রমজানের রাতের নামাজ তারাবিহ। দেশের অনেক মসজিদেই খতম তারাবিহ অনুষ্ঠিত হবে। দীর্ঘদিন তারাবিহ নামাজ না পড়ায় অনেকে এর নিয়ম ভুলে যান। তাই তারাবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম জেনে নেওয়া জরুরি। কেননা আজ এশার নামাজের পর থেকেই শুরু হবে তারাবিহ। কীভাবে পড়তে হবে এ তারাবিহ নামাজ?
Advertisement
তারাবিহ নামাজ অনেক ফজিলতপূর্ণ। এ নামাজ পড়ার প্রতি তাগিদ দিয়েছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেছেন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজানে রাতে বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াবের আশায় দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করে, তার আগের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)
তারাবিহ
Advertisement
তারাবিহ শব্দের অর্থ হচ্ছে ‘বিশ্রাম করা’। প্রতি চার রাকাত নামাজ শেষ করে যাতে একটু বিশ্রাম গ্রহণ করা যায় তাই একে তারাবিহ বলা হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের তারাবিহ নামাজ ছিল অনেক দীর্ঘ। এমনকি তাঁর কিয়াম তথা দাঁড়িয়ে থাকা, রুকু, সেজদা সবাই ছিল খুব লম্বা ও ধীরস্থির। এ সম্পর্কে হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত সাঈর ইবনে ইয়াযিদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ইমাম সাহেব তথা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তারাবিহতে শত শত আয়াত পড়তেন। ফলে সুদীর্ঘ সময় দাঁড়ানোর কারণে আমরা লাঠির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতাম।’ (মুয়াত্তা মুহাম্মদ)
তারাবিহ নামাজ পড়ার নিয়ম
তারাবিহ নামাজ ২ রাকাত করে পড়তে হয়। দুই রাকাত করে প্রতি ৪ রাকাত পর কিছুক্ষণ বিশ্রাম গ্রহণ করা। এ সময় দোয়া করা। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। পরবর্তী ৪ রাকাত সুন্দরভাবে আদায়ের শক্তি গ্রহণ করা। অনেকে প্রতি ৪ রাকাত পর পর মোনাজাত করেন। আবার অনেকে একেবারে নামাজ শেষ করে মোনাজাত দেয়। উভয়টিই করা যেতে পারে। এতে কোনো সমস্যা নেই।
Advertisement
একটা বিষয় পরিলক্ষিত হয়
রমজান আসলে কিছু কিছু মুসল্লিকে দেখা যায়, যে মসজিদে তারাবিহ নামাজ তাড়াতাড়ি আদায় করা হয়, সে মসজিদ খুঁজে খুঁজে বের করে। দূর হলেও সে মসজিদে গিয়ে তারাবিহ নামাজ আদায় করে। অথচ তারাবিহ নামাজ ধীরস্থিরভাবে আদায় করাই হলো নিয়ম। প্রতিযোগিতা করে তারাবিহ নামাজ আদায় করা সুন্নতের পরিপন্থী।
তাই আসুন, তাড়াহুড়ো বা দ্রুত নয়; বরং ধীরস্থিরভাবেই তারাবিহ নামাজ আদায় করি।
তারাবিহ নামাজে ইমাম হোক আর মুসল্লি হোক প্রতিযোগিতা করে তারাবিহ পড়ার প্রবনতা পরিহার করা উচিত। কারণ যত তাড়াতাড়িই নামাজ পড়ার চেষ্টাই করা হোক না কেন, তাতে সময়ের ব্যবধানে বেশি হেরফের হয় না। সুতরাং সামান্য সময়ের জন্য তারাবিহ নামাজের সৌন্দর্য বিনষ্ট করতে তাড়াতাড়ি তারাবিহ পড়ার প্রবনতা থেকে বেরিয়ে এসে বেশি সওয়াব অর্জনের প্রত্যাশায় ধীরস্থিরভাবে তারাবিহ পড়াই উত্তম।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে খতম তারাবিহ হোক আর সুরা তারাবিহ হোক; সব তারাবিহ নামাজ ধীরস্থিরভাবে পড়ার তাওফিক দান করুন। তারাবিহর ফজিলত পেতে নিয়মিত রাত জাগরণ করে তারাবিহ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/জেআইএম