জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় খালের ওপর চার বছর আগে একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। দীর্ঘদিনেও হয়নি সংযোগ সড়ক। অকেজো দাঁড়িয়ে আছে ব্রিজটি। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তবে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বলছেন রাস্তা নির্মাণ করা হলেও তা বন্যায় ভেঙ্গে গেছে।
Advertisement
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলার নাংলা ইউনিয়নের বাগুরপাড়া এলাকার কনক রাইচ মিলের পেছনের খালের ওপর ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু-কালভার্টের কর্মসূচির আওতায় ৩৮ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩১ লাখ ৬১ হাজার ১৪৭ টাকা। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের বন্যায় সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়কের মাটি সরে গিয়ে মানুষের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, ওই ইউনিয়নের বয়রাডাঙ্গা, উত্তর পাড়া ও বাগুরপাড়াসহ আশেপাশের কয়েকটি এলাকার প্রায় ৬-৮ হাজার মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের পরে এক পাশের সংযোগ সড়কে কোনদিন এক কোদাল মাটিও কাটা হয়নি। এতে ধানক্ষেতের আইল দিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাদের। এভাবে যাতায়াত করতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকারও হয়েছেন অনেকে। শুষ্ক মৌসুমে এভাবে হেঁটে যাতায়াত করা গেলেও বর্ষাকালে এ সুযোগও থাকে না। ফলে অনেক দূর দিয়ে যাতায়াত করতে হয় স্থানীয়দের। এতে মালামাল পরিবহনে গুনতে হয় বাড়তি টাকা।’
স্থানীয় বাসিন্দা রশিদ, আব্দুল গফুর, করিম মন্ডলসহ অনেকের অভিযোগ, সরকারের লাখ লাখ টাকা এভাবেই নষ্ট করা হচ্ছে। এতে কারো কোনো মাথাব্যথা নেই। সেতুটি প্রায় চার বছর বছর আগে নির্মাণ করা হয় অথচ সংযোগ সড়কের অভাবে সুফল পাচ্ছেন না তারা। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদের বার বার জানিয়েছেন তারা। কিন্তু কোনো কাজই হয়নি। তাই আর কাউকেই বলতে চান না।
Advertisement
চার বছর আগে ব্রিজ নির্মাণ হলেও একদিনও চলতে পারেননি কৃষক আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগেই ভালো ছিলাম। শুধু নামে আছে কাজে না। এ ধরনের ব্রিজ আমাদের দরকার নাই।
বাগুরপাড়া এলাকার শিক্ষার্থী আলী হোসেন, জিহাদ মিয়াসহ কয়েকজনে জানায়, সংযোগ সড়ক না থাকায় ধানক্ষেত দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে বৃষ্টির দিনে বেশ দুর্ভোগে পড়েন তারা। অনেক সময় ক্ষেতের আইল দিয়ে চলতে গিয়ে পানিতে পড়ে পোশাক নষ্ট হয়। দ্রুত সময়ের সংযোগ সড়কের দাবি জানান তারা।
নাংলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কিসমত পাশা জাগো নিউজকে বলেন, ব্রিজের সংযোগ সড়ক না থাকায় দীর্ঘদিন ধরেই অকেজো পড়ে আছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা উদ্যোগ নিলেই কাজ হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক জাগো নিউজকে বলেন, রাস্তায় মাটি কাটা হয়েছিল কিন্তু কয়েক বছরের বন্যায় তা ভেঙে গেছে। তবে কীভাবে ব্রিজটি সচল করা যায় এ বিষয়ে দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Advertisement
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। সরেজমিনে দেখে কীভাবে ব্রিজটি সচল করা যায় এর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এসজে/জেআইএম