রাস্তাঘাট বা ফুটপাতে মূত্রত্যাগ, প্রকাশ্যে ধূমপান এবং যত্রতত্র থুতু কিংবা পানের পিক ফেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের বিষয়ে শুনানির জন্য আজ হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চে কার্যতালিকায় রয়েছে।
Advertisement
সোমবার (২৭ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ শুনানি হতে পারে।
রিটকারী আইনজীবী ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রাস্তাঘাট বা ফুটপাতে মূত্র ত্যাগ, প্রকাশ্যে ধূমপান এবং যত্রতত্র থুতু কিংবা পানের পিক ফেলা বন্ধে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করা হয়।
Advertisement
গত ৯ মার্চ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থার (মওসুস) পক্ষ থেকে এই রিট আবেদনটি করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করা হয়।
রিটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সড়ক ও জনপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম, সিলেট রাজশাহীসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ও বিআরটিএ চেয়ারম্যানসহ ২৩ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।
সংগঠনের চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া জনস্বার্থে এ রিট করেন।
দেশে বিভিন্ন প্রকার আইন থাকলেও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আইন নেই বিবেচনায় নতুন আইন প্রণয়নের নির্দেশনা সংক্রান্ত রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে রিটে।
Advertisement
ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে সরকারের দপ্তরসহ দায়িত্বরত সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়। নোটিশ পাঠানের পরও কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এ রিট আবেদন করা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশ মারাত্মক বায়ুদূষণে ভুগছে। আবার এসব দূষণের কারণে যক্ষ্মাসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। রাস্তায় চলতে-ফিরতে দেখা যায় মানুষ রাস্তার পাশেই প্রস্রাব করছে, দেওয়ালের আশপাশে থুতু ফেলছে, আবার কেউ কেউ একদম প্রকাশ্যেই ধূমপান করছেন। এতে সাধারণ মানুষ চলার পথে চরম বিপত্তিতে পড়েন। প্রস্রাবের প্রকট দুর্গন্ধে নাকে রুমাল চেপে হাঁটতে হয় পথচারীদের। কোথাও কোথাও আবার ফুটপাতের ওপরই মলত্যাগ করতে দেখা যায়।
তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন হচ্ছে, যারা ফুটপাতের ওপর বা রাস্তার পাশে মলমূত্র ত্যাগ করছেন তারা কি ইচ্ছাকৃতভাবে করছেন নাকি বাধ্য হয়ে? সব মিলিয়ে এসবের সমাধান প্রয়োজন। তাই এ রিট আবেদন দায়ের করা হয়েছে।
গোলাম রহমান ভূঁইয়া জানান, শুধু বাংলাদেশে নয়, অনেক দেশেই যত্রতত্র থুতু ফেললে শাস্তির বিধান রয়েছে। যেমন- সৌদি আরবে রাস্তায় থুতু ফেললে ১০০ থেকে ১৫০ রিয়াল জরিমানা করা হয়। গঙ্গায় বর্জ্য বা থুতু ফেললে তিন বছর কারাদণ্ড বা ১০ হাজার রুপি জরিমানার বিধান রেখে ভারতে ২০১১ সালে আইন করা হয়।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালে মুম্বাইয়ের রাস্তায় থুতু বা পানের পিক ফেলার দায়ে পাঁচ হাজার রুপি জরিমানা ও এক থেকে পাঁচদিন পর্যন্ত সরকারি দপ্তর ও রাস্তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কারের বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের আইন এত কঠোর নয়, তবে আইন প্রয়োগে উদাসীনতা থাকায় এ বিষয়ে জনসচেতনতা তেমন একটা বাড়ছে না। সেজন্য এ রিটটি করা হয়েছে।
এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম