জাগো নিউজ: ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ছাত্রলীগ বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল। প্রধানমন্ত্রীর ‘কোনো জমি যেন অনাবাদি না থাকে’- এই ঘোষণার আলোকে ওয়ার্ড পর্যায়েও কাজ করবেন বলেছিলেন। এখন পর্যন্ত কোথায় কোথায় আপনারা এসব কাজ করেছেন?
Advertisement
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: আমি ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সব শিক্ষার্থীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসরণ করে আমরা দেশের সব সাংগঠনিক ইউনিটে নির্দেশনাটি পৌঁছে দিয়েছি। আমাদের বিভিন্ন জেলা ও অধস্তন ইউনিট এ লক্ষ্যে কাজও শুরু করেছে। পিরোজপুর, বাগেরহাট, ময়মনসিংহসহ বেশ কয়েকটি জেলা এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে নেতাকর্মীরা এ কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা বিভিন্ন অনাবাদি জমিতে চাষাবাদ করে সেই শাক-সবজি সাধারণ মানুষের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণও করেছে।
আরও পড়ুন>>‘নেতাদের পিছনে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘোরা বন্ধ করে দিয়েছি’
জাগো নিউজ: গবাদিপশু পালনের যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেটার বাস্তবায়ন কীভাবে করবেন?
Advertisement
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মানুষকে আমরা উদ্বুদ্ধ করছি। আমাদের দেশে বিভিন্ন সংস্কার রয়েছে। একজন শিক্ষার্থী কেন মাঠে-ঘাটে কাজ করবে, পশুপালন করবে? এই বদ্ধ ধারণা থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে এনে তারা যেন নিজেদের শিক্ষা অর্জনের পাশাপাশি এ ধরনের সৃজনশীল, কর্মমুখী, দেশের জন্য কল্যাণকর কাজে নিবেদিত হতে পারে সেই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে চলেছি।
জাগো নিউজ: প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আপনাদের যে মতবিনিময় করার কথা বলেছিলেন সেটি বাস্তবায়ন হয়েছে কি না?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: আমরা ঘরোয়াভাবে বিভিন্ন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে পারস্পরিক বিভিন্ন বিষয়, চিন্তা ও মতাদর্শ বিনিময় করেছি। অভ্যন্তরীণভাবে আমাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
জাগো নিউজ: ক্যাম্পাসগুলোতে রাজনৈতিক সহাবস্থান নিশ্চিত করতে আপনাদের অবস্থান ও ভূমিকা কী থাকবে?
Advertisement
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: আমি স্পষ্টভাবে একটি বিষয় জাগো নিউজের মাধ্যমে সারাদেশের মানুষকে বলতে চাই- আজ আমরা দেখতে পাই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যারা রাজনৈতিক দলের নাম করে মূলত বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য, পশ্চাৎপদতার দিকে ঠেলে দেওয়ার জন্য আমাদের মুভ ফরোয়ার্ড নীতির পরিবর্তে ‘টেক ব্যাক বাংলাদেশ’ নাম বলে বাংলাদেশকে পেছনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাচ্ছে। তারা বিভিন্ন দূতাবাস ঘুরে ভিক্ষাবৃত্তি করে বাংলাদেশের উন্নয়নকে স্যাংশন্স দিতে চাচ্ছে। তাদের আমি বলবো, বাংলাদেশের কোটি কোটি শিক্ষার্থী শেখ হাসিনাকে তাদের হৃদয়ে ধারণ করে ওই সব অপশক্তি তাদের হৃদয় থেকে চিরতরে স্যাংশন্স দিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে দেশবিরোধী কোনো শক্তির আর কখনোই ঠাঁই পাওয়ার সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন>> রাজনীতি ছাত্রলীগকর্মীদের কাছে লাভ-লোকসানের বিষয় নয়
জাগো নিউজ: ইমেজ ফেরানোর যে চ্যালেঞ্জ ছিল সেটিতে আপনারা কতটুকু সফল?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অত্যন্ত প্রগতিশীল ও ঐতিহ্যবাহী ছাত্র সংগঠন। এই সংগঠনের ইমেজ সব সময় আকাশচুম্বি ছিল। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। সারা বিশ্বে এর সুনাম রয়েছে। এ ধারা আমাদের বর্তমান কমিটি বজায় রেখে চলার চেষ্টা করছে। সামনেও আমাদের সুনামের ধারা অব্যাহত থাকবে।
