও কাউখালি উপজেলার কিছু কিছু স্থানে তরমুজের চাষ হয়ে থাকে। তবে জেলার সবচেয়ে বেশি তরমুজের চাষ হয় জুরাছড়ি, বরকল ও লংগদু উপজেলায়।
অক্টোবর মাস থেকে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমতে থাকে। তখন থেকেই হ্রদের তীরে জমি তৈরি করে জলে ভাসা জমিতে চাষ শুরু হয় তরমুজের। মৌসুমের এ ফল বাজারে আসতে শুরু করে এপ্রিল মাস থেকে।
আরও পড়ুন: ২ হাজার কোটি টাকার বেশি তরমুজ বিক্রি হবে
Advertisement
রাঙ্গামাটির বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিদিনই নৌ-পথে শহরের ট্রাক টারমিনাল, বনরূপা সমতাঘাটসহ বিভিন্ন ঘাটে আসে তরমুজ। সেখান থেকেই ট্রাকে করে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাইকারি ব্যবসায়ীর হাত ধরে চলে যায় ফলটি।
চাষিরা ২ থেকে আড়াই কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ পাইকারদের কাছে বিক্রি করছেন ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। জেলা শহরের খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
লংগদু উপজেলার কাট্টলিবিলে জলে ভাসা জমির তরমুজ চাষি ছদর আলি বলেন, ‘এবছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। রমজান হওয়ায় চাহিদাও আছে। সে জন্য পাইকারি ও খুচরা ভালোই বিক্রি হচ্ছে। কিছু কিছু তরমুজের বীজ ভালো না হওয়ায় ভালো ফলন হয়নি। যদি বীজ ভালো হতো, তাহলে ফলনও বাড়তো।’
আরও পড়ুন: বেড়েছে তরমুজ চাষ, ভালো বিক্রির আশা কৃষকের
Advertisement
জুরাছড়ি উপজেলার কৃষক উজ্জ্বল চাকমা বলেন, ‘আমাদের এখানের তরমুজ বেশ সুস্বাদু। এবছর ভালো ফলন হয়েছে। আবহওয়া অনুকূলে থাকায় খুব দ্রুত বড় হয়েছে। ২ থেকে আড়াই কেজি ওজনের প্রতি পিস তরমুজ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা বিক্রি করছি।’
পাইকারি ব্যবসায়ী সবুর মিয়া বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম পাইকারি আড়তে নিয়ে যাব তরমুজগুলো। মৌসুমি ফল ও রমজান হওয়ায় এখন বেশ ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে তরমুজের।’
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদের তীরবর্তী জলে ভাসা জমিতে বেশিরভাগ তরমুজের চাষ হয়েছে। এবছর জেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। হেক্টরপ্রতি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ মেট্রিক টন। মিঠাপানির কারণে কাপ্তাই হ্রদের তীরে তরমুজের উৎপাদন ভালো হয়।
আরও পড়ুন: তরমুজে ঘুরবে বরগুনার অর্থনীতির চাকা
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আপ্রু মারমা বলেন, ‘এবছর তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। এবছর জেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের ফলন হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। আশা করি এবছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার অর্জিত হবে। বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকও ন্যায্য মূল্য পাবেন।’
সাইফুল উদ্দীন/এসইউ/জেআইএম