দেশজুড়ে

মডেল মসজিদে বিস্ফোরণ: ইফা কর্মী আটক

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মডেল মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় ইসলামী ফাউন্ডেশনের (ইফা) স্থানীয় ফিল্ড সুপারভাইজার আবদুল হালিমকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ। তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক তদন্তে আবদুল হালিমের ব্যাগ থেকে বিস্ফোরণের সূত্রপাত হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। পরে ঘটনার সঙ্গে তার বক্তব্যের গরমিল থাকায় তাকে সন্দেহজনকভাবে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। তদন্ত শেষে বাকিটা প্রকাশ পাবে।

গ্রেফতার আবদুল হালিম খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থানার বোয়াখালী এলাকার উত্তর রশিদ নগর গ্রামের আবদুল ওহাবের ছেলে। তিনি ইসলামী ফাউন্ডেশনের বেগমগঞ্জ উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজার হিসেবে কর্মরত আছেন।

Advertisement

আবদুল হালিমের দাবি, তার ব্যাগে বডি স্প্রের বোতল ছাড়া অন্য কিছু ছিল না।

তবে তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তার এ বক্তব্য নাকচ করে শুধু বডি স্প্রের বিস্ফোরণে এমন বিকট শব্দ বা ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের ধারণা ব্যাগে বডি স্প্রের সঙ্গে ব্যাটারিচালিত কোনো বিস্ফোরক যন্ত্রও রক্ষিত ছিল।

এদিকে এ ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তামান্না মাহমুদকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাশেম, বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. ইয়াসির আরাফাত, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. তৌফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া এবং বেগমগঞ্জ সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম। আগামি তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে এ কমিটিকে বলা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান কমিটি গঠনের বিষয়টি নিশ্চিত করে জাগো নিউজকে বলেন, অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও ঘটনাটিকে গুরুত্ব সহকারে দেখে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

এর আগে মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাত ১১টার দিকে ওই মডেল মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে মসজিদের দোতলার মেঝে, জানালার কাঁচ, দরজা ও সিলিংয়ের বেশ ক্ষতি হয়। বিস্ফোরণে কক্ষটিতে আগুন ধরে যায় তবে সেখানে কেউ না থাকায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

পরে ঘটনাটি তদন্তে র‌্যাবের সদর দপ্তর থেকে বোম্ব ডিস্পোজাল ইউনিটকে ডাকা হয়। বুধবার (২২ মার্চ) রাতে ১০ সদস্যের দল আলামত সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে বিস্ফোরকের কোনো নমুনা খুঁজে পায়নি বলে মন্তব্য করে।

ওই দলের সহকারী পরিচালক মেজর মো. মশিউর রহমান বলেন, আমরা অত্যাধুনিক যন্ত্র দিয়ে সবকিছু পর্যবেক্ষণসহ নমুনা সংগ্রহ করেছি। পরীক্ষা করে অচিরেই ফলাফলসহ প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে ইসলামী ফাউন্ডেশনের ফিল্ড সুপারভাইজার আবদুল হালিমের ব্যাগ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত অব্যাহত আছে।

ইকবাল হোসেন মজনু/এফএ/জেআইএম