জাগো নিউজ: শুধু কেন্দ্রের নেতাদের পরিচ্ছন্ন ইমেজ দিয়ে কি ছাত্রলীগের পুরো ইমেজ পরিবর্তন করা যাবে? কয়েকদিন ধরে ছাত্রলীগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি বিষয় নিশ্চয় আপনার চোখে পড়বে?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: অবশ্যই, আপনি একটি সুন্দর বিষয় উপস্থাপন করেছেন। দেখুন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় একান্নবর্তী পরিবার। এত বড় পরিবারে এত সব সদস্য, সেখানে কোথাও কোথাও কিছু না কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে। এটা নিয়ে সামগ্রিকভাবে আমাদের বিচলিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। পাশাপাশি তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সহিষ্ণুতা, সংগঠনের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা, সাংগঠনি গতিশীলতা সেটি সচল রাখার জন্য তাদের যে ওয়ার্কশপ দরকার সে বিষয়ে আমরা কাজ করে চলেছি। এরপরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মতো একটি ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের সুনাম নষ্ট করার জন্য কোথাও কোনো অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে কি না সেটাও কিন্তু আমরা অত্যন্ত সুনিপুণভাবে খতিয়ে দেখছি।
জাগো নিউজ: বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কয়েকটি সহ-শিক্ষামূলক কার্যক্রম হাতে নিয়েছিল। সেগুলো কোন পর্যায়ে আছে?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: এরই মধ্যে মাঠপর্যায়ে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। যেমন আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে শেখ হাসিনা যখন এদেশের নারীদের উন্নয়নের স্বপ্নের ডানায় উড়িয়ে সম্মুখ পানে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন, ঠিক সেই সময় কিন্তু বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নারীদের এগিয়ে আসার জন্য ‘হার ক্রিয়েশন’ নামে একটি কনটেন্ট চালু করেছে। সেটির কার্যক্রম চলছে। মেয়েরা এর মাধ্যমে আরও বেশি ইনোভেটিভ, প্রগ্রেসিভ কার্যক্রমে নিজেদের সম্পৃক্ত করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আরও পড়ুন>> ছাত্রলীগের নতুন চ্যালেঞ্জ স্মার্ট বাংলাদেশ
জাগো নিউজ: আপনাদের কেন্দ্রীয় কমিটি কখন করবেন? সর্বোচ্চ সময়রেখা কতদিন?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: এ বিষয়ে আমরা কাজ প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন এবং জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ছিল। সেখানে আমরা স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ অভিভাবক, তার প্রত্যক্ষ নির্দেশনা নিয়ে দ্রুত আমরা পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করবো। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ তার সাংগঠনিক গতিশীলতা সর্বোচ্চ বেগে নিয়ে এগিয়ে চলবে, এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো সময়রেখা বলে নিজেদের আবদ্ধ করাটা সঠিক হবে না।
জাগো নিউজ: সাংগঠনিক কমিটি কবে শুরু করবেন?
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: সাংগঠনিক কমিটির যে কার্যক্রম তা কিন্তু এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় এবং বিভিন্ন ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়ায় তাদের কার্যক্রম বিলুপ্ত ঘোষণা করেছি। সামনের দিনে আমাদের সাংগঠনিক গতিশীলতা আরও ত্বরান্বিত হবে।
জাগো নিউজ: আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান: আপনাদেরও অনেক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
এএসএ/জিকেএস