চামেলি কামাল একজন সংবাদ উপস্থাপক। দেশের জনপ্রিয় টেলিভিশন এটিএন বাংলায় খবর পড়ছেন। পাশাপাশি উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের বাবার প্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তা হিসেবে গুরুদায়িত্ব পালন করছেন। এসএসসির পরপরই বিয়ের পিঁড়িতে বসেন চামেলি কামাল। তবে নিজের অদম্য আগ্রহ, পরিশ্রমী মানসিকতা আর স্বামীর সহযোগিতায় নিজেকে নিয়ে গেছেন বহুদূর। বিয়ের পর পরিবার সামাল দেয়ার পাশাপাশি এইচএসসি, গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স তারপর এমবিএ করেন। দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি ভ্রমণ করেছেন আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, চীন, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও দুবাইসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ। জাগো জবসের পক্ষ থেকে তার সঙ্গে কথা বলেছেন গোলাম রাব্বী। জাগো জবস: শুরুতেই পড়াশোনা ও চাকরি নিয়ে কিছু বলুন?চামেলি কামাল: বিয়ের পর এইচএসসি, গ্রাজুয়েশন, মাস্টার্স এবং তারপর এমবিএ করি। এর মধ্যে ফ্যাশন ডিজাইনিং শিখেছি। এখন বাবার অফিস ‘জেকে সেলস ডিসট্রিবিউশনের’ প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছি।জাগো জবস: সংবাদ উপস্থাপক হয়ে ওঠার যোগসূত্র কীভাবে?চামেলি কামাল: আমি মনে করি, সংবাদ পাঠে আসার পুরো কৃতিত্ব আমার স্বামী ইকবাল বাহারের। এরআগে আমার নিউজে আসার অতোটা আগ্রহ ছিলো না। মূলতো ওর (ইকবাল বাহারের) সংবাদ উপস্থাপনা শুরুর পর, আমার এ লাইনে আসার আগ্রহটা তীব্র হয়। জাগো জবস: দুজনে কীভাবে সংবাদ পাঠ শুরু করলেন?চামেলি কামাল: আমি সবসময় ওকে (ইকবাল বাহার) যেকোনো কাজে উৎসাহ দেই। আমি মনে করি, কারো মন থেকে যেটা ভালো লাগে, সেটাই করা উচিত। ইকবালও আমাকে উৎসাহ দেয়। তাই দুজনেই সংবাদ উপস্থাপনায় যুক্ত হলাম। জাগো জবস: সংবাদ উপস্থাপনা ছাড়া অন্য কী কাজ করছেন?চামেলি কামাল: আমি প্রথমত বাবার ব্যবসা দেখাশুনা করি। আর মূল কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিউজ পড়াটাকে খুব উপভোগ করি। জাগো জবস: এ পেশায় এসে আপনার অনুভূতি কী?চামেলি কামাল: সংবাদ উপস্থাপক হওয়ার পরে যে আনন্দ আর অনুভূতি, সেটা আসলে বলে বোঝানোর মতো নয়। খুবই ভালো লাগছে, এখন সবার সহযোগিতা চাই- যাতে আজীবন এমন পেশায় সম্মান নিয়ে থাকতে পারি। জাগো জবস: কার অনুপ্রেরণায় এ পেশাকে ভালোবেসে ফেললেন?চামেলি কামাল: আমি নিউজ প্রেজেন্টার হওয়ার অনুপ্রেরণা ওর (ইকবাল বাহার) কাছ থেকেই পেয়েছি। কেননা ওর নিউজ প্রেজেন্টেশন দেখতে দেখতেই আমার নিউজ প্রেজেন্টেশনে আসা।জাগো জবস: সংবাদ উপস্থাপনা শিখতে চাইলে করণীয় কী? চামেলি কামাল: এটা এমন এক পেশা যা তদবির করে ক্যামেরার সামনে ডেলিভারি দেয়া যায় না। এটা জানার বিষয়। শেখার বিষয়। অনুশীলনের বিষয় এবং অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো- এখানে লাইভ পারফর্ম করার বিষয়। দু-একটি কোর্স করে হয়তো কিছু শেখা যাবে কিন্তু খুব ভালো কিছু করা যাবে বলে আমার মনে হয় না।জাগো জবস: কীভাবে এতো কাজ মেইনটেন করেন?চামেলি কামাল: আমরা দু’জনই খুবই ব্যস্ত, তবে সবকিছুই হচ্ছে ঠিকঠাক মতো। প্রায়ই পরিবারের সবাই বা বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বেড়াতেও চলে যাই। জাগো জবস: এই পেশায় কেউ যুক্ত হতে চাইলে আপনার পরামর্শ কী?চামেলি কামাল: আমি মনে করি, যার অফুরন্ত অবসর, সে সবচাইতে অসুখী। প্রতিটি মেয়ের, সে ছোট হউক বা বড় হউক, যে কোন চাকরি বা ব্যবসা করা উচিত। মেয়েরা কাজে অনেক বেশি আন্তরিক হয়। দেখবেন- প্রয়োজনে বা বিপদের সময় এটাই হয়ে যায় একমাত্র সম্বল। একজন চাকরিজীবী নারী, মা হিসেবে যেমন সফল, তেমনি সংসারও হয় সবচেয়ে সুন্দর। কারণ, তিনি জানেন সময়কে কীভাবে ব্যবহার করতে হয়।জাগো জবস: আপনার জীবনে টার্নিং পয়েন্ট কী?চামেলি কামাল: আমি মনে করি, জীবনের পুরোটাই টার্নিং পয়েন্ট। এই ধরুন ইকবাল বাহার। ওর প্রেরণাতেই কিন্তু আমি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মিডিয়ায় ক্যারিয়ার গড়তে পারছি। এছাড়া উভয় পারিবারের সদস্যরা এতো কো-অপারেটিভ যে, তাদের সহযোগিতায়-ই আজ আমি এতো বড় হতে পেরেছি।জাগো জবস: সফলতা বলতে কী বোঝেন?চামেলি কামাল: শুধু নিজে সফল হওয়া শেষ পর্যন্ত সফলতা নয়, অন্যের জন্য কিছু করতে পারা, কিছু উপকার, কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা থাকা প্রয়োজন। কারণ, আপনার সফলতা আপনি তখন উপভোগ করতে পারবেন; যখন অন্যরা আপনার কাজ ও সফলতার প্রশংসা করবে। তাই প্রয়োজন সফল ভালো মানুষ হওয়া। জাগো জবস: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।চামেলি কামাল: আপনাকেও ধন্যবাদ।এসইউ/পিআর
Advertisement