আজ থেকে শুরু মুসলমানদের সিয়াম সাধনার (রোজা) মাস রমজান। প্রতিবারের মতো এবারও রমজানে অতিপ্রয়োজনীয় বেশকিছু খাদ্যপণ্যের দামে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এর মধ্যে রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা থাকায় দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।
Advertisement
রমজানে প্রয়োজনীয় পণ্যের মধ্যে অন্যতম হলো লেবু, শসা, ধনেপাতা, বেগুন, ছোলা। শুক্রবার (২৪ মার্চ) রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায় এসব পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এর মধ্যে বড় এক পিস লেবু ২৫ টাকা হিসেবে হালি ১০০ টাকা, আর ডজন ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট লেবুর হালি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অধিকাংশ বাজারে ধনেপাতার আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা।
অন্যদিকে, কয়েক মাস ধরে গরু ও খাসির মাংস ছোঁয়াই যাচ্ছে না। এমতাবস্থায় মুরগির দাম বাড়তে বাড়তে রেকর্ড গড়লে রমজানের শুরুর দিন কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে ব্রয়লারের দাম। তবে, মাংসের প্রভাব দেখা গেছে সবজি ও মাছের বাজারে। রমজানের শুরুতেই মাছের দাম নাগালের বাইরে। সবজির বাজারেও আগুন। সবজি ও মাছের অসহনীয় মূল্যে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্ন আয়ের মানুষদের।
রাজধানীর তালতলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে সবজি ও মাছের দাম। বিশেষ করে বেগুন, লেবু, শসা, টমেটো, ধনেপাতা, কাঁচামরিচসহ ইফতারিতে প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে অত্যধিক।
Advertisement
তালতলা বাজারে বেসরকারি চাকরিজীবী আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার ৫০ টাকা দাম শসা কিনলাম না। আজ ৮০ টাকা। ৬০ টাকার বেগুন ১০০ টাকা। এক পিস লেবু ২৫ টাকা। আগে লেবু ডজন হিসাবে কিনতাম, এরপর কিছুদিন ধরে হালি হিসাবে কিনছি। দাম বাড়ায় আজ পিস হিসাবে কিনতে হচ্ছে।বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৫০ থেকে ৬০ টাকা, লম্বা বেগুনের দাম ১০০ টাকা, গোল বেগুন ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৫০ টাকা কেজি, ধনেপাতা ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ থেকে ৮০ টাকা, উস্তা ৮০ থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
কাঁচামরিচ বৃহস্পতিবারও ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আর আজ খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা কেজি দরে। পাইকারি বাজারে কাঁচামরিচ ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি বলে জানিয়েছেন একজন পাইকারি ব্যবসায়ী।
রমজানের প্রথম দিনে বেশ বেড়েছে মাছের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার পর থেকেই মাছের দামে পরিবর্তন এসেছে। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিন আড়তে মাছের দাম বাড়ছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শুক্রবারে চাষের রুই, কাতলা, মৃগেল ও কালিবাউস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকায়। তেলাপিয়া ও পাঙাশ বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। এসব মাছের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৫০ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে দেশি পদের (উন্মুক্ত জলাশয়) মাছের দাম। এখন মলা ৫০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কই ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, ছোট আকারের টেংরা ৫০০, আর বড় আকারের ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আকারভেদে চিংড়ি ৬০০ থেকে ৮০০ এবং গলদা ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
Advertisement
মাছ বিক্রেতা খালেক বলেন, দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষ মাংস খেতে পারছেন না। যে কারণে মাছের ওপর প্রভাব বাড়ছে, এ জন্য মাছের দাম বেড়েছে। শেষ এক সপ্তাহে সবধরনের মাছের দাম ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
অন্যদিকে, ব্রয়লার মুরগির দাম একদিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি ২০ টাকার পর্যন্ত কমেছে। পোলট্রি খাতের শীর্ষস্থানীয় চার প্রতিষ্ঠান খামার পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০-১৯৫ টাকা কেজি নির্ধারণের পরেই বাজারে এমন নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেলো। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০ টাকা দরে। যা গতকাল ২৭০-২৮০ টাকা ছিল। তবে অপরিবর্তিত রয়েছে গরুর মাংসের দাম। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা দরে। আর খাসির মাংসের দাম ১১০০-১২০০ টাকা কেজি।
এনএইচ/এমএএইচ/এএসএম