কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষকরা এখনো একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার পক্ষে অনড় রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. তপন কুমার জোদ্দার।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো একক পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় অবস্থানে আছি। প্রত্যকটা বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব একটা আইনে চলে। ইউজিসি যেমন একটা নিয়মের মধ্যে চলে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ও সেরকম। একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’
গুচ্ছ নিয়ে বিতর্ক ও ভোগান্তির নানা চিত্র উঠে আসছে প্রতি বছর। কিন্তু তারপরও এ বিষয়ে অনড় অবস্থানে সরকার। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আবারও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়কে গুচ্ছে থাকার আহ্বান জানিয়েছে। সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে ইউজিসি আয়োজিত গুচ্ছভুক্ত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সভায় এ আহ্বান জানানো হয়। শিক্ষক সমিতি ও একাডেমিক কাউন্সিলের বিরোধিতা সত্ত্বেও ২০২২-২৩ শিক্ষবর্ষে ইবিকে গুচ্ছেই থাকতে হবে বলে সভায় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: জবি-ইবিসহ ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা
Advertisement
ইউজিসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. কাজী শহীদুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. দিল আফরোজ বেগম, অধ্যাপক মো. আলমগীর, অধ্যাপক ড. আবু তাহেরসহ গুচ্ছভুক্ত ১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, ইউসিজি সচিব ফেরদৌস জামান ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাজেনমেন্ট ডিভিশনের পরিচালক জামিনুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রোববার (১৯ মার্চ) বিশ্ববিদ্যলয়ের ১২৫তম একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সর্বসম্মতভাবে গুচ্ছ থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। সভায় শিক্ষক সমিতির নেতারা গুচ্ছের ভোগান্তি, সমস্যা ও বিভিন্ন সুপারিশ উপাচার্যের কাছে তুলে ধরেন। অন্যদিকে সোমবার উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম ইবি শিক্ষকদের সিদ্ধান্ত ও শিক্ষক সমিতি বিষয়টি ইউজিসির কাছে তুলে ধরেন। তবে এর আগে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিল সেসব বিশ্ববিদ্যালয়কে কোনোক্রমেই বাইরে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়েছে ইউজিসি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, ‘আমি একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিষয়টি ইউজিসির মিটিংয়ে তুলে ধরেছি। তারা বলেছেন, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। যারা গুচ্ছে ছিল কোনোক্রমেই তাদের গুচ্ছের বাইরে যাওয়া যাবে না। এটি আমাদের শিক্ষকদের জানাবো। যেহেতু তারাই পরীক্ষা নেবেন তাই তাদের মতামতের বাইরে আমি কিছু করতে পারি না। কিন্তু আমাদের বাজেটসহ অন্যান্য আর্থিক বিষয় সরকারের নিয়ন্ত্রণে। সুতরাং কী করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করতে হবে।’
ইউজিসি সদস্য ও গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক আলমগীর গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় ৮০ শতাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অংশ নিয়েছে। আগামী বছর থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইউনিক পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে বলে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। ২২ বিশ্ববিদ্যালয় এবারও গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করবে। এখন তারা নিজেরা বসে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।’
Advertisement
রুমি নোমান/এসআর/এমএস