আজ (২৩ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৫টায় সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চিত্রনায়ক শাকিব খান। রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে শাকিব খান বলেন, ‘ধন্যবাদ আপনাদের। শুরু থেকেই আপনারা আমার সঙ্গে ছিলেন। আমি প্রথম যেদিন অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছি, সেদিন থেকেই আপনারা আমার সঙ্গে আছেন। এই সত্য উদঘাটন করতে আপনারা খুব তৎপর হয়েছিলেন। বেশিদিন লাগেনি এই সত্য বের করতে। দু-একদিনের মধ্যেই সব সত্য রেরিয়ে এসেছে।
Advertisement
আমার সঙ্গে যিনি প্রতারণা করেছেন, চলচ্চিত্র অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে করেছেন, সেই প্রতারক দেশের বাইরে পালিয়ে যাবেন, এটা আমি মনে করেছিলাম। তাই আমি দ্রুত থানায় গিয়েছিলাম। থানা থেকে আমাকে পরামর্শ দেওয়া হয় আদালতে যেতে। প্রতারক এবং প্রতারক চক্রকে আইনের আওতায় আনার জন্য আমি ডিবির কাছেও গিয়েছিলাম। সেখানে যাওয়ার পরের দিন ডিবি থেকে জানিয়েছে তিনি ঢাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি তিনি দেশ থেকে পালিয়ে অস্ট্রেলিয়া যেতে সক্ষম হয়েছেন। ঘটনাটি যদি অস্ট্রেলিয়ায় হতো আমি যদি সেখানের থানায় তথ্যপ্রমাণ নিয়ে হাজির হতাম তাহলে তিনি হয়তো ইমিগ্রেশন থেকে দেশের বাইরে পালিয়ে যেত পারতেন না।
শাকিব খান আরও বলেন, যাই হোক আমি সেই ব্যাখায় আর না যাই। আমি পুলিশের বিপক্ষে কথা বলতে চাই না। নেতিবাচক কোনো মন্তব্য করেত চাই না। কারণ পুলিশের সঙ্গে আমার একটা ইমোশন জড়িত। আমার অনেক আত্মীয় পুলিশে চাকরি করেন। তারা আমাকে একটা পরামর্শ দিয়েছেন আদালতে যেতে।
Advertisement
সব শেষ আদালত আমার সব কথা শুনেছেন। আমার সব কিছু যাচাই-বাছাই করে মামলাটি মহামান্য আদালত গ্রহণ করেছেন। আইনের প্রতি আমার বিশ্বাস আছে, শ্রদ্ধা আছে। এবং আমি বিশ্বাস করি এই চক্র যত বড়ই হোক না কেন তারা আইনের আওতায় আসবে। আমি বিশ্বাস করতে চাই না রহমত উল্লাহ শুধু একা একজন মানুষ, তার সঙ্গে আরও অনেক মানুষ জড়িত। তিনি এই সিনেমার প্রযোজক না হয়েও এমনটা করেছেন। তার সঙ্গে আমার পরিচালকের সঙ্গে না থাকার পরেও প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনে গিয়ে অভিযোগ করেছেন। এখন যারা প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশনের কেউ বিষয়টি একবার যাচাই-বাছাই করে দেখলো না বা দেখার প্রয়োজনও মনে করলো না যে তিনিই আসলে এই ছবির প্রযোজক কি না। তাহলে হয়তো এত বড় ঘটনার সৃষ্টি হতো না।
তারা যদি একবার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেন, যদি নথিপত্র খুলে দেখতেন, যেই সিনেমা নিয়ে অভিযোগ করছেন তিনি আসলে সেই সিনেমার প্রযোজক কি না, তাহলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যেতো। তাকে বলা যেত আপনি তো প্রযোজক নন, আপনি কেন অভিযোগ করছেন। যিনি আসল প্রযোজক তাকে আসতে বলেন। যদি কোনো অভিযোগ থাকে তাহলে তো তিনিই করবেন।
প্রযোজক সমিতির এমন আচরণে অনেকেই এখন প্রশ্ন করেছেন। তাহলে এফডিসির প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশনের যে কর্মকর্তারা রয়েছেন তারা এর সঙ্গে জড়িত কি না। তবে আমি এটা বিশ্বাস করতে চাই না। হয়তো তাদের কোনো ভুলের কারণে এটা হয়েছে। হয়তো প্রযোজক অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে একটা ধোঁকাবাজি হয়ে গেছে।
দিন শেষে যাই হোক আমি আশা করি আদালতের কাছ থেকে সুষ্ঠু বিচার পাবো। আমি একজন শিল্পী মানুষ। আমি আমার জীবনে প্রথমবার এরকম শক্তিশালী অভিযোগ নিয়ে আদালতে গিয়েছি। আপনারা আমাকে কখনই দেখেননি, আমি এরকম ভিড় ঠেলে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি।
Advertisement
সকালবেলা আদালতে গিয়ে বসে থাকতে হবে, এত সব প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে এটা আমি কল্পনাও করিনি। এত সব করার ধৈর্য আসলে শিল্পীদের নেই। আমরা শিল্পীরা সব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে চাই। আমি সমস্যার মধ্যে থাকতে চাই না। এ সুযোগটাই চক্রটি নিয়েছে। আপনারা দেখবেন প্রায়ই এ ধরনের একটি চক্র শিল্পী ও কলাকুশলীদের এ ধরনের সমস্যায় ফেলে।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে শাকিব খান সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। তার সামনের কাজের বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
এমআই/এমএমএফ/জিকেএস/জেআইএম