দেশজুড়ে

সিসা কারখানার ধোঁয়ায় ঝুঁকিতে জীবন ও ফসল

সিরাজগঞ্জে কোনো প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই ভাঙা হচ্ছে পুরাতন ব্যাটারি। এসব ব্যাটারি পুড়িয়েই তৈরি করা হচ্ছে সিসা। ব্যাটারির অ্যাসিডের তীব্র গন্ধ ও ধোঁয়ায় ভারী হয়ে উঠছে আশপাশের এলাকা। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছে এলাকার শিশুরা। এছাড়া এখানকার বর্জ্য যাচ্ছে আবাদি জমিতে। ফলে কম যাচ্ছে ফলন।

Advertisement

জেলার তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের কুন্দাশন-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের পাশেই ত্রিপল দিয়ে চারদিক ঘিরে চলছে সিসার কারখানা। স্তূপ করে রাখা হয়েছে পুরাতন ব্যাটারি। দিনের আলোয় শ্রমিকরা ব্যাটারি ভাঙার কাজ করলেও রাতে বেশ কয়েকটি বড় চুল্লিতে ভাঙাড়ি পুড়িয়ে তৈরি করা হয় সিসা।

শুধু তাই নয়, ব্যাটারির বিষাক্ত সালফিউরিক অ্যাসিডসহ ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে যত্রতত্র। লোহার মোটা ছুরির সাহায্যে আলাদা করা হচ্ছে প্লাস্টিক ও সিসা। এভাবেই অবাধে চলছে কারখানায় সিসা তৈরির কাজ।

এতে জলাশয় ও আবাদি জমিতে বিষাক্ত বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে। এ থেকে সিসা যাচ্ছে মানবদেহে। ধোঁয়ায় শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে।

Advertisement

কুন্দাশন গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম জুয়েল জাগো নিউজকে বলেন, এখানকার ধোঁয়ায় ছোট ছেলে-মেয়েদের শ্বাসকষ্ট ছাড়াও ফসল নষ্ট হচ্ছে। কারখানার পাশেই আমার ১৫ বিঘা ফসলি জমি রয়েছে। এ কারখানা হওয়ার পর থেকে ফলন কম হচ্ছে। দ্রুত এই অবৈধ কারখানা বন্ধ হলে আমাদের উপকার হতো।

কারখানার শ্রমিক ইয়াছিন আলী জাগো নিউজকে বলেন, গরিব মানুষ কাজ করে খেতে হয়। অন্য কাজ না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ব্যাটারি কারখানায় কাজ করছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল আল মামুন বলেন, ফসলি জমিতে এ ধরনের দাহ্য পদার্থের কারখানা করা সম্পূর্ণ নিষেধ। এতে ফসলি জমির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। কারণ এতে মাটি অতিরিক্ত ক্ষার হয়ে যায়। এতে গাছপালা মাটি থেকে তার খাদ্য গ্রহণ করতে পারে না। ফলে ফলনও কম হয়।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন উর্মি জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তবে ওই কারখানা যদি অনুমোদনবিহীন হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

Advertisement

অপরদিকে কারখানাটির কোনো অনুমোদন নেই জানিয়ে মালিক গাইবান্ধা জেলার সৈয়দ আব্দুল হাদী জাগো নিউজকে বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় এভাবেই পুরাতন ব্যাটারি প্রক্রিয়াজাত করা হয়। তবে যখন কারখানাটি স্থাপন করা হয় তখন ফসলি জমি ফাঁকা ছিল।

জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আমরা বিষয়টি অবগত নই, তবে পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এফএ/জেআইএম