আইন-আদালত

যৌতুকের বলি বিচারপতির ভাতিজি, রিমান্ডে স্বামী

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে যৌতুক না পেয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভাতিজিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় ঘাতক স্বামী মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শান্ত ইসলাম মল্লিকের আদালত তার তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

Advertisement

এর আগে গত ১৮ মার্চ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) চয়ন সাহা। আজ এ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন আদালত।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ফাতেমা নাসরিন ও মির্জা সাখাওয়াত হোসেনের দীর্ঘ ১৯ বছরের দাম্পত্য জীবন। তাদের ১৭ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই সাখাওয়াত বিভিন্ন সময় ফাতেমার কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলেন। ফাতেমা যেন ঠাকুরগাঁওয়ে তার পৈতৃক বাড়ি বিক্রি করে এনে তাকে যেন এক কোটি টাকা দেন- এজন্য চাপ দিতেন। ওই পৈতৃক বাড়িতে আরও অনেকের অংশ রয়েছে। তাই একা বিক্রি করা যাবে না বলে ফাতেমা তার স্বামী সাখাওয়াতকে জানান। এতে সাখাওয়াত ক্ষিপ্ত হয়ে ফাতেমাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করেন।

আরও পড়ুন: যৌতুকের বলি বিচারপতির ভাতিজি, স্বামী গ্রেফতার

Advertisement

সন্তান ও সংসারের কথা চিন্তা করে এসব অত্যাচার সহ্য করে আসছিলেন ফাতেমা। দিন দিন সাখাওয়াতের নির্যাতন বেড়ে যাওয়ায় ফাতেমা আর সহ্য না করতে পেরে জানুয়ারি মাসে পঞ্চগড় সদর থানায় নারী নির্যাতন আইনে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সাখাওয়াত গ্রেফতার হয়েছিলেন। পরে তিনি জামিনে বের হয়ে আবারও যৌতুকের টাকার জন্য ফাতেমাকে চাপ দিতে থাকেন। গত ৮ মার্চ যৌতুকের টাকার দাবিতে সাখাওয়াত তার মোহাম্মদপুরের বাসায় ফাতেমাকে চাপ দিতে থাকেন। এতে প্রতিবাদ করলে সাখাওয়াত ধারালো বটি ও মশলা বাটার কাঠের বাটনা দিয়ে ফাতেমার মাথা থেতলে দেন। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম করেন।

সর্বশেষ যখন সাখাওয়াত তার স্ত্রীকে ধারালো দিয়ে জবাই করতে উদ্যত হন, তখন তাদের সন্তান এসে বাধা দেয়। পরে ফাতেমাকে দ্রুত উদ্ধার করে আগারগাঁও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি গত ১৭ মার্চ রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় ১৮ মার্চ ভিকটিমের বড় বোন আরজিনা বেগম (৫২) বাদী হয়ে মোহাম্মদপুর থানায় একটি মামলা করেন।

জেএ/এএএইচ/জেআইএম

Advertisement